ঢাকা     মঙ্গলবার   ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ২৮ ১৪৩১

বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে দুদকের অভিযান

বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৪, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫  
বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে দুদকের অভিযান

বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে বৃহস্পতিবার অভিযানে যায় দুদক

নানা অনিয়ম এবং রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসময় সেখানে বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা পাওয়ার কথা জানান দুদক বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে দুদকের একটি দল হাসপাতালে অভিযান চালায়। এসময় দুদকের কর্মকর্তারা প্রথমে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমাদ্দারের সঙ্গে অভিযোগ নিয়ে কথা বলেন। এরপর তারা তত্ত্বাবধায়ককে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন।

পেটের সমস্যায় হাসপাতালে আসা মো. মোজাফফর হোসেন মোজাম বলেন, “চিকিৎসক দেখাতে এসেছি। অনেকগুলো পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের কিছু পরীক্ষা করাতে পারলেও বেশিরভাগই বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করতে হয়েছে। হাসপাতালের টয়লেট ও খাবারসহ নানা সমস্যার পাশাপাশি নার্স ও চিকিৎসকদের ব্যবহারে আমরা চরম বিরক্ত। দুদকের অভিযান দেখে আমরা খুশি।”

আরো পড়ুন:

মিন্টু নামে অপর রোগী বলেন, “হাসপাতালে তেমন কোনো সেবা পাই না। দুর্নীতির সীমা নেই। রোগীদের খাবারো ঠিকমতো দেওয়া হয় না। দুদক অভিযান চালিয়েছে, এখন যদি কিছুটা ভালো হয় নার্স ও চিকিৎসকরা।”

দুদকের বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, “হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে সরকারি সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি ক্লিনিকে রোগীদের পাঠানোর প্রমাণ মিলেছে। এ বিষয়ে কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। নার্স ও চিকিৎসকদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগও সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “রোগীদের খাবারের বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। রান্নাঘর পরিদর্শনে দেখা গেছে- যিনি রান্নার দায়িত্বে আছেন, তিনি সরাসরি রান্না করেন না। খাবারের পরিমাণেও অনিয়ম পাওয়া গেছে। উদাহরণ হিসেবে, রোগীদের জন্য এক পিস মাংসের ওজন হওয়া উচিত ৯৬-৯৭ গ্রাম, অথচ দুই পিস মাংস মিলে হয়েছে ৯২ গ্রাম। এটি থেকে পরিষ্কার, কী ধরনের অনিয়ম চলছে।”

সাইদুর রহমান বলেন, “আমাদের টিম সকাল থেকেই গোপনে কাজ করেছে। চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং খাবারের মানোন্নয়নসহ বেশ কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে আবারো ফলোআপ করা হবে।”

বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, “চিকিৎসক ও নার্স সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে ৩৪টি চিকিৎসক পদ শূন্য রয়েছে। প্রয়োজন ২০০ জন নার্স, কিন্তু রয়েছেন মাত্র ৭০ জন। জনবল সংকট দূর করা গেলে দুদকের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।”

ঢাকাশহিদুল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়