গাইবান্ধায় ডাল খেয়ে ২ শতাধিক মানুষ অসুস্থ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

চল্লিশা অনুষ্ঠানে খেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন
গাইবান্ধার সদর উপজেলায় একটি চল্লিশা অনুষ্ঠানে ডাল খেয়ে দুই শতাধিক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে অনেকে বাড়ি ফিরলেও এখনো শতাধিক ব্যক্তি গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের ফুলবাড়ী রিফাইতপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের মায়ের চল্লিশা অনুষ্ঠানে দাওয়াত খাওয়ার পর এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
স্বজনরা জানান, বেলালের বাড়িতে দাওয়াতে এলাকার এক হাজার মানুষ অংশ নেয়। সেখানে আটার ডাল খেয়ে রবিবার দিবাগত রাত থেকে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনেকে প্রাথমিকভাবে বাড়িতে চিকিৎসা নিলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরদিন সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হতে থাকেন। অসুস্থ হওয়া রোগীরা গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল, ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
গাইবান্ধা হাসপাতাল ও ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক বিভিন্ন বয়সী রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে গাইবান্ধা হাসপাতালে ১২৪ জন ভর্তি হন। এর মধ্যে ৫১ জন রোগীকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে অল্প দূরে ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে ৭১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুজ্জামান।
ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন কয়েকজন জানান, আটার ডাল দিয়ে ভাত খাওয়ার পর রাত থেকে অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। সেইসঙ্গে অনেকের বমি শুরু হয়। স্যালাইন দিয়েও স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না।
ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুজ্জামান বলেন, মজলিসের আটার ডাল খেয়ে তারা অসুস্থ হয়েছেন। তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় দুইজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আসিফ-উর রহমান বলেন, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সদর হাসপাতালে ১৪৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ফুলছড়িতে ৭১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। সবাইকে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় স্যালাইন ও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। অনেকেই চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এ ঘটনায় খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ করে তদন্ত প্রতিবেদন দেবেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাজমুল হুদা রনি বলেন, একদিন আগের ঘটনা হওয়ায় খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। রোগীদের ক্লিনিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ঢাকা/মাসুম/বকুল