ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বৈরী আবহাওয়ায় চা শিল্পে সংকটের শঙ্কা

আব্দুল আজিজ, মৌলভীবাজার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১১, ৫ এপ্রিল ২০২৫   আপডেট: ১৯:১২, ৫ এপ্রিল ২০২৫
বৈরী আবহাওয়ায় চা শিল্পে সংকটের শঙ্কা

তাপদাহ আর অনাবৃষ্টিতে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে চা শিল্প। চলতি মৌসুমে ১০ কোটি ৩০ লাখ কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু, পাতা উত্তোলন মৌসুমের শুরুতেই বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তাই, চা উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জন না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে মরে যাচ্ছে চা গাছ। প্রুনিং (ছাঁটাই) করা ডালে গজাচ্ছে না নতুন কুঁড়ি। দেখা দিচ্ছে নানা রোগ-বালাই। এ নিয়ে হতাশ চা শ্রমিক ও মালিকরা। 

আরো পড়ুন:

মৌলভীবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৪ মিলিমিটার। ২০২৪ সালে একই সময়ে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৪৬ মিলিমিটার। 

মৌলভীবাজার সদর, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা, শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ ও রাজনগরে আছে ৯২টি চা বাগান। সদর ও শ্রীমঙ্গলের কয়েকটি চা বাগান ঘুরে দেখা গেছে, প্রুনিং (ছাঁটাই) করা কম বয়সী গাছগুলো অনাবৃষ্টির কারণে মরে যাচ্ছে।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার প্রেমনগর চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ পাতা নেই চা গাছে। খরায় মরে গেছে প্রুনিং করা গাছ। 

কথা হয় চা শ্রমিক সবিতা, সুমিত্রা, লাভলী, কুনতি ও শিলার সঙ্গে। তারা বলেন, সারা দিনে ৩ থেকে ৪ কেজি পাতা তুলতে পারিনি। গাছে পাতা নেই। পানির অভাবে মরে যাচ্ছে গাছগুলো। পাতা তুলতে না পারায় মজুরিও ঠিকমতো আদায় হয়নি। এক মাস ধরে কষ্টে চলছে সংসার। 

প্রেমনগর চা বাগানের কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা পাতা সংরক্ষণের স্থান খালি পড়ে আছে। 

প্রেমনগর চা বাগানের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) রফিকুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেছেন, প্রচণ্ড খরায় পুড়ছে চা বাগান। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কায় আছি। 

চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেছেন, চা শিল্প বৈরী আবহাওয়া ও অনাবৃষ্টিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এটা রক্ষা করতে হলে কৃত্রিমভাবে বিন্দু বিন্দু পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হচ্ছে। খরায় বেশিরভাগ বাগানে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গাছ মরে যাচ্ছে। কোনো কোনো বাগানে ইরিগেশন ব্যবস্থা চালু থাকায় খরার কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছেন তারা।  

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেছেন, খরায় গাছ মরে যাওয়া থেকে রক্ষার জন্য আমরা বাগান কর্তৃপক্ষকে ছায়াতরু রোপণ, ইয়াং চা গাছে প্রুনিং ও গাছের গোড়ায় কচুরিপানা দিয়ে খরা মোকাবিলার পরামর্শ দিয়েছি। এই পদ্ধতি প্রয়োগ না করলে বিপর্যয় ঠেকানো যাবে না। খরার কারণে লাল মাকড়ের আক্রমণসহ নানা রোগ-বালাই দেখা দিতে পারে।  

মৌলভীবাজার আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, চলতি বছরে মার্চ মাস পর্যন্ত ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। চলতি মাসে তাপদাহ ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা আছে।  

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়