ভারতে পাচার হওয়া ৩৬ কিশোর-কিশোরীকে হস্তান্তর
নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর || রাইজিংবিডি.কম
ভালো কাজের প্রলোভনে দালালদের খপ্পরে পড়ে ভারতে পাচার হওয়া এক নারী এবং ৩৫ জন শিশু, কিশোরী ও কিশোর ছয় মাস থেকে দেড় বছর জেল খেটে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন।
ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকাল ৫টার দিকে তাদের বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তবে এ সকল শিশু, কিশোর-কিশোরীদের অনেকের বাবা ও মা এখনো ভারতের জেলখানায় আটক রয়েছে। এ সময় শার্শা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) শওকাত মেহেদী সেতু উপস্থিত ছিলেন।
পাচারের শিকার তাহমিনা বলেন, ‘‘আমরা যারা আজ দেশে ফিরেছি, আমাদের অনেকের বাবা ও মা এখনো অনেকে ভারতের জেলখানা, শেল্টার হোমে রয়েছে। আমরা দালালদের মাধ্যমে বেনাপোলসহ বিভিন্ন সীমান্ত পথে অভিভাবকদের সঙ্গে ভারতে গিয়ে আটক হই। এরপর আদালতের রায়ে আমরা কারাগারে যাই। সেখানকার এনজিও সংস্থা আমাদের ছাড় করিয়ে বিভিন্ন শেল্টার হোমে রাখে। সেখানে ৬ মাস থেকে ১৮ মাস পর্যন্ত থেকে আজ দেশে ফিরেছি।’’
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপপরিদর্শক সাহাদত হোসাইন জানান, এরা বিভিন্ন সীমান্ত পথে পাচার হয়ে ভারতে যায়। এরপর সেই দেশে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে কারাগারে যায়। তারপর সেখান থেকে সেদেশের বিভিন্ন এনজিও তাদের ছাড় করিয়ে শেল্টার হোমে রাখে। দুই দেশের চিঠি চালাচালির মাধ্যমে তারা ছাড়া পেয়ে আজ বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে বেনাপোল দিয়ে দেশে ফিরে আসে।
ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তাদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বেনাপোল পোর্ট থানা ওসি জানান, তাদের থানার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিভিন্ন এনজিও এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যশোর মহিলা আইনজীবী সমিতির এরিয়া কোঅডিনেটর রেখা রাণী বলেন, ‘‘পাচার শিকার শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের আমরা সেদেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশে ফেরত এনেছি। এর মধ্যে আমরা সাতজন, পাচারের শিকার মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থা ছয় জন, যশোর রাইটস ১০ জন এবং জাস্টিস এন্ড কেয়ার ১৩ জনকে গ্রহণ করেছি। আমরা নিজেদের শেল্টার হোমে রেখে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করব। কেউ যদি আইনি সাহায্য নেয়, তবে তাদের সহায়তা দেয়া হবে।’’
ঢাকা/রিটন/বকুল