ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নজর কাড়ছে সুন্দরী ও রাজাবাবু 

রুমন চক্রবর্তী, কিশোরগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০১, ৩০ মে ২০২৫   আপডেট: ০৯:০৪, ৩০ মে ২০২৫
নজর কাড়ছে সুন্দরী ও রাজাবাবু 

রাজাবাবু 

শখের বসে ২০টি গরু দিয়ে শুরু করা হয় খামার। কয়েক বছরের ব্যবধানে এখন ব্যবসায়ী এরশাদ উদ্দিনের জেসি অ্যাগ্রো ফার্মে আছে ৩ শতাধিক পশু। এগুলোর মধ্যে অর্ধেক এবারের কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। আধুনিক ও অর্গানিক পদ্ধতিতে লালন-পালন করায় এ খামারের পশুর চাহিদা অনেক। বিক্রির জন্য রাখা অর্ধেক পশু এরইমধ্যে বুকিং দিয়ে রেখেছেন ক্রেতারা। জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের গরুগুলোর মধ্যে আলাদা করে নজর কেড়েছে ‘সুন্দরী’ ও ‘রাজাবাবু’। এদের দেখতে প্রতিদিন খামারে ভিড় করছেন অনেক মানুষ।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়ের রৌহা গ্রামে জেসি অ্যাগ্রো ফার্ম। খোলা জায়গায় বিশাল শেডের নিচে লালন-পালন করা হচ্ছে ষাঁড়, মহিষ ও গাভি। তবে, ষাঁড়ের সংখ্যাই বেশি। ২৪ ঘণ্টা এসব পশুর সেবা-যত্নে ব্যস্ত থাকেন ২০-২৫ জন কর্মী। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, দুই বেলা গোসল, খাবার তৈরি, খাবার দেওয়া,  চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য—সবকিছুতেই থাকে কর্মীদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। এ কারণে জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের পশুর চাহিদা ব্যাপক। পশু দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন এ খামারে। পছন্দ হলে বুকিং দিয়ে যাচ্ছেন।

আরো পড়ুন:

সুন্দরী


খামারের কর্মীরা জানিয়েছেন, কোরবানির জন্য সুস্থ, সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান পশুর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই খামারটি বড় করা হচ্ছে। মাত্র ২০টি গরু দিয়ে শুরু হলেও এখন সেখানে ৩ শতাধিক পশু আছে। এবার সেখান থেকে ১৫০টি ষাঁড় বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করা রয়েছে। 

খামারে ভুট্টা দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি প্রাকৃতিক খাবার সাইলেস খেতে দেওয়া হয় গরু-মহিষকে। এ সাইলেস বাজার থেকে কেনা হয় না। খামারেই বানানো হয় এ পশুখাদ্য। এখানকার কর্মীরা অনেক দক্ষ। পশুর অসুখ-বিসুখে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতা নেওয়া হয়। খামারের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।

লাল, খয়েরি, সাদা ও কালো রঙের বিভিন্ন জাতের ষাঁড় আছে জেসি অ্যাগ্রো ফার্মে। এগুলোর মধ্যে দেশি জাত ছাড়াও ব্রাহামা, শাহীওয়াল, হরিয়ানা, গয়াল, নেপালি, ইন্ডিয়ান বইল উল্লেখ্যযোগ্য। এগুলো ছয় মাস থেকে এক বছর ধরে লালন-পালন করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় ষাঁড়টির নাম ‘রাজাবাবু’। এর থাকা-খাওয়া, পরিচর্যাসহ সবকিছু আলাদা। ওজন ৮০০ কেজি ছাড়িয়ে গেছে। ‘সুন্দরী’ নামের আরেকটি ধবধবে সাদা ষাঁড়ও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে। এ দুটি ষাঁড় দেখতে প্রতিদিনই খামারে ভিড় করছে লোকজন।

জেসি অ্যাগ্রো ফার্মে গরু দেখতে আসা ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেছেন, প্রতি বছর আমরা এ খামার থেকেই কোরবানির জন্য গরু কিনে থাকি। এ খামারের বিশেষ দিক হচ্ছে, এখানকার গরুগুলোকে প্রাকৃতিক উপায়ে খাবার দিয়ে বড় করা হয়। এখানে কোনো ভেজাল পাইনি। ইচ্ছে আছে, এ বছরও এখান থেকে গরু কিনব। তাই, দেখতে এসেছি। যদি পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী পছন্দের পশু পেয়ে যাই, তাহলে বুকিং দিয়ে যাব। কোরবানির আগে এসে নিয়ে যাব।

আছে অন্যান্য জাতের গরুও


জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের ম্যানেজার মোহাম্মদ রিয়াদ জানান, খামারে কেজি হিসেবে পশু বিক্রি করা হয়। এবার প্রতি কেজির দাম ধরা হয়েছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। তারা এগুলো হাট-বাজারে নিয়ে যান না। ক্রেতারা ফোনে কিংবা অনলাইনে যোগাযোগ করে ষাঁড় বুকিং দিয়ে রাখেন। ঈদের আগে সুবিধামতো সময়ে ক্রেতারা এগুলো নিজ দায়িত্বে নিয়ে যান। বিক্রির জন্য রাখা ষাঁড়ের মধ্যে ৭০ ভাগ বুকিং হয়ে গেছে। আশা করা হচ্ছে, ঈদের আগেই বিক্রি হয়ে যাবে সব ষাঁড়। এবার জেসি অ্যাগ্রো ফার্মে আড়াই থেকে ৩ কোটি টাকার পশু বিক্রি হতে পারে।

করিমগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস হাসান জানিয়েছেন, জেসি অ্যাগ্রো ফার্ম দীর্ঘদিন ধরেই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু লালন-পালন করে বড় করছে। আমরাও প্রতিনিয়ত তাদের ফার্মের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। জেলায় এবার কোরবানির পশুর চাহিদা আছে ১ লাখ ৮০ হাজার ৯১১টি। এর বিপরীতে কোরবানির জন্য লালন-পালন করা হয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৯টি। পশু পালনের বিষয়ে খামারিদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

ঢাকা/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়