ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বান্দরবানে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা, সতর্ক করতে মাইকিং

বান্দরবান প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫০, ৩০ মে ২০২৫  
বান্দরবানে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা, সতর্ক করতে মাইকিং

টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের ওপর ও পাদদেশের ঘর-বাড়িগুলো ঝুঁকির মধ্যে আছে

বান্দরবানে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা বেড়েছে। পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরে মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (৩০ মে) সকালে বান্দরবান জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টির কারণে বেশকিছু স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ের ওপর ও পাদদেশে অবস্থিত ঘর-বাড়িগুলো ঝুঁকির মধ্যে আছে। এমন আবহাওয়া যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে বন্যা দেখা দিতে পারে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, দুর্যোগ মোকাবিলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বান্দরবান সদরে ৪৬টি, রুমায় ২৮টি, রোয়াংছড়িতে ১৯টি, থানচিতে ১৫টি, লামায় ৫৫টি, আলীকদমে ১৫টি এবং নাইক্ষ্যংছড়িতে ৪২টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়াও জেলার এডিসি, এনডিসি ও একজন এডিশনাল এসপির সমন্বয়ে একটি জরুরি সেবা বুথ বা কল সেন্টার খোলা হয়েছে। একইভাবে প্রতিটি উপজেলায় জরুরি সেবা/ যোগাযোগকেন্দ্র খোলা হয়েছে। জরুরি যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর (01309744923) দেওয়া হয়েছে। 

শহরের ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেছেন, “আরো কয়েকদিন এরকম বৃষ্টি হলে পাহাড় ধসে যেতে পারে। তাই, আমাদের এখন থেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে, তা না করলে বড় বিপদে পড়তে পারি।”

স্টেডিয়াম-সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত রিনা আক্তার বলেন, “ঝুঁকি আছে, জানি; কিন্তু এখানে থাকারই হচ্ছে। ঘরে জিনিসপত্র রেখে কোথায় যাব? সবকিছু ফেলে যাওয়া সম্ভব না। আমরা নিম্নআয়ের মানুষ। আমাদের সামর্থ্য নেই সমতল বা নিরাপদ জায়গায় বাস করার। তাই, ঝুঁকি নিয়েই থাকতে হচ্ছে।”

জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সনাতন কুমার মন্ডল জানিয়েছেন, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বান্দরবানে গত ২৯ মে থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ২৯ মে রাত ৯টা থেকে ৩০ মে সকাল ৯টা পর্যন্ত বান্দরবানে ১৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ জেলায় আগামী ৩১ মে পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। 

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি জানিয়েছেন, গত বছরগুলোতে বর্ষা মৌসুমে বান্দরবান জেলায় পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যা, পাহাড় ধসের ঘটনাকে মাথায় রেখে পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে গত ১৭ তারিখ থেকে সকল উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ প্রশাসন, সিভিল সার্জন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও এনজিওদের নিয়ে দুর্যোগকালীন জরুরি সেবা কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলায় ভারী বৃষ্টিসহ বৈরী আবাহওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার সাথে সাথে এই কমিটির সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা মাঠে থেকে মনিটরিং করবেন। জেলার যেকোনো স্থানে কোনো অঘটন বা দুর্ঘটনা ঘটার খবর পাওয়ার সাথে সাথে দ্রুততার সাথে দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে। 

দুর্যোগকালীন জরুরি খাদ্য, ওষুধ সরবরাহ ও জরুরি সেবার জন্য জেলার সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা প্রস্তুত থাকবেন এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ সকল প্রকার ওষুধ সরবরাহ করা হবে।

ঢাকা/চাই মং/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়