গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত, পানিবন্দি হাজারো পরিবার
পটুয়াখালী (উপকূল) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

পটুয়াখালীতে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত একটি বাড়ি
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে পটুয়াখালীতে আজও বৃষ্টি হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় বইছে দমকা হাওয়া। সাগরের বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে।
উপকূলীয় এলাকায় এখনো ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। এ কারণে পটুয়াখালীর পায়রাসহ দেশের সব সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সব মাছধরা ট্রলার সমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে তারা।
এদিকে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার দুই স্থানে নতুন করে বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। ফলে অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় আছেন হাজার হাজার মানুষ।
ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ করছেন এলাকাবাসী
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে পটুয়াখালীর গলাচিপার পানপট্রি বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি বেড়িবাঁধ নতুন করে ভেঙে গেছে। ফলে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাঙ্গাবালী উপজেলার মধ্য চালিতাবুনিয়া গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে পুরো চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। চরআন্ডা গ্রামের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে রাঙ্গাবালী উপজেলার অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া সী-বিচ সড়ক উদ্বোধনের আগেই সমুদ্রের ঢেউয়ের তাণ্ডবে ধ্বসে পড়েছে। দুই দফা জোয়ারে নদ-নদীর পানি ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়িবাঁধের বাইরের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। টানা বৃষ্টির বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর।
বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়ায় গাছ ভেঙে কয়েকটি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেড়িবাঁধের বাইরের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল।
কৃষি ও মৎস্য খাতে ঠিক কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখানো নিরূপণ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর।
রাঙ্গাবালী উপজেলা মধ্য চালিতাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা পারভেজ হোসেন বলেন, “আমাদের এখানের বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে। ঘর একেবারে তলিয়েছে। এখন আমরা পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।”
একই উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের মোল্লা গ্রামের বাসিন্দা ফয়েজ হোসেন বলেন, “আমরা বেড়িবাঁধের বাইরে থাকি। অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে আমাদের ঘর একেবারে তলিয়ে গেছে। স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করেছে। এখন আমরা একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। অনেক দুরাবস্থার মধ্যে আছি।”
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মো. আরেফিন বলেন, “জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৮৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শুকনো খাবারের জন্য ৮ উপজেলায় তিন লক্ষ্য করে টাকা এবং ঢেউটিন বিতরণের জন্য ৯ লাখ করে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ