ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জে নদীর পানি বাড়ছে 

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ৩১ মে ২০২৫  
পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জে নদীর পানি বাড়ছে 

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাতে জেলার প্রধান নদী সুরমাসহ সকল শাখা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি থাকলেও জেলায় বন্যা হবে না বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবুও নদীর দুই কূল ছাপিয়ে বন্যার আতঙ্কে রয়েছে নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, আজ শনিবার ( ৩১ মে ) সন্ধ্যায় সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমার এই পয়েন্টে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগের দিন একই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৯২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সেই হিসাবে একদিনের ব্যবধানে প্রায় ১০০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

আরো পড়ুন:

শুক্রবার (৩০ মে) সকাল ৯টা থেকে শনিবার (৩১ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ শহরে ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর আগের দিন ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২১৭ মিলিমিটার। এই হিসাবে দুই দিনে দেশের উজানে ৬২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  গত দুই দিনে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হওয়ায় সেখানের পানিও নেমে আসছে ভাটির জেলা সুনামগঞ্জে। এতে জেলার তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা, পাটলাই, বৌলাই ও রক্তি; দোয়ারাবাজার-ছাতক উপজেলার খাসিয়ামারা, চিলাই, চেলা, পিয়াইন; মধ্যনগর উপজেলার সোমেশ্বরী নদীতে পাহাড়ি পানির ঢল নেমেছে।

গতরাতে তেমন বৃষ্টি না হলেও আজ শনিবার (৩১ মে) দুপুর দুইটা থেকে সুনামগঞ্জ জেলায় মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এমন বর্ষণে একদিকে নদ-নদীর পানি বাড়ছে, অন্যদিকে জনজীবন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে ভারতের আসাম এবং মেঘালয় রাজ্যে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের খবরে জেলার নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষের মনে বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে।

শহরের নবীনগর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ অপু বলেন, ‘‘নদীর পানি শুক্রবার (৩০ মে) ও কম ছিল, আজ অনেকটা বেড়েছে। আমাদের বাড়ির পাশের হাওরেও পানি বেড়েছে। এর মধ্যে আরো বৃষ্টি হলে তো বন্যা হয়ে যাবে। টেনশনে আছি।’’  

পৌর শহরের কাজির পয়েন্ট এলাকার ভ্যান চালক শরিফ মিয়া রাইজিংবিডি-কে বলেন, ‘‘বের হয়েছিলাম একটা ট্রিপের জন্য। উকিলপাড়া থেকে মাইজবাড়ি এলাকায় একটা সোফা সেট দিয়ে আসব। বৃষ্টির মধ্যে সোফা সেট নিলে ভিজে নষ্ট হয়ে যাবে তাই আজ ট্রিপটা মিস হয়েছে। মেঘবাদলের দিন, বুঝতেছি না আর কোনো ট্রিপ পাব কি-না।’’  

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মামুন হাওলাদার রাইজিংবিডি-কে বলেন, ‘‘ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ও সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হওয়ায় জেলার নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে।’’

ভারতে ও সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টির ফলে বন্যার আশঙ্কা আছে কি-না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপাতত বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে জেলাবাসীকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে। 
 

ঢাকা/মনোয়ার/বকুল

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়