বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে সুরমা-কুশিয়ারার পানি, সিলেটে বন্যার পদধ্বনি
সিলেট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি
সিলেট নগরীতে আজ রবিবার (১ জুন) ভোর ৬টা পর্যন্ত বিগত চব্বিশ ঘণ্টায় ৪০৪.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১৪ মিলিমিটার ও সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৩.৬ মিলিমিটার।
অন্যদিকে, উজানের ঢলে পানি বেড়েছে নদ-নদীতে। সুরমা-কুশিয়ারার দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে পানি। এতে আগাম বন্যার পদধ্বনি পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন সিলেটবাসী।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, চব্বিশ ঘণ্টার হিসেবে ৪০৪.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত এই মৌসুমের সর্বোচ্চ। এরপর রবিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১৪ মিলিমিটার ও সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৩.৬ মিলিমিটার।
এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুপুর ১২টার প্রতিবেদন অনুযায়ী সুরমা নদী সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, যা গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নিচে ছিল।
একই সময়ে কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১.২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যা গতকাল বিপৎসীমার ১৮৭ সেন্টিমিটার নিচে ছিল।
সুরমা নদী সিলেট নগরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসময় কুশিয়ারা নদী বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার নিচে, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভারী বর্ষণের ফলে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ইতিমধ্যে গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকা, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন জায়গায়। গোয়াইনঘাটের নিম্নাঞ্চলের গ্রামীণ জনপদ ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, “ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ফলে সীমান্তের নদ-নদী দিয়ে পানির ঢল আসছে। সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে পানি। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যার শঙ্কা রয়েছে।”
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, “আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতি নিতে হবে। তবে আশা করা যায় বৃষ্টিপাত থামলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”
ঢাকা/নূর/এস