কুমিল্লায় পশুর হাটে দেশি মাঝারি আকারের গরুর প্রাধান্য
রুবেল মজুমদার, কুমিল্লা || রাইজিংবিডি.কম
লালমাই উপজেলার বাঘমারা পশুরহাট
ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে কুমিল্লার পশুর হাটগুলো। জেলার লালমাই উপজেলার বাগমারা, সদর দক্ষিণের সুয়াগাজী বাজারসহ বিভিন্ন হাটে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে গরু-ছাগল কেনাবেচার উৎসব। মানুষের ভিড়, দর কষাকষি আর বিক্রেতাদের হাঁকডাক-সব মিলে ঈদের আমেজ যেন হাটেই আগে থেকে নেমে এসেছে।
এ বছর হাটের তারকা দেশি জাতের মাঝারি আকারের গরু। এসব গরু দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি দামেও তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি-এ অভিযোগ করছেন অনেক ক্রেতা। তবে বিক্রেতারা বলছেন, দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করতে এবার খরচ পড়েছে বেশি। সেই হিসাবেই দাম।
সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী বাজারে গরু বিক্রেতা সাগর মিয়া বলেন, ‘‘দেড় লাখ টাকার গরুতে অনেকে ৮০-৯০ হাজার টাকার বেশি দিচ্ছেন না। আবার এক লাখ টাকার গরুর দাম বলতে বলতে নেমে যাচ্ছে ৬০ হাজারে। কেউ দরদাম মিলিয়ে কিনে নিচ্ছেন, কেউ আবার দাম শুনেই ফিরে যাচ্ছেন।’’
বাগমারা হাটে গরু দেখতে আসা মাহফুজ আহমেদ বলেন, ‘‘হাটে গরুর সংখ্যা অনেক, কিন্তু দামের লাগাম নেই। তবুও কোরবানির জন্য গরু তো কিনতেই হবে।’’
আরেক ক্রেতা কালা মিয়া বলেন, ‘‘ঈদের কাছাকাছি সময়ে গরুর দাম একটু চড়া থাকবেই, তবে এবার একটু বেশি মনে হচ্ছে।’’
একই হাটে দেখা মিলল -শাহাদাত হোসেন, মহব্বত হোসেন, দেলোয়ার হোসেন ও ইব্রাহিম সরদার নামে আরও কয়েকজন ক্রেতার। তারা জানালেন, সাধ্যের সঙ্গে তাল মেলানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ ভাবছেন আরও এক-দুইদিন অপেক্ষা করে যদি দাম কিছুটা কমে, তবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
পশুর স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে এবার প্রশাসনের প্রস্তুতিও বেশ। প্রতিটি হাটেই রয়েছে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম, পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা। নগরীর হাটগুলোতে বসানো হয়েছে জাল টাকা শনাক্তকারী মেশিন, ব্যাংকের বুথ ও ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা।
জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ‘‘চাঁদাবাজি, হয়রানি ও অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। সাদা পোশাকে নজরদারি থাকবে, সঙ্গে থাকবে ডিবির বিশেষ টিম।’’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, ‘‘এবার কুমিল্লায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৮২টি গরু, ৬০৮টি মহিষ, ৫৬ হাজার ৯৪০টি ছাগল, ১১ হাজার ৮০৫টি ভেড়া ও ৩১৭টি অন্যান্য পশু। জেলার চাহিদা মেটাতে এগুলো যথেষ্ট, বরং উদ্বৃত্ত ২৩ হাজার ১৬৬টি পশু অন্য জেলায় পাঠানো যাবে।’’
ঢাকা/টিপু