ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

রাজশাহীতে মৃৎশিল্পীদের রং-তুলির ছোঁয়ায় প্রাণ পাচ্ছে প্রতিমা

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৪, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৫:১৩, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রাজশাহীতে মৃৎশিল্পীদের রং-তুলির ছোঁয়ায় প্রাণ পাচ্ছে প্রতিমা

মৃৎশিল্পীদের রং-তুলির আঁচড়ে প্রাণ পাচ্ছে দেবী দুর্গার প্রতিমা

রাজশাহীতে শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মৃৎশিল্পীদের রং-তুলির ছোঁয়ায় প্রাণ পাচ্ছে দেবী দুর্গার প্রতিমা। শিল্পীদের যত্নে মাটি, খড় ও বাঁশের কাঠামোয় ফুটে উঠছে ঐশ্বর্যের রূপ। এসব প্রতীমা যাবে মণ্ডপে মণ্ডপে। 

এদিকে, মণ্ডপ সাজসজ্জায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কর্মীরা। নগরের বিভিন্ন স্থানে শেষ মুহূর্তের প্যান্ডেল তৈরির কাজও চলছে জোরেশোরে।

আরো পড়ুন:

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এ উৎসব। দেবীর আগমনী বার্তায় ইতোমধ্যেই ভক্তকুলে সাজ সাজ রব। প্রতিমাশালায় ঘুম নেই কারো। মৃৎশিল্পীর নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তিলতিল করে কাদামাটিতে গড়া প্রতিমায় ভরে উঠছে পালপাড়াগুলো।

রাজশাহী নগরের ধর্মসভা মন্দিরের গণেশ পাল, শেখেরচকের কার্তিক পাল, হড়গ্রামের অনন্ত পাল, রনজিত পাল, ষষ্ঠীতলার অরুণ কুমার পাল, আর রেশমপট্টির সুশীল পালের হাতে এখন প্রতিমা নির্মাণের ব্যস্ততা। তাদের মতো জেলায় প্রায় ৪০টি পাল পরিবার দিনরাত প্রতিমা গড়ছেন নিজেদের আঙিনায়। শেষ মূহুর্তে এখন রং-তুলির আঁচড়ে সেজে উঠছে দেবী দুর্গা।

প্রতিমা শিল্পী কার্তিক চন্দ্র পাল বলেন, “রং করার কাজ হচ্ছে। এখন খুব চাপ। আজ, কাল, ও পরশু সব প্রতিমা হস্তান্তর করতে হবে। এবার ২৮টা প্রতিমার কাজ করছি। এরমধ্যে তিনটি শহরের বাইরে যাবে। বাকি ২৫টা শহরের মধ্যেই বিভিন্ন মণ্ডপে চলে যাবে।”

দেবী দুর্গাকে শাড়ি পড়াচ্ছেন এক মৃৎশিল্পী


রাজশাহী মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি সুব্রত রায় বলেন, “নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে জোরেশোরে প্রস্তুতি চলছে। প্রতিটি মণ্ডপে ১০ জনের স্বেচ্ছাসেবক দল থাকবে। এক্ষেত্রে বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের সহায়তা করছেন।”

এবার রাজশাহী মহানগররে ৮০টি ও জেলায় ৪১২টি মিলে মোট ৪৯২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা আয়োজন করা হচ্ছে। অধিকাংশ মণ্ডপই এখন প্রস্তুত, শিগগিরই মণ্ডপে শোভা পাবে প্রতিমাগুলো। উৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, আনসার এবং সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা নজরদারি চালাচ্ছেন প্রতিমা নির্মাণ কেন্দ্র ও মণ্ডপগুলোতে।

গত মঙ্গলবার রাজশাহী নগরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন র‌্যাব-৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ পারভেজ। পরে ধর্মসভা মণ্ডপে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

দুর্গাপূজা নিয়ে কোনো ধরনের হুমকি নেই জানিয়ে র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, “ষষ্ঠী পূজা থেকে মণ্ডপ এবং রাস্তাগুলোতে বিশেষ নজরদারি থাকবে। শুধু র‌্যাবই নয়, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের সঙ্গে সভা করা হয়েছে। এ বছরও অনেক ভালো পরিকল্পনা করা হয়েছে। হুমকি পর্যবেক্ষণ করেছি। বিশেষ কোনো হুমকি নেই। তারপরও আমরা নিরাপত্তাব্যবস্থাকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছি। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না বলে আশা করি।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এই দেশে সব ধর্মের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারেন। বাংলাদেশের মতো পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি এত বেশি সহায়তা এবং সহযোগিতার মনোভাব আছে বলে আমি মনে করি না। গতবার মাদরাসার ছাত্ররাও মণ্ডপ পাহারা দিয়েছে। এর তো তুলনা হয় না।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়