ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বেরোবি ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের একাধিক অভিযোগ 

বেরোবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৯, ১৭ এপ্রিল ২০২৫   আপডেট: ২৩:১৩, ২১ এপ্রিল ২০২৫
বেরোবি ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের একাধিক অভিযোগ 

অধ্যাপক রশীদুল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র সিংহ

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) পরিসংখ্যান বিভাগের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণেদিতভাবে পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়া ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবা (১৭ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শওকাত আলীর কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের (১২ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা।

অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন, পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মো. রশীদুল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র সিংহ।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন, পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র সিংহ স্যারের স্ট্যাট-৪২০১ নম্বর কোর্সে শ্রেণিকক্ষে পাঠ্য বিষয়ের সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কোনো সাদৃশ্য ছিল না। মিড সেমিস্টার পরীক্ষায় ৬৬ জনের প্রায় সবাই ২৫ নম্বরের মধ্যে গড়ে মাত্র ৫ গড়ে পেয়েছি। সেই সঙ্গে তিনি কন্টিনিউয়াস ফাইনাল পরীক্ষা হওয়ার পর ১৯ মার্চ ফল প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সেখানে গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি তারিখ দিয়েছেন, যা পরীক্ষার আগের। এটা পুরোপুরি কল্পিত অসৎ উদ্দেশ্যের দিকে ইঙ্গীত করে।

এছাড়াও তিনি থিওরি ও ল্যাবের প্রশ্নপত্র এমনভাবে করেছেন, যেন আমরা কোনো শিক্ষার্থীই লিখতে পারেনি। অথচ তিনি তার প্রিয় শিক্ষার্থীদের ২-৩ জনকে অস্বাভাবিকভাবে নম্বর বেশি দিয়েছেন। আমরা আশঙ্কা করছি, আমাদের ৪.২ সেমিস্টারের ফলাফল অকৃতকার্য ও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

শিক্ষার্থীরা আরো উল্লেখ করেন, অতুল চন্দ্র সিংহ স্যার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশ সংস্কার সংক্রান্ত পোস্ট ও লেখালেখি এবং বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাছাড়াও তিনি আমাদের সঙ্গে সফরে অংশ নিতে না পারায় পুরো ব্যাচের প্রতি ক্ষুব্ধ।

শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক মো. রশীদুল ইসলামের ব্যাপারে অভিযোগ তুলে বলেন, জুলাই আন্দোলনের পর এই শিক্ষক বিভাগীয় প্রধান হওয়ার জন্য আমাদের আন্দোলনে নামতে বলেন, যা আমরা অস্বীকার করি। জুলাই আন্দোলন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও অন্যান্য আয়োজনে যারা অংশগ্রহণ করেছিল, তাদের চিহ্নিত করে হুমকি, মানসিক নির্যাতন ও পরীক্ষা চলাকালে তিনি বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেন। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে কন্টিনিউয়াস নম্বর প্রকাশ না করে বারবার হুমকি ও মানসিক চাপ প্রয়োগ করেন। অতীতে তার বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্যকলাপ ও শিক্ষার্থীদের অপব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, “এ নিয়ে আমরা সেসব শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করলে, তারা বিভিন্ন কথা শোনায়। তাই আমরা বাধ্য হয়ে সব শিক্ষার্থী মিলে অভিযোগ দিয়েছি। যদি না মানা হয় তাহলে আমরা অনশন করব।

অভিযোগের বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র সিংহ বলেন, “তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এসব করেছে। আমি তাদের খাতায় যা পেয়েছি, সে অনুযায়ী নাম্বার দিয়েছি। ওদের পড়ার ধরণ ছিল আলাদা, আমার পড়ানোর ধরণ ছিল আলাদা। তাদের কোনো অভিযোগই সত্য না।”

অধ্যাপক রশীদুল ইসলাম বলেন, “শেষ সেমিস্টারটা শর্ট হওয়ায় কন্টিনিউয়াস নম্বরটা দিতে পারিনি। জুলাই আন্দোলন এবং পরবতীতে বিভাগের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছিল. তাদের উপর চাপ প্রয়োগ বিষয়টি ভিত্তিহীন। আমি শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করিনি।”

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শওকাত আলী বলেন, “আমি আগে   সবাইকে ডাকব। কেনো তারা অভিযোগ করল, জানব। তারপর তাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থীর কাছে শুনে কমিটি করে দিব। সত্যতা মিলে গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়