খুবির হল সংযুক্তিতে দীর্ঘসূত্রতা, উদ্বেগে শিক্ষার্থীরা
খুবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের সিট সংযুক্তির প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। নিয়মিত সময়সূচির বাইরে গিয়ে বরাদ্দ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে দুশ্চিন্তা, অনিশ্চয়তা ও আর্থিক চাপ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, স্নাতক সমাপ্ত শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার পরপরই নতুন শিক্ষার্থীদের সিট সংযুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে এই প্রক্রিয়া শেষ হতে দুই থেকে তিন মাস, এমনকি তার চেয়েও বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের একদিকে যেমন বাড়তি বাসাভাড়া গুনতে হচ্ছে, অন্যদিকে হল সিট পাওয়া নিয়েও পড়তে হচ্ছে অনিশ্চয়তায়।
সিটপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী নাহিদ মোল্লা বলেন, “চার মাসের অনিশ্চয়তার মহাযোগ্যের শেষ হলো আজ। সেই জানুয়ারিতে আবেদন, ফেব্রুয়ারিতে ভাইবা—এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে অবশেষে সেই সোনার হরিণ হাতে পেলাম।”
অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী লাদেন হোসেন জানান, আমরা জানুয়ারিতে আবেদন করি, ফেব্রুয়ারিতে ভাইভা দিই, আর মার্চে বাসা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু হলে উঠতে গিয়ে এপ্রিল মাসে গিয়ে পৌঁছায় সিট বরাদ্দ। তখন বাধ্য হয়ে বাসাভাড়াও পরিশোধ করতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ছাত্র হল ও দুটি ছাত্রী হলে আবাসন সুবিধার আওতায় আছে প্রায় ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র হলগুলোতে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৩৬৪, যেখানে সংযুক্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার ২৩৬ জন।
এর মধ্যে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন হলে আসন সংখ্যা ৫৭৬, সংযুক্ত ১,৬৮৫; খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা হলে আসন সংখ্যা ৩৮৪, সংযুক্ত ১,২৮৭; খান জাহান আলী হলে আসন সংখ্যা ৪০৪, সংযুক্ত ১,২৬৪ জন।
এই চরম বৈষম্য ও দীর্ঘসূত্রতা শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন রুহুল আমিন হলের শিক্ষার্থী নাঈম শেখ। তার মতে, সিট সংযুক্তির জন্য কোনো নির্ধারিত সময়সীমা না থাকায় শিক্ষার্থীদের মাঝে এক ধরনের অনিশ্চয়তা কাজ করে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সংকট সমাধানে প্রয়োজন দ্রুত প্রশাসনিক উদ্যোগ, নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদি আবাসন পরিকল্পনা।
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. খসরুল আলম বলেন, “হলগুলোতে সিট সংযুক্তির প্রক্রিয়া সাধারণত চার সপ্তাহের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু বিভিন্ন কারণেই তা দীর্ঘায়িত হয়। আমি হল প্রভোস্টদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেব, যাতে ভবিষ্যতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সিট বরাদ্দ সম্পন্ন করা যায়।”
হাসিবুল/এনএইচ