রাকসু: ছাত্রীদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ ছাত্রদল
রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বহুল প্রতিক্ষিত রাকসু নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন ছাত্রীরা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রীদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রার্থীরা। এমনকি এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দিতা করা ছাত্রদলর নারী প্রার্থীও ছাত্রীদের মন যোগাতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার পর থেকে কেন্দ্রগুলোর ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়। সারা রাত কেটে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দেওয়া কেন্দ্রগুলোর ফলাফল পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে রাত ৮টায় গণনা শুরু হয়েছে। ভোট গণনা শেষে ১৭টি কেন্দ্রের ফলাফল পৃথকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ফলাফল ঘোষণার দায়িত্ব পালন করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম এবং কমিশনের অন্য সদস্যরা। ভোটার সংখ্যা কম-বেশি থাকায় কোনো কেন্দ্রে আগে, কোনো কেন্দ্রে দেরিতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
নারীদের ছয়টি কেন্দ্রে ভিপি পদে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রার্থী এবং জিএস পদে আধিপত্যবিরোধী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। এজিএসে পদেও ছাত্রদলের নারী প্রার্থীর সঙ্গে ব্যবধান কম থাকলেও শিবিরের প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন।
মুন্নুজান হল কেন্দ্র
রাকসুর ভোটে এই কেন্দ্রে ভিপি পদে শিবিরের মোস্তাকুর রহমান জাহিদ ৯৭২টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন; তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের শেখ নূর উদ্দিন আবীর পেয়েছেন ২৩৬টি ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী তাসিন খান ১৭৩টি ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন।
জিএস পদে আধিপত্যবিরোধী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার ৮৪১টি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন; শিবিরের ফাহিম রেজা ৪৯৫টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন। তবে ছাত্রদলের প্রার্থী নাফিউল ইসলাম জীবন মাত্র ৮৯টি ভোট পেয়েছেন।
এজিএস পদে শিবিরের সালমান সাব্বির ৫৫৩টি ভোট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন। ছাত্রদলের জাহিন বিশ্বাস এষা ৩৭৮টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।
বেগম রোকেয়া হল কেন্দ্র
রাকসু নির্বাচনে মেয়েদের বেগম রোকেয়া হল কেন্দ্রে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবিরের চেয়ে তিন গুণেরও বেশি ভোট পেয়েছেন ছাত্রশিবির প্যানেলের প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম জানান, মোস্তাকুর রহমান জাহিদ কেন্দ্রীয় সংসদের ভিপি পদে পেয়েছেন ৭৫২ ভোট। ছাত্রদলের আবির পেয়েছেন ২১১টি ভোট।
জিএস পদে আধিপত্যবিরোধী ঐক্য প্যানেলের সালাহউদ্দিন আম্মার ৬৬১টি ও ছাত্রিশিবিরের প্যানেলের ফাহিম রেজা ৩৭৭টি ভোট পেয়েছেন। ভোটপ্রাপ্তীতে এই দুই প্রার্থীর অনেক দুরে অবস্থান করছেন ছাত্রদলের প্রার্থী নাফিউল ইসলাম জীবন।
এজিএস পদে শিবিরের সালমান সাব্বির ৩৪৬ ও ছাত্রদলের জাহিন বিশ্বাস এষা ২৯৯টি ভোট পেয়েছেন।
তাপসী রাবেয়া হল কেন্দ্র
এই হলে ভিপি পদে জাহিদ (ছাত্রশিবির) ৪৭৩টি ভোট নিয়ে ছাত্রদলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবীরের চেয়ে প্রায় তিন গুণ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। আবীর পেয়েছেন ১৩৬টি ভোট।
জিএস পদে আম্মার (আধিপত্যবিরোধী ঐক্য জোট) ৪০৮টি ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ফাহিম রেজা (ছাত্রশিবির) ২৫৪টি ভোট পেয়েছেন।
এজিএস পদে সাব্বির (ছাত্রশিবির) ২৪৫টি ভোট নিয়ে এগিয়ে আছেন। জাহিন বিশ্বাস এষা (ছাত্রদল) পেয়েছেন ১৯৭টি ভোট।
খালেদা জিয়া হল কেন্দ্র
এই হলে ভিপি পদে ছাত্রশিবিরের জাহিদ ৪৮৫টি ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন; যেখানে ছাত্রদলের আবীর পেয়েছেন ১৩৭টি ভোট।
জিএস পদে অধিপত্যবিরোধী ঐক্য জোটের আম্মার ৩৫২টি ভোট নিয়ে পেছনে ফেলেছেন ছাত্রশিবিরের ফাহিমকে, যিনি ২৯৫টি ভোট পেয়েছেন।
এজিএস পদে শিবিরের সাব্বিরের ঝুলিতে গেছে ২৭৮টি ভোট। আর ছাত্রদলের এষা ১৭১টি ভোট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।
রহমতুন্নেসা হল কেন্দ্র
এই হলে ভিপি পদে ছাত্রশিবিরের জাহিদ ৬৩০টি ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন; যেখানে ছাত্রদলের আবীর পেয়েছেন ১৮৬টি ভোট।
জিএস পদে অধিপত্যবিরোধী ঐক্য জোটের আম্মার ৫৮৯টি ভোট নিয়ে পেছনে ফেলেছেন ছাত্রশিবিরের ফাহিমকে, যিনি ৩২০টি ভোট পেয়েছেন।
এজিএস পদে শিবিরের সাব্বিরের ঝুলিতে গেছে ৩৪৯টি ভোট। আর ছাত্রদলের এষা ২৮৯টি ভোট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।
জুলাই ৩৬ হল কেন্দ্র
এই হলে ভিপি পদে ছাত্রদলের আবীর পেয়েছেন ৩০০টি ভোট। তিন গুণের বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন ছাত্রশিবিরের জাহিদ। তিনি ৯৪৫টি ভোট পেয়েছেন।
জিএস পদে অধিপত্যবিরোধী ঐক্য জোটের আম্মার ৮৩৫টি ভোট নিয়ে পেছনে ফেলেছেন ছাত্রশিবিরের ফাহিমকে, যিনি ৫১০টি ভোট পেয়েছেন।
এজিএস পদে শিবিরের সাব্বিরের ঝুলিতে গেছে ৫২৪টি ভোট। আর ছাত্রদলের এষা ৩৭৩টি ভোট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে সভাপতি বাদে অন্যান্য সম্পদকীয় পদ ও নির্বাহী সদস্য পদে শিক্ষার্থীদের সরাসরি ভোট হয়। পদাধিকার বলে ছাত্র সংসদের ভিপির দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। ফলে ছাত্রপ্রতিনিধি হিসেবে সর্বোচ্চ পদ হলো সহ-সভাপতি বা ভিপি।
ঢাকা/কেয়া/মেহেদী