ঢাকা     বুধবার   ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৩ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ভুয়া অফার লেটার দিয়ে সনদ উত্তোলনের চেষ্টা

ইবির সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ

ইবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৯, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৬:৩১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
ইবির সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক সহ-সমন্বয়ক ও অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭–১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে বিদেশি অধ্যাপকের স্বাক্ষর জালিয়াতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ নিউ অরলিন্সের (UNO) এক অধ্যাপকের স্বাক্ষর নকল করে তিনি একটি ভুয়া চাকরির প্রস্তাবপত্র (অফার লেটার) তৈরি করেছেন।

নিজের মূল সনদ উত্তোলনের প্রক্রিয়া সহজ করতে নাহিদ হাসান এই জাল অফার লেটার তৈরি করেন। নথিতে উল্লেখ করা হয়, ইউনিভার্সিটি অফ নিউ অরলিন্সের অর্থনীতি ও অর্থসংস্থান বিভাগে তিনি ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (TA) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। এতে আরো উল্লেখ ছিল, তার কর্মকাল ১৪ আগস্ট ২০২৬ থেকে ১৩ মে ২০২৭ পর্যন্ত এবং বাৎসরিক ১৮ হাজার মার্কিন ডলার স্টাইপেন্ড প্রদান করা হবে। পাশাপাশি তাকে ফুল-টাইম গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হবে এবং নন-রেসিডেন্ট ফি মওকুফের কথাও উল্লেখ ছিল।

আরো পড়ুন:

অন্য একটি নথিতে দেখা যায়, নাহিদ হাসান ১৪ নভেম্বর ওই অফার লেটার গ্রহণ করেছেন বলে দেখানো হয়েছে এবং সেখানে তার স্বাক্ষর সংযুক্ত রয়েছে।

তবে সংশ্লিষ্ট অধ্যাপকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন। ইউনিভার্সিটি অফ নিউ অরলিন্সের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ও পিএইচডি প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী ড. কবীর হাসান বলেন, “আমার স্বাক্ষর জাল করে একটি ভুয়া অফার লেটার তৈরি করা হয়েছে। এটি স্পষ্টতই অনৈতিক কাজ।”

এতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর বড় কোনো ক্ষতি হোক তিনি তা চান না। ভবিষ্যতে এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানান তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাহিদ হাসানের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমার ভুল হয়েছে। মূল সনদ উত্তোলনের প্রক্রিয়া জটিল ছিল। এক জুনিয়রকে বললে সে এই অফার লেটারটি তৈরি করে দেয়। এটা করা আমার একেবারেই উচিত হয়নি।”

এদিকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রথমে অফার লেটার সংযুক্ত করে আবেদন জমা দিলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট অধ্যাপককে ই-মেইল পাঠায়। তবে সাড়া না পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিশেষ সুপারিশে নাহিদ হাসানের মূল সনদ উত্তোলনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সুপারিশের পর তার সনদ প্রিন্ট সম্পন্ন হলেও এখনো তা হস্তান্তর করা হয়নি।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. ওয়ালিউর রহমান বলেন, “প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের পর সনদ প্রস্তুত করা হয়েছে। সব ক্ষেত্রে শতভাগ যাচাই সম্ভব হয় না। অনেক সময় বিশেষ সুপারিশেও কাজ করতে হয়। তবে অভিযোগের বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখব।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/তানভীর/জান্নাত

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়