ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

‘কিশোর নেই মনে হলেই ভেতরটা হাহাকার করে’

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫০, ৬ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১২:২০, ৬ জুলাই ২০২১
‘কিশোর নেই মনে হলেই ভেতরটা হাহাকার করে’

এন্ড্রু কিশোর এখন শুধুই স্মৃতি

‘ডাক দিয়েছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেওগো মাটি’, ‘হায়রে মানুষ রঙ্গিন ফানুস’, ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’ সহ অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গানের দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। গত বছরের ৬ জুলাই, সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। আজ (৬ জুলাই) তার চলে যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হলো।

প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে এন্ড্রু কিশোরকে স্মরণ করলেন তার প্রিয় বন্ধু হানিফ সংকেত। বেশ কটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে একটি স্ট‌্যাটাস দিয়েছেন। শুরুতে তিনি লিখেন, ‘দেখতে দেখতে একটি বছর হয়ে গেলো কিশোর নেই। বিশ্বাস করতে মন চায় না, অথচ এটাই সত্যি।’

এন্ড্রু কিশোর-বাংলা গানের ঐশ্বর্য। তা উল্লেখ করে হানিফ সংকেত লিখেন, ‘এন্ড্রু কিশোর-বাংলা গানের ঐশ্বর্য। যার খ্যাতির চাইতে কণ্ঠের দ্যুতি ছিলো বেশি। যার কাছে গানই ছিলো জীবন-মরণ, গানই ছিলো প্রাণ। এই গানের জন্যই কিশোর পেয়েছে প্লে-ব্যাক সম্রাটের উপাধি। গানের জন্যই মানুষ তাকে ভালোবাসতো। অবশেষে মরণব্যাধি ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে গত বছরের এই দিনে সবাইকে কাঁদিয়ে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেয় সবার প্রিয় এন্ড্রু কিশোর।’

এন্ড্রু কিশোরের সঙ্গে হানিফ সংকেতের দীর্ঘ ৪০ বছরের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। অসংখ‌্য স্মৃতি জমে আছে হানিফ সংকেতের হৃদয়ে। তা জানিয়ে তিনি লিখেন, ‘কিশোর যেমন প্রাণ খুলে দরাজ গলায় গাইতে পারতো, তেমনি মানুষের সঙ্গেও প্রাণ খুলে মিশতে পারতো। সবসময় নিজের সুবিধার চাইতে অন্যের সুবিধার দিকেই দৃষ্টি ছিলো তার বেশি। কিশোরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক প্রায় ৪০ বছরের। একসঙ্গে অনেক আড্ডা দিয়েছি, বহুবার বিদেশে গেছি, একসঙ্গে থেকেছি। কিশোর ছিলো ইত্যাদির প্রায় নিয়মিত সংগীতশিল্পী। কিশোর নেই মনে হলেই ভেতরটা হাহাকার করে উঠে। এন্ড্রু কিশোর ছিলো একজন আদর্শ শিল্পী, একজন মানবিক মানুষ। যার তুলনা সে নিজেই। কিশোর তার গানের মাধ্যমেই বেঁচে থাকবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। বন্ধু যেখানে থাকো ভালো থেকো। শান্তিতে থেকো।’

কিডনি ও হরমোনজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন এন্ড্রু কিশোর। এছাড়া ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন এ শিল্পী। উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০১৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুর যান তিনি। দীর্ঘ নয় মাস পর গত বছরের ১১ জুন দেশে ফেরেন। সর্বশেষ ক‌্যানসারের কাছে হেরে যান এই বরেণ‌্য শিল্পী।

এন্ড্রু কিশোরের কবরের পাশে হানিফ সংকেত

রাজশাহীতে জন্ম এন্ড্রু কিশোরের। সেখানেই কেটেছে দুরন্ত শৈশব ও কৈশোর। রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে সংগীতের প্রাথমিক পাঠ শুরু করেন। এক সময় গানের টানে ছুটে আসেন রাজধানী ঢাকায়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন তিনি।

সংগীত ক্যারিয়ারে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এন্ড্রু কিশোর। তার গাওয়া প্রথম চলচ্চিত্রের গান ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’। ১৯৭৭ সালে গানটি ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়। এর পরে এ শিল্পীকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া অসংখ্য গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— ‘আমার বুকের মধ্যখানে’, ‘তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘বেদের মেয়ে জোছনা আমায় কথা দিয়েছে’ প্রভৃতি।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়