জাস্ট ফ্রেন্ড যখন স্বামী
‘যা রটে তার কিছুটা হলেও ঘটে’—বহুল প্রচলিত এ কথার বাস্তব উদাহরণ কম নয়। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের বেলায় একটু বেশি প্রযোজ্য। বলিউড তারকা দম্পতি সাইফ আলী খান-কারিনা কাপুর, আনুশকা শর্মা-বিরাট কোহলি, রণবীর সিং-দীপিকা পাড়ুকোন, সোনম কাপুর-আনন্দ আহুজা বিয়ের আগে দীর্ঘ দিন চুটিয়ে প্রেম করেছেন। যখনই তাদের সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে তখনই পূর্ব পরিকল্পিত উত্তর—‘আমরা জাস্ট ফ্রেন্ড।’ কিন্তু সময়ের সঙ্গে জাস্ট ফ্রেন্ড হয়ে গেছেন স্বামী-স্ত্রী।
বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি পাশে রেখে যদি দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে চোখ রাখেন তবে সেই চিত্রও আলাদা কিছু নয়। বর্তমানে ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত বিষয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও রাকিবের বিয়ে। এর আগে ভালোবেসে ব্যবসায়ী মাহমুদ পারভেজ অপুকে বিয়ে করেছিলেন মাহি। গত ২২ মে এ অভিনেত্রী জানান, তাদের বিয়েবিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এ নিয়েও নানা নাটকীয়তার অবতার করেন এই প্রাক্তন দম্পতি।
অপুর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের এক মাস না পেরুতেই মাহির দ্বিতীয় বিয়ের গুঞ্জন চাউর হয়। এই গুঞ্জনের সূত্রপাত হয় মাহির একটি ছবিকে কেন্দ্র করে। এরপর তার বিয়ের গুঞ্জনের আগুন উসকে দেয় একটি ভিডিও। তাতে গাজীপুরের তরুণ রাজনীতিক-ব্যবসায়ী রাকিব সরকারের সঙ্গে দেখা যায় মাহিকে। কিন্তু বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন মাহি। তার ভাষায়—‘আমি বিয়ে করিনি, বিয়ের খবরটি ভুয়া। রাকিব আমার জাস্ট ফ্রেন্ড।’ এটি গত জুন মাসের শেষের দিকের ঘটনা।
এরপর মাত্র আড়াই মাস না পেরুতেই মাহি জানালেন, দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন তিনি। আর বর অন্য কেউ নন, তার সেই জাস্ট ফ্রেন্ড রাকিব। এ নিয়ে নেট দুনিয়ায় চলছে সমালোচনার ঝড়। প্রশ্ন উঠেছে, বিয়েবিচ্ছেদ নিয়ে কেন এত লুকোচুরি? যেমনটা অপুর সঙ্গে বিচ্ছেদের সময়ও করেছিলেন মাহি। এক নেটিজেন মন্তব্য করেছেন—‘প্রত্যেকের ব্যক্তিগত জীবন আছে। বিয়েবিচ্ছেদ জীবনেরই একটি অংশ। প্রত্যেক নাগরিকের এই অধিকার রয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে এত মিথ্যাচার কেন? তারকারা কী ভুলে যান তাদেরকে সমাজের মানুষ অনুসরণ করেন! এই মিথ্যাচারের প্র্যাকটিস তারা কেন করছেন? এতে করে তারকাদের প্রতি মানুষের আস্থা-বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে।’
মাহির দ্বিতীয় বিয়ের খবর জানার পর তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তারই প্রাক্তন স্বামী অপু। এও জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে মিডিয়ার কোনো মেয়েকে বিয়ে করবেন না তিনি। অপুর এমন ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন নেটিজেনরা। সুমাইয়া নামে একজন লিখেছেন, ‘মাহিকে কত ভালো জানতাম, আসলে মিডিয়ার কেউ-ই ভালো না।’ ইব্রাহিম লিংকন নামে একজন লিখেছেন—‘বাংলাদেশের চলচিত্র জগৎ বন্ধ করা উচিত। আর তা না হলে এমন সিস্টেম করতে হবে এই রকম চরিত্র খারাপ দেখলে তাকে চিত্র জগত থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া উচিত।’
গওহারুল আহসান লিখেছেন, ‘ওরা মিথ্যে বলে, তাই বিয়ে করে বারবার। ওরা সত্য বলে না, তাই বিয়ে করে বহুবার। শয়তান বলে বজায় রাখিস অনেকবার, ধারাবাহিতা বাদ দিবি না খবরদার!’ কামরুল হাসান খান লিখেছেন, ‘বিয়ে হলো এখনকার সময়ের ফ্যাশন।’ এমন অসংখ্য মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। এ বিষয়ে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট একজন বলেন—‘এ ধরনের ঘটনার কারণে শোবিজ অঙ্গনের মানুষের প্রতি যে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হচ্ছে তা পরিবর্তন করা অনেক কঠিন, যদি না তারকারা ব্যক্তি জীবনে সততার পরিচয় না দেন!’
ঢাকা/শান্ত