যেভাবে সৃষ্টি ‘আমি বাংলায় গান গাই’
বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

কবীর সুমন বলেছিলেন, লোকটা (প্রতুল) নিজেই একটা আস্ত গান
গতকাল পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের সংগীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তার রচিত ও গাওয়া বেশ কিছু গান মানুষের ঠোঁটে ঘুরেফিরে। এর মধ্যে প্রধান ‘আমি বাংলায় গান গাই’। মনের অজান্তে এ গান কণ্ঠে তুললেও, অনেকেই এর জন্মকথা জানেন না। চলুন জেন নিই কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল গানটি।
প্রতুল মুখোপাধ্যায় জীবদ্দশায় গানটি রচনার পেছনের গল্প জানিয়েছিলেন। স্মৃতির ঝাঁপি খুলে এই শিল্পী বলেন, “১৪০০ সালের পয়লা বৈশাখকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। কফি হাউজের একটা অনুষ্ঠানে আমার গাওয়ার কথা ছিল। তো আমি অফিসের কাজ নিয়েই বসেছিলাম। একটা রিপোর্ট লিখতে হচ্ছিল। সেটা করতে করতেই মাথার মধ্যে গানের বিষয়টিও চলছিল। একটা জায়গায় কথাগুলো লিখছিলাম। অনেকটা সেই রামপ্রসাদের মতো আর কী! প্রথম লাইনটা এলো, ‘আমি বাংলায় গান গাই, বাংলার গান গাই।”
নেহরুর লেখা একটি বাক্য গানটি লিখতে প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে ভীষণভাবে সাহায্য করেছিল। এ তথ্য স্মরণ করে এই শিল্পী বলেন, “একটা জিনিস আমায় এই গানটা লিখতে সাহায্য করেছিল। নেহরুর কোনো লেখায় পড়েছিলাম, হি ড্রেমট ইন ইংলিশ। এই কথাটা আমাকে তাড়িত করেছিল। স্পোকের বদলে বলা হচ্ছে ‘ড্রেমট’। ওই একটা সুতো পেলাম, যেটা থেকে জন্ম নেয়, ‘আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন’। সবকিছুই বাংলায় করি, এইভাবেই গানটা এগিয়ে যায়। ওই লাইনটা না পড়লে হয়ত গানটা এভাবে হতো না। লাইনটা এই গানের ক্ষেত্রে, বলতে পারি— বেশ উৎকৃষ্ট সারের কাজ করেছিল।”
গানটি শুনে ভারতীয় রাজনীতিবিদ উদয়ন গুহ প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছিলেন। তা স্মরণ করে এই গায়ক বলেন, “পরে উদয়ন গুহ চিঠি লিখেছিলেন এই গান শুনে। লিখেছিলেন, ‘আপনি আমাদের শিখিয়েছেন বিভক্তির শক্তি। বাংলায় গান গাই, বাংলার গান গাই, বাংলাকে ভালোবাসি– বিভক্তির ক্ষমতা এখানে প্রকাশ পাচ্ছে।’ খুব ভালো লেগেছিল সেই কথা। এই হচ্ছে বাংলায় গান গাই গানের জন্মকথা।”
ঢাকা/শান্ত