মাগুরায় শুরু হলো ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা
শাহীন || রাইজিংবিডি.কম
কাত্যায়নী পূজার প্রতিমা
জেলা প্রতিবেদক
মাগুরা, ৮ নভেম্বর : এবারও দেশের সবচেয়ে জাকজমকপূর্ণ ও সর্ববৃহৎ কাত্যায়নী পূজার আয়োজন করা হয়েছে মাগুরায়। এ পূজাকে সামনে রেখে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে গোটা মাগুরায়।
তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পূজা কমিটি চিন্তিত। ইতোমধ্যে পূজার সব প্রস্তুতি শেষ করেছে পূজা কমিটি। এ বছর শহরের প্রধান ৮টিসহ জেলায় মোট ৫৪ টি ম-পে কাত্যায়নী পূজার ঢাক বাজবে।
শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এ পূজা চলবে ৫ দিন। মঙ্গলবার দশমী পূজার মধ্যদিয়ে শেষ হবে মাগুরাবাসীর এ মহাআয়োজন। তবে পূজার মেলা চলবে এক মাস ধরে। প্রায় শত বছর ধরে মাগুরা এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব এ পূজা।
দুর্গা পূজার ঠিক এক মাস পর একই তিথিতে লাখ লাখ দর্শকের সমাগমে জাকজমকপূর্ণভাবে মাগুরায় কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। নবমীর দিনে বিভিন্ন ম-পে অনুষ্ঠিত হয় জগদ্ধাত্রী পূজা। মাগুরা জেলাতে এ পূজা সাড়ম্বরে উদ্যাপন হয়। শহরজুড়ে আলোকসজ্জা ও লাখো মানুষের উপস্থিতিতে গোটা শহর পরিণত হয় উৎসবের শহরে।
এ জেলায় কাত্যায়নী পূজাই হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। দেশের বিভিন্ন জেলা এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল থেকে বহু দর্শণার্থী মাগুরাতে আসেন পূজা দেখতে। এ উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন স্থানে দৃষ্টি নন্দন লাইটিং, তোরণ, গেট, প্যান্ডেল তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। চোখ জুড়ানো ঝলমলে আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে পূজাম-পসহ আশপাশের এলাকা।
শহরের জামরুলতলা, সাতদোহাপাড়া, নতুন বাজার, দরিমাগুরা, বাটিকাডাঙ্গা, পারনান্দুয়ালী, সাজিয়াড়া, শিবরামপুর পূজা ম-পসহ বিভিন্ন ম-পগুলোকে অপরূপ সাজে সজ্জিত করার জন্য ডেকোরেটরের কর্মীদের কাজ চলছে রাত জেগে।
পূজায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পূজাকে ঘিরে সব ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয় মাগুরায়।
শহরের পারনান্দুয়ালি নিতাই-গৌর গোপাল সেবা আশ্রমের পূজা কমিটির সম্পাদক তরুণ ভৌমিক জানান, রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে এবার অনাড়াম্বরভাবে পূজা উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের কোনো কমতি হবে না।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব কুন্ডু বলেন, মাগুরার ঐতিহ্য কাত্যায়নী পূজা নির্বিঘেœ সম্পন্ন করার জন্য সবার সহযোগিতা চান।
মাগুারা জেলা প্রশাসক মাসুদ আহমদ বলেন, পূজাকে ঘিরে জেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালে নবাব আলী বর্দি খাঁর সময়ে শহরতলীর জামরুলতলার বাসিন্দা সতিষ মাঝি নামের এক ব্যক্তি প্রথম কাত্যায়ণী পূজার প্রচলন করেন। সেই থেকে প্রতিবছর মহাধুমধামে এই পূজা হয়ে আসছে। বড়পুজার পরপরই শুরু হয় ওই পূজা। এটি দুর্গা দেবীর ভিন্ন একটি রূপের পূজা বলে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জানান।
রাইজিংবিডি / শাহীন / আরকে
রাইজিংবিডি.কম