ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ভারতের ওপর আরো শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৬, ১৪ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১৫:২৬, ১৪ আগস্ট ২০২৫
ভারতের ওপর আরো শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

ট্রাম্প-পুতিন আলোচনা ব্যর্থ হলে ভারতের ওপর শুল্ক আরো বাড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। তিনি বলেন, শুক্রবার আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের ফলাফলের ওপর সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপের এই সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে। খবর বিবিসির।

স্থানীয় সময় বুধবার ব্লুমবার্গ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, “আমরা রাশিয়ার তেল কেনার জন্য ভারতের ওপর ইতিমধ্যে অতিরিক্তি শুল্ক আরোপ করেছি। কিন্তু যদি পরিস্থিতি ঠিক না হয়, তাহলে নিষেধাজ্ঞা বা সেকেন্ডারি শুল্ক আরো বাড়তে পারে।”

আরো পড়ুন:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার তেল কেনায় ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে সম্প্রতি একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে। বুধবার ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, মস্কো যদি শান্তি চুক্তিতে রাজি না হয় তাহলে ‘গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।

ইউক্রেনের যুদ্ধ কীভাবে শেষ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে ট্রাম্প এবং পুতিন শুক্রবার আলাস্কায় বৈঠকে বসবেন। 

মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেখা করছেন। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সমাধান কী শর্তে হওয়া উচিত তা নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলো দ্বিধাগ্রস্ত। ইউরোপের মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় যোগ দেওয়া উচিত।”

ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে দিল্লির সস্তা রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের আমদানি বৃদ্ধি ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলেছে এবং ওয়াশিংটনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা ব্যাহত করেছে।

রাশিয়া ভারতের অন্যতম শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার হয়ে উঠেছে। ২০২৪ সালে ভারতের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে; যা ২০২১ সালে ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। 

দিল্লি রাশিয়ার তেল কেনা সমর্থন করে বলেছে, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ভারতের প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের স্বার্থে সাশ্রয়ী তেলের উৎস নিশ্চিত করা।

এর আগে মঙ্গলবার মার্কিন অর্থমন্ত্রী ফক্স বিজনেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাণিজ্য আলোচনায় ভারতকে ‘একটু অবাধ্য’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। আর এবার সেকেন্ডোরি শুল্ক আরো বাড়ানোর হুঁশিয়ারি দিলেন।

ট্রাম্প বলেছেন, বিভিন্ন দেশের ওপর তার প্রশাসনের শুল্ক আরোপ মার্কিন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার এবং বিশ্ব বাণিজ্যকে আরো ন্যায্য করার পরিকল্পনার অংশ।

তিনি বারবার ভারতকে খুব বড় শুল্ক অপব্যবহারকারী হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন এবং এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির সঙ্গে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আগ্রহী।

দিল্লি এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা বেশ কয়েক মাস ধরেই চলছে। মার্কিন আলোচকরা আগামী ২৫ আগস্ট আবারো ভারত সফর করবেন। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যের ওপর শুল্ক কমাতে ভারতের অস্বীকৃতি আলোচনার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভারতের ওপর ট্রাম্পের নতুন ৫০ শতাংশ শুল্ক হার ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে চলেছে। এর ফলে ভারত এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি কর আরোপিত মার্কিন বাণিজ্য অংশীদার হতে যাচ্ছে। ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে ভারতীয় পোশাক ও গহনার মতো রপ্তানি-কেন্দ্রিক  খাতগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা ভারতের প্রবৃদ্ধি অর্ধেক শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারে।

ঢাকা/ফিরোজ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়