ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নাগরিকদের ভোগাবেন না: দুই ম্যাজিস্ট্রেটকে হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫১, ২৯ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নাগরিকদের ভোগাবেন না: দুই ম্যাজিস্ট্রেটকে হাইকোর্ট

দুই ম‌্যাজিস্ট্রেটকে তলব করে বিচারপ্রার্থী নাগরিকদের ভুগান্তিতে না ফেলতে আদালত সাফ জানিয়েছে দিয়েছেন।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ (নকল শাখা) মাসুকাতে রাব্বিকে উদ্দেশ্যে করে আদালত বলেছেন, ‘নিয়মের কথা বলে, আইন দেখিয়ে অযথা নাগরিকদের ভোগান্তিতে ফেলবেন না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কাটিয়ে, একে অপরের প্রতি দোষ না চাপিয়ে নাগরিকের সেবা পাওয়ার অধিকারকে সহজতর করুন।’

দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও ভ্রাম্যমাণ আদালতের আদেশের কপি না দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

এর আগে আদালতের তলবে হাজির হন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ (নকল শাখা) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুকাতে রাব্বি।

শুনানির শুরুতে এজলাসের ডায়াসের সামনে গিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার বলেন, ‘আদেশের কপি দিতে আমাদের কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। আমরা সেই প্রক্রিয়া অনুযায়ী কাজ করেছি। আমাদের কাজে কোন গাফিলতি ছিল না। এরপরেও ভবিষ্যতে আমি এ বিষয়ে সর্তক থাকবো।’

তখন আদালত বলেন, ‘বিচারপ্রার্থী মানুষকে বিভিন্ন দপ্তর না ঘুরিয়ে, আমি দিব না, সে দিবে,এসব কথা না বলে, একজন অন্যজনের কাছে না পাঠিয়ে বিচারপ্রার্থী মানুষকে সহজে সেবা দিন। আপনি যেহেতু সাজা দিয়েছেন, সেক্ষেত্রে আপনার দায়িত্ব বেশি।’

এরপর ডায়াসের সামনে দাঁড়িয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ (নকল শাখা) মাসুকাতে রাব্বিও আদেশের কপি দেওয়ার আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা এ বিষয়ে আরো সতর্ক থাকবো।’

আদালত বলেন, ‘প্রক্রিয়ার কথা বলে, আইন দেখিয়ে অযথা  নাগরিকদের ভোগান্তিতে ফেলবেন না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার দিকে না গিয়ে নাগরিকরা যেন সহজে সেবা পান সেদিকে নজর দিতে হবে। সেবার প্রক্রিয়াকে সহজতর করুন ‘

আদালত আরো বলেন, ‘আপনাদের বোঝানোর জন্য, সমস্যাগুলো জানার জন্যই আমরা ডেকেছি। এর আগে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে আমরা ডেকেছিলাম। তিনি জনবল সংকটের কথা বলেছিলেন। পরে আমরা সমস্যা সমাধানে সরকারকে বলেছি।’

হাইকোর্ট আরো বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা দেওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে যেন আদেশের কপি দেওয়া হয়, সে বিষয়ে আমরা মন্ত্রী পরিষদ বিভাগকে অচিরেই সার্কুলার জারি করতে বলবো ‘পরে আদালত বিষয়টি নিস্পত্তি করে দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এমএমজি সরোয়ার পায়েল, সামিউল আলম। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. আছরারুল হক।

গত বছরের ১৪ নভেম্বর রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রকল্প উপদেষ্টা লিমিটেড নামের একটি কনসাল্টিং, আর্কিটেক্ট ও ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে। ওই দিনই জরিমানার টাকা আদায় করে নেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এরপর এই আদেশের কপি চেয়ে গত বছরের ৪ ও ৫ ডিসেম্বর আবেদন করে প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্টরা। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও আদেশের কপি না পেয়ে তা পেতে হাইকোর্টে রিট করেন তারা।  সেটার প্রেক্ষিতে বুধবার মেজিস্ট্রেটদের এসব কথা বলেন আদালত।


ঢাকা/মেহেদী/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়