রাজধানীতে আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস উদযাপন

নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে রাজধানীতে আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বেইলি রোডে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মশিউর রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, শুধু আলোচনা ও সভা-সিম্পোজিয়াম করে ঘরের মধ্যে বন্দি থেকে দিবস উদযাপন করলে চলবে না। দিবসটিকে শুধু ১১ ডিসেম্বরের জন্য না রেখে একে কেন্দ্র করে ফিজিবিলিটি স্টাডির মাধ্যমে একটি ক্লিয়ার প্রোগ্রাম অনুসরণ করে বছরব্যাপী বড় পরিসরে এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করতে হবে। পাহাড়কে বাঁচানোর জন্য আমাদের কী করণীয়, তা আমাদের দেখতে হবে এবং তার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের নিজেদের বাঁচার তাগিদেই প্রকৃতি সৃষ্ট পর্বত ও পরিবেশকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। আমাদের পরিবেশ রক্ষার জন্য গাইডলাইন আছে। কিন্তু, আমরা হয়ত মানছি না। পর্বত ও এর আশপাশের বিনষ্ট পরিবেশকে কীভাবে রিডিউস করা যায়, সে বিষয়গুলো নিয়ে বেশি বেশি ভাবতে হবে এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে আমাদের।

তিনি বলেন, দিবসগুলো পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো, যে বিষয়গুলোর ওপর দিবস পালিত হয়, সেগুলো সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। এর জন্য ক্রোড়পত্র, বিশেষ সংবাদ প্রচার করা, সভা-সেমিনার-র‌্যালি করা ইত্যাদি মূলত জনসচেতনতার জন্য ও মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য করা হয়। 

মশিউর রহমান বলেন, দেশের পাহাড়-টিলাগুলোকে রক্ষা করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সব নাগরিকেরই পজিটিভ মন-মানসিকতা আছে। দেশের বৃহৎ উন্নয়নের স্বার্থে যদি কিছু অংশে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, তাহলে সে ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে নেওয়া যায়, তা ফিজিবিলিটি স্টাডির মাধ্যমে নির্ধারণ করে সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। তবে, সবকিছুই সবার সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে করা উচিত। 

অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ১১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস পালিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়। আন্তর্জাতিক পর্বত দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘পর্বতের ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধার’। বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় দিবসটি পালনের জন্য বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সংবাদমাধ্যমগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। 

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম। আরও বক্তব্য রাখেন—ইউএনডিপি’র চিফ টেকনিক্যাল স্পেশালিস্ট ড. রাম শর্মা, এফএও’র ন্যাশনাল কনসালট্যান্ট (প্রোগ্রাম) অনিল কুমার দাস, হেলেন কিলারের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর হেন হেন। দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন—খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন চৌধুরী, খাগড়াছড়ি ট্রাইবাল রিফিউজি অ্যাফেয়ার্স টাস্কফোর্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণ চন্দ্র চাকমা, বান্দরবান জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইশরাত পারভীন ইমা।