ঘর রঙিন তো মন রঙিন
ঘরের বিভিন্ন ধরন রয়েছে। যেমন বসার ঘরটা পাবলিক, খাবার ঘরটা হয়ে থাকে সেমি পাবলিক, পড়ার ঘরও তাই। শোবার ঘরটা কিন্তু একেবারেই ব্যক্তিগত।
ইন্টেরিয়র ডিজাইনাররা মনে করেন, পাবলিক বা সেমি পাবলিক রুমগুলো ঝলমলে রঙে রাঙিয়ে তোলা যায়। এতে অ্যানার্জিটিক ভাইভ পাওয়া যায়। ব্যক্তিগত রুমের রঙ হওয়া উচিত মিষ্টি ধরনের। যে রঙ রোমান্টিক আবহ তৈরি করতে পারে শোবার ঘরে এমন রঙ থাকা ভালো। ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে রান্না ঘরের জন্য নিউট্রাল যেকোন রঙ বেছে নিতে পারেন। গোসলের ঘরের একটা বা দুইটা দেয়ালে ‘চিলড কালার’ রাখা হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এতে এক পাশ হবে উজ্জ্বল, আরেকপাশ হবে একটু হালকা। শিশুদের ঘরের রঙের ক্ষেত্রে নিয়মের তোয়াক্কা না করে শিশুদের মতামত প্রাধান্য দিতে পারেন।
সব রঙের আবেদন এক রকম নয়। এক রঙের এক রকম প্রতিফলন। কোন রঙে সাজাবেন ঘর, এই যখন চিন্তা; চলুন রঙের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা যাক। এরপর প্রয়োজন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়ে যাবে।
ড্রয়িং রুমের জন্য বাদামী রং ভাল। কারণ বাদামী রং প্রকৃতির আবহ তৈরি করে। মাটি, গাছ থেকে চকলেট, কফি, কেক- এই সব কিছুতেই এই রঙের প্রাধান্য বেশি। তাই এই রং দেখলেই মন ভালো হওয়ার কারণ আছে একশো-একটা। বাদামী রং করা ড্রয়িং রুমে কাঠের আসবাব রাখলে আরও ভালো লাগে দেখতে।
হলুদ রঙ উজ্জ্বল প্রকৃতির। এই রঙ অনুপ্রেরণা আর ফাগুনের আবহ ধরে রাখে। অন্য রঙের সঙ্গে এর হালকা ও গাঢ় শেড ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। পড়াশোনা বা কাজ করার ঘরে এই রঙ লাগাতে পারেন। এই রঙ মনোযোগ বাড়ায়।
রুমের আকার ছোট হলে সাদা রঙ বেছে নিতে পারেন। এতে ঘরের আয়তন বড় দেখায়। আর জানেন তো, সাদা রং শান্তির প্রতীক। তাই এই রং ব্যবহার করতে আপনার বাড়িতেও শান্তির পরিবেশ বজায় থাকবে। সারাদিনের পরিশ্রমের পর আপনিও নিশ্চয় শান্তির খোঁজ করেন।
কালো রঙ নিয়ে কুসংস্কারের অভাব নেই। কিন্তু বুদ্ধি করে এই রঙ ঘরে ব্যবহার করে অন্য রঙের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়। অনেকে দরজা কিংবা জানলায় কালো রঙ ব্যবহার করে, এতে দেওয়ালের রঙের সঙ্গে একটা সুন্দর সামঞ্জস্য তৈরি হয়ে যায়।
সবুজ একটি সতেজ রঙ। এই রঙ চোখের পক্ষে আরামদায়ক। বেডরুমে এই রঙ ব্যবহার করলে মনে হবে প্রকৃতির কাছেই আছেন। সারাদিনের ক্লান্তি নিমেষে দূর হয়ে যাবে। আবার সকালে ঘুম ভাঙলেও মন ভালো হবে। চোখ আরাম পাবে।
আকাশের ব্যাপ্তি রয়েছে নীল রঙে। নানা শেডও রয়েছে এর রঙের। যেখানে বসে ধ্যান করবেন, তেমন কোনও ঘরে ব্যবহার করতের পারেন নীল রঙ। আবার গাঢ় নীল রঙে রাজকীয় মেজাজ পাবেন।
শোবার ঘরের জন্য চাই একটুখানি স্নিগ্ধতা আর রোমান্টিক আবহ। এর জন্য গোলাপি রঙের থেকে আরও ভালো কী হতে পারে! এটি ভালোবাসার রঙ।
আছে বিকল্প: দেয়ালে রঙের বদলে একটা সিমেন্টের আস্তর, লাল ইটের খোলা রূপ, প্যাস্টেল শেডের ওপর হাতের কাজ এগুলো ব্যবহার করে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাচ্ছেন। আধুনিক সজ্জার এই ধরনে অনেকে ঘরের কোনো একটা কোণে পেইন্টিং করেন। নিজের মনের মতো কিছুর প্রতিফলন রাখেন সেখানে।
ঘর ছোট হলে হালকা রঙ করা ভালো। আবার কম আলোর ঘরের জন্যও হালকা রঙই আদর্শ রঙ। সিলিংয়ে যে রঙ থাকবে তার তুলনায় দেয়ালের রং হালকা না হলে ঘর উজ্জ্বল দেখাবে না। ঘরে আলাদা মেজাজ যুক্ত করতে চাইলে হালকা রঙের দেয়ালের এক পাশে লাগিয়ে নিতে পারেন ওয়ালপেপার।
/স্বরলিপি/
আরো পড়ুন