ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

শপিং সেন্টারে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার’

জবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শপিং সেন্টারে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার’

রাজধানীর সদরঘাটে গ্রেটওয়াল শপিং সেন্টারে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার’ চালু করা হয়েছে। এ মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বেসরকারি প্রকাশনা সংস্থা পুঁথিনিলয়।

গ্রেটওয়াল শপিং সেন্টারের ১৪ তলার পুরোটাতেই পুঁথিনিলয়ের কার্যালয়। এর সামনেই বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, হাজার স্কয়ার ফিটের ঘরের মাঝখানে গাদা ফুলের পাপড়ি দিয়ে আলপনা আঁকা। ঝলমলে আলোয় আলোকিত চার দেয়ালের ভেতরে প্রায় দেড়শ ছবি দিয়ে সাজানো ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার’।

বেসরকারি কোনো প্রকাশনা সংস্থা এই প্রথম নিজেদের টাকা খরচ করে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার’ করে গভীর ভালোবাসার নিদর্শন দেখিয়েছে।

সেখানে ছবিগুলো এমনভাবে সাজানো, যে কেউ ঘরের চারদিকে একটু ভালোভাবে চোখ ফেরালেই জানতে পারবেন ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের বিশুদ্ধ ইতিহাস। এসবের মধ‌্যে বেশকিছু ছবি আছে, যেগুলো হাতে আঁকা।

কর্নারের বাম পাশে প্রথমেই ভাষা আন্দোলনে শহীদদের ছবি। এসব ছবির কয়েকটি  হাতে আঁকা। তারপরে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, এ কে ফজলুল হক, মওলানা ভাসানীর ছবি রয়েছে। এর পরেই সেক্টর কমান্ডারদের ছবি। তবে এই সারিতে জিয়াউর রহমানের ছবি স্থান পায়নি। তারপরে বঙ্গবন্ধুর ছাত্র ও যুবক বয়সের ছবি রয়েছে। প্রভাতফেরিতে ও মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ছবি রয়েছে। পল্লীকবি জসীমউদদীনের কাঁধে হাত রেখে বসে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবিও এখানে স্থান পেয়েছে। এরপরেই বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু। রয়েছে বঙ্গবন্ধুর পুরো পরিবারের ছবি। সাত বীরশ্রেষ্ঠর ছবিও রয়েছে। রয়েছে মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের ছবি। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশত্যাগী শরণার্থীদের ছবিও রাখা হয়েছে এই কর্নারে। আছে শিল্পী-সাহিত্যিকের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ ছবি ও মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশেকে সমর্থন দেয়া বিদেশি বন্ধুদের ছবি। ছবিগুলোর নিচে সুন্দর ক্যাপশন।

এমন উদ্যোগ নেয়ার কারণ হিসেবে পুঁথিনিলয়ের স্বত্বাধিকারী ড. শ্যামল পাল বলেন, যখন ছাত্র ছিলাম, তখন দেশের জন্য তেমন কিছুই করতে পারিনি। যখন আমরা বেড়ে উঠেছিলাম তখন ইতিহাস ছিল বিকৃত। নতুন প্রজন্ম যেন এসব বিকৃত ইতিহাসের পরিবর্তে বিশুদ্ধ ইতিহাস জেনে বেড়ে ওঠে, তাই এ উদ্যোগ নিয়েছি। এখানে একসঙ্গে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ছবি অনেক বইয়ের চেয়েও বেশি কথা বলবে। অনেকে বই পড়েও বহু বিষয় মনে রাখতে পারেন না। কিন্তু ছবি দেখে অনেকের স্মৃতিই তরতাজা হয়ে উঠবে। ছবি দেখে সহজেই জানা যাবে মুক্তিযুদ্ধে কার কী অবদান। নতুন প্রজন্মকে সেই অবদান জানানোর জন্যই এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি আমি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনের সব ছবির পটভূমি জানলে বাংলাদেশের পরিপূর্ণ ইতিহাস জানা যায়। স্বাধীনতাবিরোধীরা জাতির পিতার স্মৃতিকে জনগণের হৃদয় থেকে চিরতরে মুছে ফেলতে অনেক অপপ্রচার চালিয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন ও তার দুর্লভ ছবিগুলোর মাধ্যমে তিনি জনগণের মাঝে জীবন্ত হয়ে থাকবেন চিরকাল।

বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান ড. শ্যামল পাল।

তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি, বাংলাদেশের প্রতিটি স্কুল ও কলেজে এমন কর্নার করা হোক। এমন কর্নার করা হলে দেশের নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বড় হবে। এটা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে যেহেতু আমার কাছে এসব আছে, খুব কম খরচে এটা দিতে পারব।

পুঁথিনিলয়ের ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার’টি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকে।

 

জবি/তমাল/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়