বিনোদনপ্রেমীদের মিলন মেলা রুপসা সেতু
সেখ ইউসুফ আলী || রাইজিংবিডি.কম
রুপসা সেতুর নিচে দর্শনার্থীদের ভিড়
সেখ ইউসুফ আলী, খুলনা : নগর জীবনের শত ব্যস্ততা ও কোলাহল ছেড়ে মুক্ত পরিবেশে ঈদ ও পূজার আনন্দ উপভোগ করতে খুলনার খানজাহান আলী সেতুতে (রূপসা সেতু) ভিড় করছেন বিনোদনপ্রেমীরা।
ঈদের আনুষ্ঠানিকতা শেষে যান্ত্রিক জীবনকে পাশ কাটিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই এখানে পরিবার-পরিজন নিয়ে আসছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। হেসে-খেলে মাতিয়ে তুলছেন রূপসা নদীর বুকে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটিকে। সেতুর দুপাড়ে দর্শণার্থীদের পদচারণা দেখলে মনে হবে, যেন মিলন মেলা বসেছে।
এ সেতুটির নাম খানজাহান আলী সেতু হলেও স্থানীয়ভাবে রূপসা সেতু হিসেবেই সবার কাছে পরিচিত। কারণ সেতুটি রুপসা নদীর ওপর অবস্থিত। সেতুটির মাঝে দাঁড়ালেই মনে হবে কোনো শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবি কিংবা উন্নত বিশ্বের কোনো সেতু।
খুলনা শহর থেকে রূপসা সেতুর দূরত্ব ৪.৮০ কি.মি। এই সেতুকে খুলনা শহরের প্রবেশদ্বার বলা যায়। কারণ, এই সেতু খুলনার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর বিশেষত মংলা সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে। সেতুটিতে পথচারী ও অযান্ত্রিক যানবাহনের জন্য বিশেষ লেন রয়েছে।
বর্তমানে এটি খুলনার একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। রাতে সেতুর ওপর থেকে খুলনা শহরকে অপূর্ব সুন্দর মনে হয়। উৎসবের দিনগুলোতে এই সেতুতে তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সীরা ভিড় করেন ও আনন্দ করেন।
কোনো বিশেষ দিন ছাড়াও প্রতিদিন অসংখ্যক দর্শণার্থী সেতুটি পরিদর্শন করতে আসেন।
সেতুতে আগত বিনোদনপ্রেমীদের রসনা মেটাতে আশপাশেই গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ফাস্টফুড ও খাবারের দোকান। ইতিমধ্যে ব্রিজকে ঘিরে নগরীর জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে রূপসার কুদির বটতলা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে বেশ কয়েকটি পাটের মিল, মাছ পক্রিয়াকরণ কোম্পানি, সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এবং ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। এখানে রয়েছে খুলনা শিপইয়ার্ড ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ভূতের আড্ডা নামের একটি পার্ক এবং র্যাব-৬ এর হেডকোয়ার্টার।
আগত দর্শণার্থীরা জানান, ক্লান্ত জীবনকে একটু বিশ্রাম দিতে ঈদের পরদিনই তারা এখানে এসেছেন।
রূপসা সেতুর নিচে খোশগল্পরত অবস্থায় কথা হয় বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা নুরুজ্জামান ও আরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তারা বলেন, সারা বছর ব্যস্ততায় দম ফেলার সময় পাওয়া যায় না। এছাড়া অনেকদিন এদিকে আসা হয় না, দেখা হয় না নদী। এবার ঈদে তাই এসেছি, ভালো লাগছে।
আবু মুন্না ও নুরুজ্জামান নামের দুই বন্ধু বলেন, খুলনা মহানগরীর অধিকাংশ পার্ক শিশু-কিশোরসহ নগরবাসীর বিনোদনের বিপরীতে গো-চারণ, মাদকসেবন, বখাদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। আবার দু-একটি পার্ক ব্যবহার উপযোগী থাকলেও তাতে দেখার মতো কিছু নেই। তার চেয়ে নদী ও সেতু অনেক ভালো। যে কারণে তারা এখানে এসেছেন। এখানে এসে তাদের ভালো লাগছে।
রাইজিংবিডি/খুলনা/৭ অক্টোবর ২০১৪/সেখ ইউসুফ আলী/শামসুল
রাইজিংবিডি.কম