ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘আমার ছেলেকে বাঁচান’

মেসবাহ য়াযাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪৫, ১৬ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১৩:৪০, ৩০ মার্চ ২০২১
‘আমার ছেলেকে বাঁচান’

নাজির নামের আট বছরের ফুটফুটে এক শিশু। যার জন্মের আগেই তাকে ছেড়ে চলে যায় তার বাবা। জন্মের পর থেকে কোনোদিন বাবার আদর-ভালোবাসা পায়নি। একবারের জন্যও দেখেনি বাবাকে। 

মা নাজমা বেগম অনেক কষ্ট করে আস্তে আস্তে লালন করছেন একমাত্র ছেলেকে।  হঠাৎ করে সেই ছেলের মাথার সামনে দেখা দিয়েছে টিউমার।

ফরিদপুরের আটরশি হুজুরের বাড়িতে থাকেন নাজির আর তার মা।  এটা নাজিরের মামার বাড়ি।  স্বামী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ছেলেকে আগলে ভাইদের আশ্রয়ে আছেন নাজমা বেগম।  নিজে কিছু কাজ করেন।  নিজের সংসার মনে করে ভাইদের সংসারেও বিভিন্ন কাজে সাহায্য করেন। ভাইদের স্নেহ-মমতায় ভালোই ছিলেন মা আর ছেলে।

এক বছর আগে থেকে সমস্যা দেখা দেয় ছেলের।  মাথার সামনের দিকে একটা টিউমারের মতো দেখা যায়।  স্থানীয়ভাবে কয়েকজন ডাক্তার দেখান। ডাক্তাররা বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতে বলেন।  ওষুধ খেতে বলেন।  ওষুধ খেয়েও তেমন কোনো কাজ হয় না।  কমে না মাথার টিউমার।  চিন্তায় পড়েন নাজমা।  যত দিন যায় টিউমারের টেনশনে বাড়ে বিষণ্নতা।

ভাইদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা চান নাজমা।  সাধ্যমতো দেনও তারা।  পাড়াপড়শিরাও এগিয়ে আসেন। সবার সহযোগিতা, নিজের জমানো টাকা আর ছেলেকে নিয়ে চলে আসেন ঢাকায়।  ওঠেন রামপুরার ওয়াপদা রোডে এক বোনের বাসায়। এক মাস ধরে ঢাকা মেডিক্যাল, আগারগাঁও নিউরো সায়েন্সসহ আরও দু-একটি হাসপাতালে ডাক্তার দেখান। ভর্তিও করান একটা হাসপাতালে। 

কিন্তু কোনো চিকিৎসায় কাজ হচ্ছে না।  টিউমার তিন-চার মাসে বেড়ে প্রায় মাথার সমান হয়ে গেছে।  টিউমারটির পেছনের দিকে চুলও রয়েছে।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন মানুষের দেওয়া এবং তার জমানো টাকাসহ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ছেলের চিকিৎসায় খরচ করেছেন।  রাইজিংবিডিকে নাজিরের মা নাজমা বেগম বলেন, ইদানীং টিউমার বড় হয়ে চোখের নিচে পর্যন্ত ঝুলে গেছে। টিউমারের ভারে ছেলে এখন বাম চোখে একদম দেখতে পায় না।  ডান চোখে সামান্য দেখতে পায়। 

কাঁদতে কাঁতে তিনি জানান, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ঢাকায় বোনের বাসায় থেকে সোমবার (১৫ মার্চ) তিনি ছেলেকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরে যান।

গ্রামে গিয়ে ছেলের এবং নিজের পাসপোর্টের জন্য মঙ্গলবার  (১৬ মার্চ) কাগজপত্র জমা দিয়েছেন বলে নাজমা বেগম ফোনে জানান। পাসপোর্ট হয়ে গেলে তিনি ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় যাবেন চিকিৎসা করাতে। 

রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন, ‘আপনারা আমার ছেলেকে বাঁচান।’

নাজমা বেগম তার একমাত্র ছেলে নাজিরের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে দেশের সামর্থবানদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। নাজিরের চিকিৎসার জন্য সাহায্য করতে পারেন ০১৭৩৪৪৬৭৩০৫ (বিকাশ) নম্বরে।

মেসবাহ/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়