ঢাকা     মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

স্বাগত ১৪২৯: এসো হে বৈশাখ, এসো এসো

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ১৩ এপ্রিল ২০২২   আপডেট: ১০:০৯, ১৪ এপ্রিল ২০২২
স্বাগত ১৪২৯: এসো হে বৈশাখ, এসো এসো

ফাইল ছবি

প্রকৃতি বিভিন্ন ঋতুতে নানা রঙে ও বৈচিত্র্যে রূপ পরিবর্তনের মাধ্যমে সকলের মনে আবেগের সঞ্চার করে। প্রকৃতির এ রূপ বদল মানুষকে জানিয়ে দেয় পরিবর্তনই জীবনের চলার পথের একমাত্র সত্য। মরণশীল মানুষ এই বহুরূপী প্রকৃতিতে খুঁজে পায় আনন্দ, জন্ম নেয় উৎসব-পার্বণ। এই আনন্দযজ্ঞে মানুষের দৈনন্দিন জীবন খুঁজে পায় আবেগ, বৈচিত্র্য ও নবজীবনের সঞ্জীবনী সুধার খোঁজ। ঋতু চক্রের আবর্তনে আবার এসেছে নতুন একটি বাংলা বছর-১৪২৯।

নববর্ষ উদযাপন পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের সার্বজনীন উৎসবে। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সামিল হয় উৎসবে।

আজ বৃহস্পতিবার, ১৪২৯ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন। পহেলা বৈশাখ। বর্ষবরণ নয় শুধু, বাঙালির অভূতপূর্ব সাংস্কৃতিক জাগরণের উৎসব। মহোৎসবে যোগ দেবে সারাদেশ। তপোবহ্নির শিখা জ্বালো জ্বালো/নির্বাণহীন নির্মল আলো...। অফুরান এই আলোয় আজ উদ্ভাসিত হবে বাংলাদেশ।

বছরের প্রথম দিনে আজ নতুন নতুন স্বপ্ন বুনবে বাংলার কৃষক। হালখাতা খুলবে ব্যবসায়ীরা। সরকারি ছুটির দিনে রাজধানীসহ সারাদেশে একযোগে চলবে লোকজ ঐতিহ্যের নানা উৎসব অনুষ্ঠান। বাংলা নববর্ষের এই সূচনালগ্নে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নববর্ষ উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটির দিন। জাতীয় সংবাদপত্রগুলো বাংলা নববর্ষের বিশেষ দিক তুলে ধরে ক্রোড়পত্র বের করেছে। সরকারি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলে নববর্ষকে ঘিরে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠান:
করোনার কারণে দুই বছর ওরকমভাবে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়নি। এবার আবার নতুনভাবে উদযাপন করা হবে নতুন বছরকে।

পহেলা বৈশাখের ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আয়োজনে মেতে ওঠে সারাদেশ। বর্ষবরণের এ উৎসব আমেজে মুখরিত থাকবে বাংলার চারদিক। গ্রীষ্মের খরতাপ উপেক্ষা করে বাঙালি মিলিত হবে তার সর্বজনীন এই অসাম্প্রদায়িক উৎসবে। দেশের পথে-ঘাটে, মাঠে-মেলায়, অনুষ্ঠানে থাকবে কোটি মানুষের প্রাণের চাঞ্চল্য, আর উৎসব মুখরতার বিহ্বলতা।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, বাংলা একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদফর, জাতীয় জাদুঘর, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, কপিরাইট অফিস, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র ও বিসিক নববর্ষ মেলা, আলোচনাসভা, প্রদর্শনী, কুইজ, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।

বাংলা নববর্ষের দিন সব কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা) উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার পরিবেশন করা হবে। শিশু পরিবারের শিশুদের নিয়ে ও কারাবন্দিদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং কয়েদিদের তৈরি বিভিন্ন দ্রব্যাদি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সব জাদুঘর ও প্রত্নস্থান সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা এবং শিশু-কিশোর, ছাত্র-ছাত্রী, প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের বিনা টিকিটে প্রবেশ করতে পারবে।

বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অভিজাত হোটেল ও ক্লাব বিশেষ অনুষ্ঠানমালা ও ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের আয়োজন করবে।

বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ ১৪২৯ উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। পহেলা বৈশাখ সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদ থেকে বের করা হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা।

এবারও পহেলা বৈশাখ ভোর বেলায় মানুষেরে স্রোত নামবে রমনা বটমূলে। এবারও শতাধিক শিল্পী মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন। গানে গানে সুরে সুরে প্রতিধ্বনিত হবে মানুষের অধিকারের কথা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কথা, বিবেক জাগ্রত হওয়ার আহ্বান।

বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা:
বর্ষবরণ উৎসবের আরেকটি প্রধানতম আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রা। বহু বছর ধরে বর্ণাঢ্য এই উৎসবের আয়োজন করে আসছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। আজ পহেলা বৈশাখ সকাল ৯টার পর বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। চারুকলা থেকে বের হয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল চত্বর ঘুরে আবার চারুকলার সামনে এসে শেষ হবে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।

ঢাকা/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়