ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

দুবাই থেকে আমদানি হচ্ছে ৫০ হাজার টন গম

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০২, ৭ নভেম্বর ২০২৩  
দুবাই থেকে আমদানি হচ্ছে ৫০ হাজার টন গম

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুবাই থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। প্রতি মেট্রিক টন ২৯৪ দশমিক ৯৫ ডলার (শুল্ক ও ভ্যাট ছাড়া) দরে এ গম আমদানিতে ব্যয় হবে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৬২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

আগামী বুধবার অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানা গেছে। দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স গ্রেইন-ফ্লাওয়ার ডিএমসিসিকে গম সরবরাহের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সরকারি পর্যায়ে গমের মজুতের পরিমাণ হচ্ছে এক লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন। এর বাইরে চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে গমের চাহিদা সরকারি পর্যায়ে ৯ লাখ ২২ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এখন পর্যন্ত কোনো গম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর বিপরীতে রাশিয়া থেকে জি-টু-জি চুক্তির আওতায় ৩ লাখ মেট্রিক টন আমদানি করা হবে।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এক লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। এর মধ্যে ৪৬ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় প্যাকেজ-৪-এর আওতায় দুবাই থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, বেসরকারি খাতে ইতোমধ্যে ১২ লাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গম আমদানির দরপত্রে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। দরপত্রে অংশ নেওয়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে-সিঙ্গাপুরের মেসার্স এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল (প্রস্তাবিত দর প্রতি মেট্রিক টন ২৯৮ দশমিক ৩৮ ডলার); সংযুক্ত আরব আমিরাত-এর আবুধাবি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রিল্যায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড (প্রস্তাবিত দর প্রতি মেট্রিক টন ২৯৯ দশমিক ৭৯ ডলার); দুবাই ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমসি ফুড ডিএমসিসি (প্রস্তাবিত দর প্রতিত মেট্রিক টন ৩০৯ দশমিক ৯৫ ডলার) এবং দুবাই ভিত্তিক মেসার্স সিরিয়াল ক্রপস ট্রেডিং এলএলসি (প্রস্তাবিত দর প্রতি মেট্রিক টন ৩১৮ ডলার)। দরপত্রে অংশ নেওয়া পাঁচটি প্রতিষ্ঠানই রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে মেসার্স গ্রেইন-ফ্লাওয়ার ডিএমসিসিকে মনোনীত করা হয়েছে।

গম আমদানির প্রস্তাবে ৮টি উৎস (রাশিয়া, রোমানিয়া, ব্ল্যাক সি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও আমেরিকা) দেশের গমের বর্তমান বাজার দর পর্যালোচনা করে বলা হয়েছে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি মেট্রিক টন গমের গড় মূল্য হচ্ছে ৩৩৭ দশমিক ৫৩ ডলার। রাশিয়া (প্রতি মেট্রিক টন গমের দর ২৯০ দশমিক ০২ ডলার) ও রোমানিয়া (২৮২ দশমিক ০৮ ডলার) ছাড়া গম রফতানিকারক প্রায় সব দেশের বাজার দর প্রাপ্ত সর্বনিম্ন দরের তুলনায় বেশি।

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট, কৃষ্ণসাগর দিয়ে বহুল আলোচিত শস্য চুক্তি গত ১৭ জুলাইয়ের পর নবায়ন না হওয়ায় এবং রাশিয়া ও রোমানিয়া ছাড়া অন্যান্য দেশের গমের বর্তমান বাজার দর বিবেচনায় দরপত্রে অংশ নেওয়া সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত দর আন্তর্জাতিক বাজার দরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

/হাসনাত/এসবি/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়