ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

সোনাগাজীতে হবে ১০০ মেগাওয়াটের সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ২৭ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ০৯:১০, ২৭ নভেম্বর ২০২৩
সোনাগাজীতে হবে ১০০ মেগাওয়াটের সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র

ফাইল ফটো

ব্যয়বহুল এলএনজি ব্যবহার কমানোর পাশপাশি বিদ্যুৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় বেসরকারি খাতে ১০০ মেগাওয়াট (এসি) সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। 

বেসরকারিখাতে  বিল্ড-ওন-অপারেট (বি-ও-ও) এবং ‘নো ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করবে একটি চীনা কনসোর্টিয়াম।

বেইজিং এনার্জি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড-বিজেডএইচই-ইএনএএম-এমএনএস। স্থাপিতব্য এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা ১১.০০৫৮ টাকা (দশমিক ০৯৯৬ ডলার) হিসাবে ২০ বছর এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ে ব্যয় হবে তিন হাজার ৫৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সার্বজনীন বিদ্যুৎ সেবা প্রদান এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন ও প্রসারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনাময় উৎস সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করছে সরকার। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি দেশব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো; মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা-২০০৮ বাস্তবায়নে সহায়তা করা; জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানো এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাসকরণ- এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য।

সূত্র জানায়, প্রাথমিক প্রস্তাব অনুযায়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ফেনীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে স্থাপন করার কথা ছিল; কিন্তু প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান করতে না পারায় ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ৬ নম্বর চরকান্দিয়া ইউনিয়নের পূর্ব বড়ধলী মৌজায় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সংশোধিত প্রস্তাব করে কনসোর্টিয়াম। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে উদ্যোক্তারা নিজ ব্যবস্থাপনায় প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমি সংগ্রহ, বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ ও সাব-স্টেশন নির্মাণসহ সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, পিডিবি’র ভূমি/সাইট পরিদর্শন কমিটি প্রকল্পের স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করেছে এবং কারিগরি কমিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে ইতিবাচক সম্মতি দিয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় উৎপাদিতব্য বিদ্যুৎ ইভাকুয়েশনের বিষয়ে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)-এর মতামত নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিতব্য বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার ১৩২ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করে বারইয়ারহাট ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপ কেন্দ্রের ১৩২ কেভি ইভাকুয়েট করা যেতে পারে বলে পিজিসিবি মতামত দিয়েছে। চুক্তি সম্পাদনের পর প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ধরা হয়েছে দুই বছর।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নবায়নযোগ্য সৌরশক্তি ব্যবহার করে জাতীয় গ্রিডে অতিরিক্ত ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সংযুক্ত করা সম্ভব হবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানোর মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করা এবং প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। যার ফলে গ্রাহক পর্যায়ে মানসম্মত নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ ও সেবার গুণগত মান বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় একটি রাজস্ব সাশ্রয়ী, দক্ষ, সর্বনিম্ন ব্যয়ের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং দক্ষ ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সবার জন্য নির্ভরযোগ্য, আধুনিক ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়