ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরো গভীর বাণিজ্য সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৯:৩৯, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরো গভীর বাণিজ্য সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ও উন্নয়ন সহযোগিতা আরো গভীর করার জন্য বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টা ইউএসটিআরের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে বলেন, “সমর্থনের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। যা ঘটেছে তাতে আমরা খুব খুশি।” অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এটি আমাদের অর্থনীতির মূল চাবিকাঠি।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি রপ্তানির পারস্পরিক শুল্কের হার ৩৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনাকে তিনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

সাক্ষাৎকালে উভয়পক্ষ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা হ্রাসের কৌশল এবং তুলা ও সয়াবিনের মতো মার্কিন কৃষিপণ্যের আমদানি সম্প্রসারণে বাংলাদেশের অভিপ্রায় নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলপিজি আমদানি, বেসামরিক বিমান ক্রয়, মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকটসহ জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ও স্থান পায়।

প্রফেসর ইউনূস উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত এবং আশা প্রকাশ করেন যে এটি আরো শুল্ক হ্রাসের পথ প্রশস্ত করবে এবং আরো টেকসই ও পারস্পরিক সুবিধাজনক বাণিজ্য অংশীদারত্বে অবদান রাখবে।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ধারাবাহিক অগ্রগতির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বর্তমানে আলোচনাধীন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির খসড়া দ্রুত সইয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, “আমাদের স্বার্থ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের কাছাকাছি। এটি এই প্রক্রিয়াটিকে আরো সহজ এবং আরো আশাব্যঞ্জক করে তোলে।”

প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ১১ দফা শ্রম কর্ম পরিকল্পনার বিষয়ে বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন এবং আন্তর্জাতিক শ্রম মান ও ন্যায্য অনুশীলন বজায় রাখার জন্য সরকারের কাজের ওপর জোর দেন।

ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ ও রেয়াতি ঋণের প্রবাহ বৃদ্ধি প্রত্যাশা করে।”

অন্তর্বর্তী সরকার দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করবে বলে সফররত ইউএসটিআর দলকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, “আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে ব্যাংকে মার্কিন বিনিয়োগের দরজা আরো প্রশস্ত হবে।”

ব্রেন্ডন লিঞ্চ বাণিজ্য সংলাপের সময় বাংলাদেশের প্রতিপক্ষের গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেন এবং দুই দেশের মধ্যে অংশীদারত্ব জোরদারকে স্বাগত জানান।

গত ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার তার সঙ্গে বৈঠক এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একতরফা বাণিজ্য ব্যবধান কমানোর প্রস্তাব দেওয়ার পর বাংলাদেশ এই প্রক্রিয়া শুরু করায় প্রশংসা করেন তিনি।

ব্রেন্ডন লিঞ্চ উল্লেখ করেন, এই প্রাথমিক শুরুটি মসৃণ আলোচনা এবং প্রক্রিয়ার ফলাফলের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন,“আপনি একটি কঠোর আলোচনাকারী দল পাঠিয়েছেন, যারা খুব কার্যকরভাবে কাজ করেছেন।”

তিনি শুল্কচুক্তি এবং ক্রয়ের প্রতিশ্রুতি সময়মতো বাস্তবায়নের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

বৈঠকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, ইউএসটিআরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক এমিলি অ্যাশবি, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মুর্শেদ, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: বাসস

ঢাকা/সাইফ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়