ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

আ. লীগ উপ-কমিটির সহ সম্পাদক তালিকা চূড়ান্ত

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০০, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আ. লীগ উপ-কমিটির সহ সম্পাদক তালিকা চূড়ান্ত

নৃপেন রায় : আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের উপ-কমিটির সহ সম্পাদক এবং সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পদ প্রত্যাশীদের আশা পূরণ হচ্ছে। সহ সম্পাদক তালিকায় অন্তর্ভুক্তদের সাংগঠনিক দায়িত্ব বণ্টন করে চিঠি পাঠানো শুরু হয়েছে। দুই একদিনে সকল সহ সম্পাদকরাই চিঠি হাতে পাবেন। আর ১৯টি বিষয়ভিত্তিক সম্পাদকীয় কমিটির ‘সদস্য’দের তালিকা বেশিরভাগই চূড়ান্ত করে সংশ্লিষ্ট সদস্য সচিবদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিভাগে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতার সঙ্গে তিন জন সহ সম্পাদকের নামের চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপের কাছে ক্ষুদে বার্তা পাঠালে তিনি জবাব দেন, ‘নট ফাইনাল ইট।' তবে যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং ওই কমিটির সদস্য সচিব হারুনুর রশীদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমারটা ফাইনাল করা হয়েছিল কিন্তু কিছু ভুল আছে। আমাকে কারেকশন করার কথা বলা হয়েছে। এজন্য ফাইনাল হয় নাই।’

আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এবং দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অ্যাম্বাসেডর মোহাম্মদ জমির বলেন, ‘আমি এই কমিটির চেয়ারম্যান হলেও আমার কমিটির সদস্য সচিব ও আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শাম্মী আহম্মেদকে জিজ্ঞাসা করবেন।’ এ ব্যাপারে ড. শাম্মী আহম্মেদের মুঠোফানে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ের দপ্তর রুমে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দপ্তর সম্পাদক গোলাপকে উপ কমিটির সহ সম্পাদক এবং বিষয়ভিত্তিক সম্পাদকীয় পদে সদস্যদের তালিকা দ্রুত সংশ্লিষ্ট সদস্য সচিবদের কাছে পাঠানোর নির্দেশনা দেন। এরপর সেদিনই দপ্তর সম্পাদক গোলাপ দপ্তর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহ-সম্পাদকদের সাংগঠনিক দায়িত্ব বন্টনের তালিকা প্রদান করেন। দপ্তর সম্পাদক মঙ্গলবার সহ-সম্পাদকদের সাংগঠনিক দায়িত্ব বন্টনের নামে চিঠি ইস্যু শুরু করেন।

ইতোমধ্যে অনেকের হাতে চিঠি পৌঁছে গেছে। আর বিষয়ভিত্তিক সম্পাদকের তালিকা কমিটির সদস্য সচিব বরাবর পাঠানোর উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া নেতাদের অভিনন্দন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন শুভাকাঙ্খীরা।

এদিকে উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকদের অর্ন্তভুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পদ প্রত্যাশীরা দলীয় সভাপতির কার্যালয়ে ভিড় করতে শুরু করেছেন। আবার যারা বিশ্বস্ত মাধ্যমে নিজের পদ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন তারা চিঠির অপেক্ষায় রয়েছেন। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে দপ্তর রুমের বাইরে অপেক্ষমান পদ প্রত্যাশীদের তিনি বলেন, ‘তোমরা সবাই আছো, কেউ বাদ যাওনি।’

সূত্র আরো জানায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক পদে কিছু বিতর্কিত নেতা-কর্মীর নাম রয়েছে। যাদের কেউ শিক্ষাজীবনে বা অতীতে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। কেবল কেন্দ্রীয় নেতাদের সুপারিশে আওয়ামী লীগের মতো দলের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। আবার এমনও দুই-একজন আছেন যারা অতীতে ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করেছেন। সহ-সম্পাদকের তালিকায় তাদেরও নাম আছে। আবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অতীতে কোনো পদেই ছিলেন না, এমন দুয়েকজনও সহ-সম্পাদকের তালিকায় স্থান পেয়েছেন।

সূত্র আরো জানায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এক সভাপতি দপ্তর উপ-কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন কিন্তু সেই নেতার মেয়াদকালে যারা বিভিন্ন ইউনিটের পদধারী নেতা না হয়ে কর্মী ছিলেন এমন কয়েকজন সহ-সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি। আবার দায়িত্বশীল অন্যান্য নেতাও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন হয়। ওই বছরের নভেম্বরে কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক পদের জন্য জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান করা হয়। সে সময় দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহের জন্য ছাত্রলীগের প্রাক্তন দপ্তর সম্পাদক নাসিম আল মোমিন রুপক ও সভাপতির কার্যালয়ের স্টাফ সাঈদ আহমেদকে দায়িত্ব দেন।

প্রঙ্গত, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রত্যেকটি বিভাগভিত্তিক সম্পাদকীয় পদের সহযোগী হিসেবে পাঁচজন করে সহ-সম্পাদক থাকার নিয়ম আছে। তবে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদগুলো বিভাগভিত্তিক নয়। তাই এ পদগুলোর বিপরীতে কোনো সহ-সম্পাদক থাকবে না। যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদ বাদ দিলে ১৯টি বিষয়ভিত্তিক সম্পাদকীয় পদ রয়েছে। এক্ষেত্রে একটি সম্পাদকীয় পদের সহযোগী পাঁচজন করে হলে মোট ৯৫ জন সহসম্পাদক থাকার কথা। কিন্তু গত কমিটিতে গঠনতন্ত্রের নিয়ম ভঙ্গ করে প্রায় ১০০ সহ-সম্পাদক পদের বিপরীতে দায়িত্ব পেয়েছিলেন কয়েক শত নেতা। এব্যাপারে ২০১৭ সালে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতিম-লীর সদস্য বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘পার্টি অফিসের সামনে যার সঙ্গে ধাক্কা লাগে তিনিই বলেন, আমি আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক। কিন্তু তারা যে উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এটা বলেন না। এই সহ-সম্পাদকের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে অনেকে নিজ জেলায় অনেক হুমকি-ধামকিও মারে। তাই আগামী সম্মেলনে সহ-সম্পাদকের সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে।’

২০তম সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়ে গত ২৬ অক্টোবর ধানমন্ডিতে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকম-লীর বৈঠক শেষে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘আমরা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দলের গঠনতন্ত্রে কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকের সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০০ করার যে বিধান রয়েছে, আমরা তার বাইরে যাব না। এই কমিটির সদস্য সংখ্যা একশ’র মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।’

দলের গঠনতন্ত্রের ২৫(ক) উপ-ধারায় বলা আছে ‘সভাপতি বিভাগীয় (সম্পাদকীয় বিভাগ) উপ-কমিটিসমূহ গঠন করিবেন। তিনি প্রত্যেক উপ-কমিটির জন্য অনূর্ধ্ব পাঁচজন সহ-সম্পাদক মনোনীত করবেন। সভাপতি উপ-কমিটিসমূহের কার্যাদি তদারক ও সমন্বয়ের ব্যবস্থা করিবেন।’ ২৫(চ) ধারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রত্যেক সম্পাদকীয় বিভাগের কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল ও সমন্বিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি সম্পাদকীয় বিভাগে একটি করিয়া উপ-কমিটি গঠন করিবে। উক্ত উপ-কমিটি একজন চেয়ারম্যান, একজন সম্পাদক, অনূর্ধ্ব পাঁচজন সহ-সম্পাদক, প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষজ্ঞ সদস্য, সংশ্লিষ্ট সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে। উপ-কমিটিসমূহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কার্যক্রম জোরদার করার কাজে সহায়তা করিবে। প্রত্যেক বিভাগ উহার কর্মকা- সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত ও পরিসংখ্যান সংগ্রহ, সরবরাহ ও সংরক্ষণ করিবে এবং সময়ে সময়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর প্রতিবেদন তৈরি করিবে। প্রতি তিন মাসে অন্তত একবার উপ-কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হইবে। সভায় স্ব স্ব উপ-কমিটি তাহাদের কর্মকা- মূল্যায়ন ও করণীয় নির্ধারণ করিবে।

আর গতবছরের ৩০ জুন সভাপতির কার্যালয়ে সম্পাদকম-লীর সভা শেষে কাদের বলেন, ‘আমরা তো পুরনোদের চিনি। এবার নতুনদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়েছি। এখানে আমাদের একটা ক্যাটাগরি আছে।

যারা অন্যান্য শাখা বা কমিটিতে আছেন তারা কিন্তু উপ-কমিটিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি থাকতে পারবেন না। কিন্তু মেম্বার (কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য) থাকতে পারবেন। যারা অন্য কমিটিতে আছেন, এমন কেউ অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি (সহ-সম্পাদক) হতে পারবেন না। এই অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি (সহ-সম্পাদক) ১০০ অতিক্রম করবে না, সর্বমোট ৯৫ জনের মতো হবে।’

সহ-সম্পাদকদের দায়িত্ব বণ্টনের ব্যাপারে বলেন, ‘আমাদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদের সাথে তিনজন করে সহ-সম্পাদক সংযুক্ত থাকবেন। এ বিষয়ে আমরা আজকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রচার এবং দপ্তর এই দুটি বিভাগে পাঁচজন করে থাকবেন। তথ্য-গবেষণায় চারজন থাকবেন। এইভাবে আমরা চিন্তা-ভাবনা করেছি। ওই আলোকে আমরা পরবর্তী মিটিংয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করব। হয়ত সেক্ষেত্রে আরো একটি মিটিং করে চূড়ান্ত করা হবে। এরপর আমরা আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে পরামর্শ করে ধারাবাহিকভাবে গণমাধ্যমে প্রকাশ করব। আর সম্পাদকীয় উপ-কমিটির সদস্যদের সীমা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপ-কমিটির সদস্য পদে ২০ থেকে ৩০ জন থাকবেন। এখানে পার্লামেন্টের মেম্বাররা থাকবেন ৫ থেকে ৭ জন। অনেক আছে আওয়ামী লীগ মনস্ক, আমাদের আদর্শের লোক; তারাও স্থান পাবেন। আর ১৯টি উপ-কমিটির মধ্যে ১৬টি উপ-কমিটির মধ্যে তিনজন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।

এরপর আওয়ামী লীগের ১৯টি উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিবের নাম ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। এদিকে গত অক্টোবরে আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ কমিটিতে চার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে দলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেটিকে খসড়া তালিকা হিসেবে স্বীকার করা হয়। তখন সেটি চূড়ান্ত তালিকা নয় বলে জানানো হয়। ওই সময় দলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ ১১ অক্টোবর ২০১৭ বুধবার কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানবসম্পদ উপ-কমিটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রত্যেকটি উপ-কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ উপ-কমিটিও গঠন প্রক্রিয়া চলছে। কার্যত, এখন পর্যন্ত শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিভাগের উপ-কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে, প্রাথমিক যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত নামসমূহকে কোনোভাবেই উপ-কমিটি বলা চলে না কিংবা খসড়া উপ-কমিটি হিসেবেও বিবেচনা করা যায় না। যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর একটি প্রস্তাবিত তালিকা সংগঠনের সভাপতি শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য জমা দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির চূড়ান্ত তালিকা অনুমোদন করার পরই প্রকাশ করা হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জানুয়ারি ২০১৮/নৃপেন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়