শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনা ছাড়া শান্তি আসবে না: দুদু
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে পাঠানোর জন্য ভারতকে অনুরোধ জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ফ্যাসিস্টকে আশ্রয় দিয়েছেন, এখন তাকে দেশে ফেরত পাঠান। তাকে রক্ষা করার মধ্য দিয়ে আপনারা গণতন্ত্রের স্বপক্ষে কোন কাজ করতে পারবেন না। শেখ হাসিনা মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত একজন খুনি। তাকে বিচারের আওতায় আনা ছাড়া বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে না।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত গণতন্ত্র হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশকে আমরা বন্ধু হিসেবে জানি। কিন্তু সেই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যে কথা বললেন, আমি জানিনা তার উদ্দেশ্য কী। তার দেশের নিরাপত্তা, তার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। কিন্তু সেটি যদি উদ্দেশ্যপূর্ণ হয়- শান্তিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশকে গাঁজার সাথে তুলনা করা, ইসরাইলের সাথে তুলনা করা, ইউক্রেনের সাথে তুলনা করা সেটা মনে হয় তারা ঠিক করেননি। ভারত থেকেও বাংলাদেশের মানুষ অনেক দিক থেকে নিরাপদ এবং শান্তিতে রয়েছে বলে ঘোষিত হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে আমাদের সেনাবাহিনীকে অর্ডার করুন- তারা যেন তৈরি থাকে। দেশবাসীকে সংগঠিত করে এই দেশের পুলিশ, বিডিআর সেনাবাহিনী এবং জনগণ সংগঠিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে যেভাবে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বাংলাদেশে স্বাধীনতা এনেছিল, তেমনিভাবে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করবে। যা আমরা গত একমাস আগে দেখেছি।
দুদু বলেন, দীর্ঘ সময়ের পর বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, ন্যূনতম মানবাধিকার রক্ষা করার সুযোগ এসেছে। এই সুযোগ আমাদেরকে ব্যবহার করতে হবে। আমাদের সন্তানরা, আমাদের তরুণ সমাজ তাদের জীবন উৎসর্গ করে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার সম্মুখে এসে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত করেছে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আমাদেরকে সেটা রক্ষা করতে হবে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা গত ১৭ বছর ধরে গণতন্ত্র বিরোধী ভূমিকা পালন করেছে, ছাত্র জনতার উপর গুলি চালিয়েছে, এ আন্দোলন সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছে; হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জড়িত থাকা নেতাদেরকে অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। যারা বাংলাদেশের লক্ষ্য হাজার কোটি টাকা লুট ও পাচার করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে সমস্ত টাকা উদ্ধার করতে হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আমরা চারদিকে খেয়াল করছি, বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, লুটপাট এবং দখলদারি হচ্ছে। বিএনপিকে বদনামের ভাগীদার করার জন্য কিছু কিছু মানুষ বিএনপি এবং ছাত্রদল সেজে এগুলো করছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা যেখানেই দেখা যাবে; সাথে সাথে তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে। আইনের মাধ্যমে তার বিচার হবে। আমাদের মহাসচিবও একই নির্দেশ ও ঘোষণা দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, ন্যাশনাল কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ইকবাল হাসান স্বপন, কৃষকদলের নেতা কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, মীর মমিনুর রহমান সুজন, আমির হোসেন বাদশা প্রমুখ।
এমএ/টিপু