ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ফয়জারের ‘পোড়া চা’ 

সুদীপ্ত শামীম, গাইবান্ধা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২২   আপডেট: ১২:২৬, ৩০ ডিসেম্বর ২০২২
জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ফয়জারের ‘পোড়া চা’ 

দূরদূরান্ত থেকে পোড়া চায়ের স্বাদ নিতে ছুটে আসছেন চা প্রেমীরা।

রসমঞ্জুরীর শহর দেশের উত্তরের জনপদ গাইবান্ধা। এই জেলা রসমঞ্জুরীর মাধ্যমেই বিখ্যাত। কিন্তু এবার নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে ফয়জার রহমানের ‘পোড়া চা।’ বিশেষ প্রক্রিয়ায় মাটির কাপ পুড়িয়ে তাতে দুধ চিনি মিশিয়ে এই চা তৈরি হয়। আর এই চায়ের স্বাদ নিতে তাই প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে ফয়জারের দোকানে ছুটি আসছেন চা প্রেমীরা।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের মধ্য রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামে ফয়জারের চা স্টল। গ্রাহক বেড়ে যাওয়ায় উন্মুক্ত জায়গায় বসানো হয়েছে কাঠ-বাঁশের টং বা মাঁচা। একাধিক লম্বা এই টংয়ে বসে মাটির কাপে চায়ের চুমুক দিচ্ছেন শতাধিক নারী-পুরুষ। 

আরো পড়ুন:

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ফয়জার রহমান (৬০) জীবিকার তাগিদে প্রায় ৩ যুগ ধরে চা বিক্রি করে সংসার চালান। এক বছর আগে তিনি শুরু করেন পোড়া চা বানানোর কাজ। চুলায় তাওয়া বসিয়ে এর ওপর পোড়ানো হয় মাটির কাপ। সেই কাপে ঢালা হয় গরম চা। ঘন দুধ-চা পাতা আর মাটির পোড়া গন্ধ ভিন্ন স্বাদ এনে দেয় চা পানে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাইবান্ধা শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে এই চায়ের স্টলটি রাস্তার পাশে অবস্থিত। অন্যের জায়গায় দোকান করে ব্যবসা করছেন ফয়জার। তার এই দোকানে কাজ করেন সাতজন শ্রমিক। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চা বিক্রি করেন তিনি। প্রতি কাপ চার দাম ক্রেতাদের কাছে রাখা হয় ২৫টাকা। 

গ্রাহকদের জন্য চা তৈরিতে ব্যস্ত ফয়জার

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধর্মপুর থেকে পোড়া চা পান করতে আসা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘লোকমুখে শুনে চা পান করতে এসেছি। নতুন স্বাদের চা খেয়ে বেশ মজা পেলাম। ঘন দুধ-চা পাতা, পোড়া মাটির গন্ধ মিলেমিশে নতুন একটা স্বাদ পেলাম। গরম মাটির ভার টিস্যু পেপার বা রুমালে জড়িয়ে ধরে চায়ে চুমুক দিতে হয়। তবে ভিড়ের কারণে চা অর্ডার দিয়ে খানিকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।’

চা বিক্রেতা ফয়জার রহমান বলেন, “ ‘পোড়া চা’ বিক্রির শুরুর দিকে তেমন গ্রাহক ছিল না। কিন্তু এখন মুখে মুখে চায়ের গল্প ছড়িয়ে পড়ায় গাইবান্ধার বিভিন্ন গ্রাম-শহর, বগুড়া, রংপুর থেকে লোকজন আসছেন চা পান করতে। আধা মণ চা পাতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু এই চা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে দৈনিক ৭ মণ দুধে এক মণ চিনি জাল দিয়ে ৪ মণ ঘন দুধ তৈরি করছি। পরে তাতে চা পাতা দেওয়া হয়। এভাবে পোড়া চা বিক্রি করে সংসারে বেশ স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছি।’   

ঘন দুধে তৈরি করা হয় চা 

বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম সাবু বলেন, ‘ফয়জার রহমান দীর্ঘদিন ধরে চা বিক্রি করছেন। এখন তিনি পোড়া চা বিক্রি করছেন। এই চা অত্যান্ত মজাদার। তার এই চা গাইবান্ধা জেলার আরও পরিচিত বাড়িয়ে দিচ্ছে।’ 

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ইদানিং ফয়জার রহমানের স্টলে পোড়া চা খেতে দিন-রাত মানুষের ভিড় হচ্ছে। তাই সেখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়