ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জের হাড়ের গুঁড়া ব্যবহৃত হচ্ছে পোল্ট্রি শিল্পে

অদিত্য রাসেল, সিরাজগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫১, ২৬ মার্চ ২০২৩  
সিরাজগঞ্জের হাড়ের গুঁড়া ব্যবহৃত হচ্ছে পোল্ট্রি শিল্পে

গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া জবাই করে প্রয়োজনীয় মাংস সংগ্রহের পর অবশিষ্ট হাড় দেশের পোল্ট্রি এবং ওষুধ শিল্পে কাজে লাগানো হচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে জেলার সদর উপজেলার কালিয়া গ্রামে প্রায় তিন বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে যমুনা বোন মিল কারখানা।  

শনিবার (২৪ মার্চ) সকালে যমুনা বোন মিল কারখানায় গিয়ে জানা যায় প্রতি মাসে অন্তত ১৫ লাখ টাকার হাড়ের গুঁড়া কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করছে। প্রতি কেজি হাড় বিক্রি হয় ২৫ টাকা দরে। সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর, বগুড়া, টাঙ্গাইল জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন পশুর হাড়। সংগ্রহের পর হাড়গুলো পরিষ্কার করা হয়। এরপর মেশিনের সাহায্যে গুঁড়া করে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়। 

কথা হয় যমুনা বোন মিল কারখানার নারী শ্রমিক চাম্পা ও আহের আলীর সঙ্গে। তারা প্রায় ১০ বছর কারখানায় কাজ করছেন। প্রতিদিন ৩৫০ টাকা করে পারিশ্রমিক পান। দুজনেরই আয়ের একমাত্র পথ এটি। এবং এ টাকায় তাদের সংসার চলে। 

হাড় সংগ্রহকারী সোলায়মান হোসেন জানান, হাড় সংগ্রহের জন্য কয়েকজনের দল রয়েছে। তারা প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে হাড় সংগ্রহ করে কারখানায় নিয়ে আসেন। তাদের কাছ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে হাড় কেনা হয়। দৈনিক গড়ে প্রায় ২৫ কেজি হাড় সংগ্রহ করেন তারা। 

সোলায়মান জানান, সবচেয়ে বেশি সংগ্রহ করা হয় গরুর হাড়। কিন্তু গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন কসাইরা আর আগের মতো গরু জবাই করে না। বিক্রি কমে গেছে। জবাই করলেও হার ফেলতে চায় না। ফলে এখন আর আগের মতো গরুর হাড় সংগ্রহ করতে পারছেন না দলের অনেকেই। 

কারখানার কর্ণধার হাফিজুল শেখ জানান, ২৫ বছর আগে এই ব্যবসা শুরু করেন তিনি। সারাদেশে ৫-৬টি হাড়ের কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জে একটি।

হাড়ের গুঁড়া কী কাজে ব্যবহৃত হয় জানতে চাইলে হাফিজুল শেখ বলেন, আমরা খুলনায় ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। তাদের কাছে শুনেছি গুঁড়া দেশের বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছে তারা বিক্রি করেন। ওষুধ তৈরিতে এগুলো ব্যবহৃত হয়। তবে চাহিদা মতো গুঁড়া সরবরাহ করতে পারি না। কারণ আগের মতো এখন হাড় তেমন পাওয়া যায় না। 

সরকারি সহায়তা পেলে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব বলে জানান হাফিজুল শেখ। 

খুলনার হাড়ের গুঁড়ার ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন মোবাইলে জানান, হাড়ের গুঁড়া দিয়ে গবাদি পশুর খাবার, মুরগির খাবার ও ওষুধ কোম্পানিতে ক্যাপসুলের কভার তৈরি হয়। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের কাছ থেকে গুঁড়া কিনে নেয়।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার সাদাত বলেন, বিষয়টা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে না পড়লেও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, ফেলে দেওয়া হাড় গুঁড়ো করে ওষুধ কোম্পানির কাছে তারা বিক্রি করছে। এটি আসলে প্রাকৃতিক জৈব সার। হাড়ের গুঁড়ায় এমন উপাদান রয়েছে যা গাছের স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। 
 

তারা//

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়