ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বোতলজাত পানি দাঁতের ক্ষতি করে?

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ১৩ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বোতলজাত পানি দাঁতের ক্ষতি করে?

দেহঘড়ি ডেস্ক : এটা ব্যাপকভাবে পরিচিত যে- সোডা, বিয়ার এবং কফি দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মিনারেল ওয়াটার অর্থাৎ বোতলজাত পানি সেই তুলনায় আমাদের কাছে নির্দোষ।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের দন্তচিকিৎসকরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, এমনটা সবসময়ই নয়।

সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু মিনারেল ওয়াটার ব্র্যান্ডে বিপজ্জনক পিএইচ লেভেল এবং প্রয়োজনীয় ফ্লোরাইডের অভাব রয়েছে, যা দাঁতে ক্যাভেটিজ সৃষ্টি করতে পারে।

বিপজ্জনক পিএইচ লেভেল থেকে যেহেতু কোনটি সবচেয়ে বেশি নিরাপদ তা জানা অসম্ভব, সেহেতু চিকিৎসকরা শীর্ষ ৯টি ব্র্যান্ডের বোতলজাত পানির পিএইচ লেভেল পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, কোনটি সবচেয়ে ভালো এবং কোনটি সবচেয়ে খারাপ।

পিএইচ লেভেল স্কেল শূন্য থেকে ১৪ পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। এই স্কেলে সাত নিরপেক্ষ, এর নিচে হলে তা অ্যাসিডিক এবং ওপরে হলে উচ্চ ক্ষারীয়।

নিউ ইয়র্কের অ্যাস্টোর স্মাইল ডেন্টাল ক্লিনিকের চিকিৎসক ইয়ুনজুন জো সতর্ক করে বলেন, অ্যাসিডিক পানি পানে আপনার দাঁতের ক্ষতি হবে। পিএইচ লেভেল ৫.৫ হলেই দাঁতের এনামেল ক্ষয় শুরু করে, তাই ৫.৫ এর কম পিএইচ রয়েছে এ ধরনের পানি পান থেকে বিরত থাকা ভালো।

তিনি আরো বলেন, সোডা, বিয়ার বা কফির সঙ্গে তুলনায় বোতলজাত পানি আপনার দাঁতের জন্য খারাপ নয়। তবে বোতলজাত পানিতে ফ্লোরাইডের অভাব ক্ষতিকারক হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে ট্যাপের পানি অর্থাৎ কলের পানির মান সরকারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা নিশ্চিত করে যে এটিতে ফ্লোরাইডের সঠিক মাত্রা রয়েছে। অন্যদিকে বোতলজাত পানিতে প্রায়ই এই সঠিক পরিমাণের অভাব থাকে।

হাই লাইন ডেন্টিস্ট্রির টেমা স্টার্কম্যান বলেন, আপনি ফ্লোরাইড গ্রহণ করছেন তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, বিশেষ করে সদ্যজাত থেকে পাঁচ বছর বয়সের শিশুদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাদের দাঁত এখনও উন্নয়নশীল। শিশুদের দাঁতে যদি ফ্লোরাইডের সঠিক মাত্রা না থাকে তাহলে তাদের দাঁতে হিপো-ফ্লোরোসিস অর্থাৎ দাঁতে সাদা দাগ সৃষ্টি হতে পারে। শিশুরা যদি পর্যাপ্ত পরিমানে ট্যাপের পানি পান না করে এবং ফ্লোরাইডের সঠিক মাত্রাহীন ফিল্টার পানি, বোতলজাত পানি পান করে তাহলে তাদের দাঁতে ছোট থেকেই সমস্যার শুরু হতে পারে।’

গবেষণায় বলা হয়েছে, শিশুদের দাঁত বৃদ্ধির সময়টায় ফ্লোরাইডের সঠিক মাত্রা সুস্থ এনামেল তৈরিতে সহায়তা করে। পানি পানে সঠিক মাত্রার ফ্লোরাইডের অভাবের সমস্যাটি বড়দেরও প্রভাবিত করে।

ডা. টেমা বলেন, প্রাপ্তবয়স্ক কারো দাঁতে যদি ক্যাভিটির সমস্যা থাকে, যা দাতের এনামেলকে দুর্বল করে দিয়ে থাকে এবং খাবার পানিতে যদি ফ্লোরাইডের কোনো উৎস না থাকে, তাহলে অবশ্যই দাঁতে আরো বেশি ক্যাভেটির সৃষ্টি হবে। তবে তিনি এটাও জানান যে, যারা শুধু বোতলজাত পানি পান করে থাকে তারা ফ্লোরাইড পেতে পারে ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট থেকে অথবা ফ্লোরাইড সমৃদ্ধ কলের পানি দিয়ে কুলকুচো করার মাধ্যমেও।

তিনি মিনারেল ওয়াটার এবং ট্যাপ ওয়াটারের মধ্যে ব্যালেন্স করা পরামর্শ দিয়েছে। টেমা বলেন, আপনার শিশু সন্তান যখন বাইরে থাকে তখন তাদের সঙ্গে বোতলজাত পানি থাকতে পারে কিন্তু প্রতিদিনের ক্ষেত্রে তাদের ট্যাপের পানি পান করা ভালো।

ফ্লোরাইড পানি পানের বিষয়টিকে বলা হয়, ‘ক্যাভেটির বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক যোদ্ধা’। দাঁতের ক্যাভেটি প্রতিরোধের জন্য এটি সবচেয়ে সহজ ও উপকারী পন্থা।

তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ আগস্ট ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়