ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

গোপনাঙ্গের সুরক্ষা মিলবে যেসব খাবারে

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৩, ১৪ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ১২:৩৫, ১৪ নভেম্বর ২০২০
গোপনাঙ্গের সুরক্ষা মিলবে যেসব খাবারে

আপনি কী খাচ্ছেন তার ভিত্তিতে শরীরের বিভিন্ন অংশ উপকৃত হতে পারে। এমন কিছু খাবার রয়েছে যা নারীর গোপনাঙ্গ বা যোনির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ সহায়ক হতে পারে। কেবল সুখময় যৌনজীবন পেতে নয়, বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতেও যোনির সুস্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যোনির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কয়েকটি খাবারের তালিকা দেওয়া হলো।

তৈলাক্ত মাছ: তৈলাক্ত মাছ শরীরে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সরবরাহ করে। ইন্ডিয়ানাপলিসে অবস্থিত দ্য ওয়েলনেস ফিলোসফির প্রতিষ্ঠাতা স্টার্চি স্মল বলেন, ‘আমাদের শরীরে প্রত্যেক কোষের মেমব্রেনে অ্যাসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। তৈলাক্ত মাছের ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মাসিক চক্র স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া নারীদের যোনির শুষ্কতা কমাতে পারে।’ তাই যোনিকে মোলায়েম রাখতে সপ্তাহে অন্তত দুই বার তৈলাক্ত মাছ খেতে পারেন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে উচ্চমানের ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্টও সেবন করতে পারেন।

দই: দই হলো প্রোবায়োটিক বা স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ খাবার। এটা অন্ত্র ও যোনিতে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যেহেতু চিনি খেয়ে ছত্রাকের বংশবৃদ্ধি ঘটে, তাই দইয়ে চিনি না মেশানোই ভালো। দইকে সুস্বাদু করতে চিনির পরিবর্তে ফলের টুকরো যোগ করতে পারেন।

বাদাম: যেসব খাবারে স্বাস্থ্যকর মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে তা শরীরকে সেক্স হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে, যেমন- বাদাম ও অলিভ অয়েল। সেক্স হরমোনের ঘাটতি হলে যোনির শুষ্কতা বেড়ে যায়, ফলে যৌনমিলনে যন্ত্রণা অনুভূত হতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর ফ্যাটকে ভয় পাবেন না- কারণ যোনির স্বাস্থ্য এটার ওপর নির্ভরশীল।

স্ট্রবেরি: যোনির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অন্যতম সহায়ক পুষ্টি হলো ভিটামিন সি। অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির সঠিক কার্যক্রমের জন্য ভিটামিন সি প্রয়োজন। এই গ্রন্থি স্ট্রেস হরমোন করটিসোলের পাশাপাশি সেক্স হরমোনও উৎপাদন করে। ডা. স্মল জানান যে, বেশিরভাগ নারী পর্যাপ্ত ভিটামিন সি খান না। ভিটামিন সি’র একটি সমৃদ্ধ উৎস হলো স্ট্রবেরি। স্ট্রবেরিতে কমলার চেয়েও বেশি ভিটামিন সি রয়েছে।

উষ্ণ চা: যোনির স্বাস্থ্যের ওপর কুসুম গরম চা সরাসরি প্রভাব ফেলবে না, কিন্তু এটা অস্বাস্থ্যকর পানীয় সীমিত করার ভালো উপায় হতে পারে। যারা বেশি পরিমাণে শরবত বা চিনিযুক্ত পানীয় পান করেন তাদের যোনিতে ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি, কারণ ছত্রাকের প্রিয় খাবার হলো চিনি। যোনিতে ঘনঘন ছত্রাক সংক্রমণ হলে মিষ্টি পানীয় কমিয়ে ফেলুন ও চিনিমুক্ত উষ্ণ চা পান করুন।

ডিম: একটি ডিমে যতটুকু ভিটামিন ডি পাওয়া যায় তাকে ‘গুড ডোজ’ বলা যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি’র অভাবে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস নামক যোনিক সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ২০১৫ সালের একটি গবেষণায় যারা ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট সেবন করেছেন তাদের ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস উপশম হয়েছে। ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উদ্দেশ্যে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টও সেবন করতে পারেন।

বাঁধাকপি: বাঁধাকপিতে ভালো পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম পাবেন। যোনির সঠিক মাসল টোন ও ফাংশনের জন্য মিনারেল দুটির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু অনেক নারী পর্যাপ্ত পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম খায় না বলে যোনির স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। দুধ জাতীয় খাবারেও ক্যালসিয়াম পাবেন, অন্যদিকে বিনস ও বাদামেও ম্যাগনেসিয়াম পাবেন।

পানি: ডায়েট সোডা বা জুসে আসক্ত? এটা কিন্তু যোনির স্বাস্থ্যকে বিপদে ফেলতে পারে। ডা. থুরার বলেন, ‘আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার অন্ত্র ও যোনিতে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।’ তাই যোনির সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার মেশানো পানি পরিহার করে বেশি পরিমাণে সাধারণ পানি পানের কথা বিবেচনা করুন।

গোটা শস্য: যব, গম ও পপকর্নের মতো গোটা শস্যে প্রিবায়োটিক রয়েছে। প্রিবায়োটিক হলো শরীরের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার খাবার। এছাড়া অনেক ফল ও সবজিতেও প্রিবায়োটিক পাওয়া যায়, যেমন- কলা। প্রিবায়োটিক অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে। অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে যোনিও উপকৃত হয়।

ঢাকা/ফিরোজ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়