ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

গর্ভফুল ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে করোনাভাইরাস: গবেষণা

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৫, ২৭ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
গর্ভফুল ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে করোনাভাইরাস: গবেষণা

গর্ভাবস্থায় কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হলে নতুন করোনাভাইরাসটি প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে।

গর্ভকালীন সময়ে নারীর শরীরে গর্ভফুল তৈরি হয়, যা জরায়ুর ভেতরের দেয়ালে লেগে থাকে। মা ও ভ্রূণের যোগাযোগ এই গর্ভফুলের মাধ্যমে হয়। গর্ভফুল ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা গর্ভের সন্তানকে অক্সিজেন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান সরবরাহ এবং শিশুর রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে থাকে।

নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস গর্ভবতী নারীর গর্ভফুল ক্ষতিগ্রস্ত এবং ভ্রূণে অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহের প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে।

শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন মেডিসিন প্রেন্টাইস উইমেন’স হাসপাতাল মাত্র ১৬ জন করোনা পজেটিভ গর্ভবতী নারীর এই গবেষণা পরিচালনা করেছে। ছোট এই গবেষণায় দেখা গেছে, প্রত্যেকেরই গর্ভফুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং একজনের গর্ভপাত হয়েছিল। যদিও গর্ভপাতের কারণ কোভিড-১৯ রোগের প্রভাবে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বাকি ১৫ জন নারী যারা স্বাস্থ্যবান বাচ্চা প্রসব করেছিলেন, তাদের মধ্যে ১২ জনের (বা ৮০ শতাংশের) ভাস্কুলার ম্যাল্পফিউশন ছিল। এটি এমন একটি অবস্থা, যা মা এবং ভ্রূণের মধ্যে রক্ত প্রবাহকে ব্যাহত করতে পারে। এছাড়া ৬ জনের বা ৪০ শতাংশের গর্ভফুলে রক্ত জমাট সমস্যা ছিল।

নতুন এই গবেষণাটি খুব সীমিত আকারে করা হয়েছে। তবে গর্ভবতী নারীদের (যারা কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ছিলেন না) নিয়ে পরিচালিত আরেকটি গবেষণার সঙ্গে তুলনায় দেখা গেছে, ওই গ্রুপের ৫৫ শতাংশের ভাস্কুলার ম্যাল্পফিউশন ছিল এবং মাত্র ৯ শতাংশের রক্ত জমাট সমস্যা ছিল।

রয়টার্সকে নতুন এই গবেষণার প্রধান গবেষক ডা. জেফ্রি গোল্ডস্টেইন বলেন, ‘আমাদের গবেষণার ফলাফল করোনাভাইরাস সম্পর্কে এমন ধারণা দিচ্ছে যে, এটি রক্ত জমাট বাঁধার হতে পারে এবং তা ঘটছে গর্ভফুলে।

তাঁর মতে, গর্ভফুলে রক্ত প্রবাহের সমস্যাগুলো ভ্রুণের বৃদ্ধির সীমাবদ্ধতা এবং গুরুতর ক্ষেত্রে সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম ইনজুরি, এমনকি ভ্রুণের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

তবে এ গবেষণায় বেশিরভাগ ফলাফল ইতিবাচক দেখা গেছে বলে উল্লেখ করেন ডা. জেফ্রি। ১৫ জন নারী সুস্থ সন্তান প্রসব করেছে, নবজাতকদের মধ্যে কোভিড-১৯ পজেটিভ দেখা যায়নি এবং দীর্ঘমেয়াদী কোনো নেতিবাচক প্রভাব তাদের মধ্যে দেখা দেবে না বলেও মনে করেন তিনি।

ডা. জেফ্রি জানান, ‘আমাদের নতুন গবেষণার মানে এটা হতে পারে যে, হাইপারটেনশনের মতো অসুস্থতায় আমরা নারীদের যেভাবে চিকিৎসা করি, কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত গর্ভবতী নারীদেরও সেভাবে চিকিৎসা করা উচিত। ভ্রুণের কোনো সমস্যা এড়াতে ঘন ঘন ভ্রূণের নিরীক্ষণ বা ভ্রূণের বৃদ্ধির মূল্যায়ন করতে হবে।’

 

ঢাকা/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়