ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

আর্চারির মাঠে ফুটবলের শুরুতেই অব্যবস্থাপনা

টঙ্গি থেকে সাইফুল ইসলাম রিয়াদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫৪, ২৭ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ০১:৪৭, ২৮ জানুয়ারি ২০২১
আর্চারির মাঠে ফুটবলের শুরুতেই অব্যবস্থাপনা

ফুটবলকে ঢাকাকেন্দ্রিক না করে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তারই অংশ হিসেবে গাজীপুরের টঙ্গি শহরে বুধবার উদ্বোধন হলো নতুন ভেন্যু শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়াম। কিন্তু শুরুর দিনই নানা অব্যবস্থাপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিছু ঘাটতিও দেখা গেছে। অবশ্য আর্চারির জন্য বরাদ্দ পাওয়া এই মাঠকে ফুটবলের জন্য উপযুক্ত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে বাফুফে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।  

উত্তর বারিধারা ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচ দিয়ে আর্চারির এই মাঠে দুপুর পৌনে ৩টায় প্রথমবার গড়িয়েছে ফুটবল। কিন্তু উদ্বোধনীর দিনেও প্রস্তুত হয়নি মাঠ। তিন-চারজন শাবল দিয়ে মাটি খুঁড়ে প্রস্তুত করছিলেন গোলবারের জাল লাগানোর খুঁটি। অবাক করা বিষয় সেই খুঁটিটা ছিল বাঁশের। 

আর্চারির জন্য নির্ধারিত হলেও এই মাঠে প্রথমবারের মতো মাঠে গড়িয়েছে ফুটবল। এমন আনন্দের দিনে মাঠের খেলা ছাপিয়ে আলোচনায় ছিল মাঠের বাইরের বিষয়াদি নিয়ে। শুধু গোলবার নয় ঠিকমতো প্রস্তুত ছিল না ডি-বক্স কিংবা মাঝমাঠের লাইনের রঙ।

তৈরি ছিল না ডাগআউট। দুইটার কিছু পরেই ওয়ার্ম আপের জন্য মাঠে নেমে যান দুই দলের খেলোয়াড়রা। তখনও বাঁশ দিয়ে পেছনের খুঁটি তৈরির কাজ চলছে। আরেকদিকে ডাগআউট প্রস্তুত করছেন কিছু লোক। আর মাঠের বাইরের দৃশ্য আরও হতশ্রী। মাঠের উত্তর-পশ্চিম পাশে বন আর পূর্ব পাশে ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে। আর দক্ষিণ পাশে গ্যালারি-ড্রেসিংরুমসহ প্রয়োজনীয় থাকার ব্যবস্থা। তৃতীয় তলায় ক্যাম্প করছেন আর্চারির খেলোয়াড়রা।

ড্রেসিংরুম থেকে খেলোয়াড়দের যেতে হয়েছে দর্শকদের মধ্য দিয়ে। স্টেডিয়ামের মাঠে প্রবেশের গেট ছিল দর্শকে ঠাঁসা। বালাই ছিল না কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধির। দর্শকদের মধ্য দিয়ে খেলোয়াড়দের মাঠে নিতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে বাফুফে নিরাপত্তাকর্মীদের। এভাবেই টঙ্গির এই মাঠে প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধন হয়।   

আর্চারির এই মাঠকে ফুটবল মাঠ হিসেবে উদ্বোধন করেছেন খোদ আহসানউল্লাহ মাস্টারের ছেলে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী।

খেলার মাঝে বিরতিতে বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতিকে মাঠের অব্যবস্থাপনা নিয়ে, অপ্রস্তুত মাঠ নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি আশ্বাস দেন, ধীরে ধীরে সব ঠিক হবে। সালাম মুর্শেদী বলেছেন, ‘আসলে মাঠের লাইনআপ আগে করা হয় না। মাঠটা প্রথমে প্রস্তুত করতে হয়। আজ ১০ দিন ধরে পানি দিয়ে মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রথম দিন বলে এমন হয়েছে, তবে ভবিষতে আর এমন হবে না। সব সমস্যার সমাধান করা হবে। এএফসির গাইডলাইন মেনেই পেশাদার লিগ আয়োজন হবে।‘

স্বাস্থ্যবিধির বালাই না থাকলেও মুর্শেদী বলেন, ‘আমি যেটা বলতে চাই, আমি অনেক খুশি আমরা করোনার মধ্যেও ঢাকার আশেপাশে যোগাযোগ স্থাপন করে খেলাধুলা আবার যেন ফেরাতে পারি। এতে আমাদের আবাসন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা কমে আসবে এবং তা করতে হবে স্বাস্থ্যবিধি ঠিক রেখে। এটিসহ মোট চার স্টেডিয়ামে আমাদের পেশাদার লিগের খেলাগুলো হচ্ছে। আপনারা জানেন যে আমাদের সব কয়টি স্টেডিয়ামে খেলাগুলো হচ্ছে।‘

অপ্রস্তুত স্টেডিয়ামের কথা স্বীকার করে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি এটা আর্চারি ফেডারেশনের জন্য বরাদ্দ ছিল। তাই আর্চারির যে সুবিধা দরকার, সেভাবেই এটাকে তৈরি করা হয়েছিল। তাই ফুটবলের সুযোগ-সুবিধা ও ব্যবস্থাপনার কিছু অপ্রতুলতা রয়েছে। আমি মনে করি এটি আরও বাড়াতে হবে। ইতোমধ্যে এই স্টেডিয়ামের জন্য বড় বরাদ্দ আমরা দিয়েছি।‘

এই মাঠকে আন্তর্জাতিক মানের করে প্রস্তুত করার জন্য ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এই মাঠে চলমান প্রিমিয়ার লিগের ১২টি ম্যাচ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু প্রস্তুতির দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই হয়তো শেষ হয়ে যাবে প্রিমিয়ার লিগ। হয়তো প্রথম দিনের মতোই ব্যবস্থাপনাহীন মাঠে চলতে থাকবে বাফুফের পেশাদার লিগ।

ঢাকা/ফাহিম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়