সাব্বির-ইয়াসিরের শৈলীকে পূর্ণতা দিতে ব্যর্থ রাজশাহী

বিপিএলে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি, ২০২৫) চট্টগ্রাম পর্বের শেষ দিনের প্রথম ম্যাচে টেবিল টপার রংপুর রাইডার্স মুখোমুখি হয়েছিল দুর্বার রাজশাহী। নামে দুর্বার হলেও আদতে ‘দুর্বল’ এই দল এই দিন খেলতে নামে মাত্র 'দুই বিদেশি' নিয়ে। পারিশ্রমিক দিতে ব্যর্থ দলটার হয়ে খেলতে অস্বিকৃতি জানায় বিদেশি ক্রিকেটাররা।
ভাঙাচোরা রাজশাহী এরপরও এদিন নির্ধারিত ২০ ওভারের খেলা শেষে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ১৭০ রানের পুঁজি পায় মূলত ইয়াসির আলী রাব্বি ও সাব্বির হোসেনের ঝড়ো দুই ইনিংসের কল্যাণে। দলের বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সম্ভাবনা জাগিয়েও দুইশ রান করতে ব্যর্থ হয় তাসকিন আহমেদের দল।
এবারের আসরে দুই দলের প্রথম মোকাবেলায় টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। রাজশাহীর জিসান আলমের পরিবর্তে দলে ঢোকা সাব্বিরের বিধ্বংসী ব্যাটিং প্রদর্শনী সোহানের ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত সঠিক কি না সেটা ভাবাচ্ছিল। পরে সেই প্রশ্নকে আরও পোক্ত করেন ইয়াসির। তবে দলটা যখন রাজশাহী তখন সবকিছুই হবে এলমেলো ভাবে, এটাই তো স্বাভাবিক। শেষ ২৫ বলে ৬ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৮ রান জড়ো করতে পারে আসকিনের দল।
রাজশাহীর ওপেনার মোহাম্মদ হারিস প্রথম ওভারেই রাকিবুল হাসানের বলে ক্যাচ তুলেও জীবন পান। এরপরও ব্যক্তিগত ইংসটি বড় করতে পারেননি এই পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান। সেই রাকিবুলের বলে ক্যাচ দিয়েই ফেরেন ১২ বলে ১৯ রান করা এই ওপেনার। তবে রানের চাকা সচল রাখেন সাব্বির এবং এনামুল হক বিজয়।
পঞ্চম ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন বোলিংয়ে আসলে তাকে ছক্কা মেরে স্বাগত জানান সাব্বির। পরের দুই বলে আরও দুটি চার মারেন তিনি। ফলে ৪.৩ ওভারের মধ্যেই পঞ্চাশ পেরিয়ে যায় রাজশাহী। পঞ্চম ওভারে সাইফউদ্দিন দেন ১৬ রান। ষষ্ঠ ওভারে আকিফ জাভেদের বলে সাব্বির-বিজয় মিলে নেন ৯ রান। ফলে পাওয়ার প্লে'তে ছয় ওভারে এক উইকেটে ৬২ রান তোলে রাজশাহী।
২৪ রানে প্রথম উইকেটের পতনের পর সাব্বির-বিজয় মিলে গড়েন ২৮ বলে ৫২ রানের জুটি। ১৯ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৯ রান করা সাব্বির খুশদিল শাহর বলে ছয় মারতে গিয়ে সাইফুউদ্দিনের দুর্দান্ত এক ক্যাচের পরিণত হন। পরেই বলেই রায়ান বার্লকে শূন্য হাতে ফেরান খুশদিল। দলীয় সংগ্রহ তখন ৭৬ রান।
তৃতীয় উইকেট হারানোর পর বিজয় এবং ইয়াসিরের ব্যাটে এগিয়ে যেতে থাকে রাজশাহী। ৩৫ বলে এই জুটি পঞ্চাশ রান তোলে। ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়ে যান ইয়াসির। সাইফউদ্দিনের বলে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ৭৬ রানের এই জুটিও ভাঙেন খুশদিল। এই পাকিস্তানি বাঁহাতি স্পিনারকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিস টাইমিং করে সোহানের ক্যাচে পরিণত হন ইয়াসির। দলীয় রান তখন ১৫২। এই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান ৩২ বলে ২টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৬০ রান করে রাজশাহীকে দারুণ ভিত দিয়ে যান।
তবে ইয়াসিরের তৈরি করা ভিতকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় রাজশাহী। দুই বল পরেই আকবর আলীর সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে ফেরেন ৩১ বলে ৩৪ রান করা বিজয়। এরপর তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়ে রাজশাহীর ব্যাটিং অর্ডার। আর কোন ব্যাটসম্যানই দুই অংকের ঘর স্পর্ষ করতে পারেননি।
তাতেই নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রানেই থামে তাসকিন আহমেদের দল। আকিভ ও খুশদিল ৩টি করে উইকেট নেন রংপুরের পক্ষে।
ঢাকা/নাভিদ