ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

৩৭ রানের হারে বাংলাদেশের সিরিজ শুরু

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩৪, ২৮ মে ২০২৫   আপডেট: ০১:০২, ২৯ মে ২০২৫
৩৭ রানের হারে বাংলাদেশের সিরিজ শুরু

পাকিস্তান: ২০১/৭ (২০ ওভার)

বাংলাদেশ: ১৬৪/৮ (১৯.২ ওভার) 

ফল: পাকিস্তান ৩৭ রানে জয়ী। 

২০২ রান তাড়া করতে নেমে ১৬৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে লিটন দাসের দল। লিটন-হৃদয়ের জুটি ভাঙার পর বাংলাদেশ পথ হারিয়ে ফেলে। ৬২ রানে বাংলাদেশ বাকি ৬ হারিয়ে অল আউট হয়। সর্বোচ্চ ৪৮ রান আসে লিটনের ব্যাট থেকে। ৩৬ রান করেন জাকের আলী। কিন্তু তার সঙ্গে কেউ হাল ধরতে পারেননি। ৩১ রান করেন তানজীদ তামিম। আর কেউ বিশের বেশি রান করতে পারেননি। পাকিস্তানের হয়ে একাই ৫ উইকেট নেন হাসান আলী। ২ উইকেট নেন শাদাভ খান। ১টি করে উইকেট নেন ফাহিম আশরাফ, সালমান আঘা ও খুশদিল শাহ। 

২০ বলে ৩৬ রানে আউট জাকের

সঙ্গী ব্যাটাররা আসা যাওয়ার মিছিলে থাকলেও ব্যতিক্রম ছিলেন জাকের আলী। চার-ছয়ের মারে ব্যবধান কমিয়ে নিয়ে আসছিলেন। ষোলোতম ওভারে ২০ বলে ৩৬ রান করে আউট হন এই ব্যাটার। ৩টি ছয় ও ১টি চারের মারে এই ইনিংসটি সাজান জাকের। 

লিটন-হৃদয়ের বিদায় 

৪০ বলে ৫২ রানের জুটি গড়েন লিটন-হৃদয়। দুজনের ব্যাটে এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। ফিফটি থেকে দুই রান দূরে লিটন আউট হলে ভাঙে এই জুটি। ৩০ বলে ৪৮ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগের বলে শাদাভকে ছয় হাঁকান লিটন। তাতে ১১.৫ ওভারে বাংলাদেশ শতরান করে। পরের ওভারে সাজঘরে ফেরেন হৃদয়ও। ২২ বলে ১৭ রান করে দলকে উলটো চাপে ফেলে দিলেন এই ব্যাটার। ক্রিজে জাকের আলীর সঙ্গী শামীম হোসেন। 

ইমনের পর তানজীদের বিদায় 

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে হাসান আলীর শিকার হয়ে ফেরেন ইমন। ৫ বল খেলে ৪ রান করেন এই ব্যাটার। ইমন ফিরলেও তার সতীর্থ তানজীদ সাহসী ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন। ছয়-চারের মারে রানের গতি বাড়ান এই ব্যাটার। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। হাসান আলীর শিকার হয়ে ফেরেন তানজীদও। তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ৩১ রান। ৩টি ছয়ে ও ২টি চারে ইনিংস সাজান তানজীদ। পাওয়ার প্লে থেকে আসে ২ উইকেটে ৪৫ রান। ক্রিজে লিটনের সঙ্গী হৃদয়।  

২০২ রানের কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ল পাকিস্তান

শুরুর ধাক্কা সামলে দুইশ রান পার করেছে পাকিস্তান। ৩ রানে ২ উইকেট হারানোর পর হারিস-সালমান ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। হারিস ফিরলে সালমানের সঙ্গী হন নাওয়াজ। এই দুই জন আউট হলে রানের গতি কিছুটা কমে যায়। এরপর শেষ দিকে শাদাব ঝড়ে আবার পাকিস্তান ছড়ি ঘোরাতে থাকে। সর্বোচ্চ ৫৬ রান আসে সালমানের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া শাদাব ৪৮, নাওয়াজ ৪৪ ও হারিস ৩১ রান করেন। সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন শরিফুল। সর্বোচ্চ ৫৫ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন রিশাদ। 

ঝড়ের পর থামলেন সালমান-নাওয়াজ

হাসনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে এক্সটা কাভারে তানজীদ তামিমের হাতে ধরা পড়েন সালমান। মাত্র ৩৪ বলে ৫৬ রান করেন এই ব্যাটার। তার আউটে ভাঙে নাওয়াজের সঙ্গে গড়া ৬৫ রানের জুটি। এর ১ ওভার পরেই নাওয়াজকে ফেরান রিশাদ। তার হাতেই ক্যাচ তুলে দেন এই ব্যাটার। মাত্র ২২ বলে ৪৪ রান করেন নাওয়াজ। এই দুই ব্যাটার আউট হওয়ায় পাকিস্তানের রানের গতি কিছুটা কমে। ক্রিজে দুই নতুন ব্যাটার শাদাব-খুশদিল। 

সালমানের ঝড়ো ফিফটি 

তানজীম সাকিবকে টান এক ছয় দুই চারে মাত্র ২৯ বলে ফিফটির দেখা পান আঘা সালমান। এরপর রিশাদের হাসান নাওয়াজের ছক্কায় মাত্র ৬৫ বলে দলীয় শতরান পূর্ণ করে পাকিস্তান।  

হারিস ঝড় থামালেন তানজীম সাকিব

হারিসের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল না পাকিস্তান ৩ রানে ২ উইকেট হারায়। আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে উলটো বাংলাদেশকে চাপে রাখার চেষ্টা করেন এই ব্যাটার। পাওয়ার প্লের পরই তানজীমের আঘাত। আউট সাইড অফের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনে। হারিসের ব্যাট থেকে আসে ১৮ বলে ৩১ রান। ক্রিজে সালমানের সঙ্গী নাওয়াজ। 

ঘুরে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের পাল্টা আক্রমণ

প্রথম দুই ওভারে ৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বাজে শুরু করেছিল পাকিস্তান। তিন ওভারে আসে মাত্র ১২ রান! এরপরই আক্রমণ শুরু হয় হারিস-সালমানের। দুজনে পাওয়ার প্লের বাকি ৩ ওভারে যোগ করেন ৪৪ রান। ফিফটির জুটি হয় মাত্র ২৮ বলে। পাওয়ার প্লেতে পাকিস্তানের রান ৫২। 

শরিফুলের অন্যরকম ফিফটি

এবার শরিফুলের আঘাত। দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসেই দ্বিতীয় বলে ফেরান ফখরকে। সিম মুভমেন্টে পরাস্ত হন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। বল ব্যাট ফাঁকি দিয়ে লাগে পায়ে। ১ রানে ফেরেন ফখর। টি-টোয়েন্টিতে শরিফুলের এটি ৫০তম উইকেট। চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে এই কীর্তি অর্জন করেন শরিফুল। 

সিয়াম গোল্ডেন ডাক 

প্রথম ওভারেই মেহেদীর আক্রমণ। ব্যাক অব লেন্থের বলে সিয়াম ব্যাক ফুটে গিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। টাইমিংয়ে গড়বড়। বল ব্যাটে লেগে চলে যায় মেহেদীর হাতে। গোল্ডেন ডাক সিয়াম। ১ রানে প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। ক্রিজে ফখরের সঙ্গী হারিস। 

তিন পেসার নিয়ে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে পাকিস্তানের মুখোমুখি বাংলাদেশ। লাহোরে বুধবার রাতে টস হেরে ফিল্ডিং করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় খেলাটি শুরু হবে। 

তিন পেসার নিয়ে বাংলাদেশ একাদশ সাজিয়েছে। স্পিনে শেখ মেহেদীর সঙ্গে রিশাদ হোসেন। সব শেষ আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচের একাদশ থেকে কোনো পরিবর্তন আনেনি বাংলাদেশ। 

বাংলাদেশ একাদশ

তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন, লিটন দাস (অধিনায়ক), তাওহিদ হৃদয়, শেখ মেহেদি হাসান (সহ-অধিনায়ক), জাকের আলি (উইকেটরক্ষক), শামীম হোসেন, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম।

পাকিস্তান একাদশ

ফাখার জামান, সাইম আইয়ুব, মোহাম্মদ হারিস (উইকেটরক্ষক), সালমান আলি আগা (অধিনায়ক), হাসান নাওয়াজ, শাদাব খান (সহ-অধিনায়ক), খুশদিল শাহ, ফাহিম আশরাফ, হাসান আলি, হারিস রউফ, আবরার আহমেদ।

লিটনের বড় স্বপ্ন 

নিজের দল নিয়ে লিটন অনেক বড় স্বপ্ন দেখছেন, ‘‘আমরা যদি ধারাবাহিক হতাম, তাহলে হয়তো বিশ্বের সেরা দলগুলোর ভেতরই থাকতাম। আমরা যেহেতু পেছনের দল, তার মানে আমাদের কিছু ঘাটতি আছে। ওই জিনিসগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি...কীভাবে ধারাবাহিক হওয়া যায়। প্রতিটা সিরিজে আলাদা আলাদা চ্যালেঞ্জ থাকে। চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে নিচ্ছি, দল হিসেবে কীভাবে আমরা একসঙ্গে পারফর্ম করছি, এটা হলো আসল বিষয়।’

পাকিস্তানের সতর্ক বার্তা 

সিরিজের প্রথম ম্যাচ ঘিরে সালমান আগা বলেছেন, তারা খেলবে ‘ভয়ডরহীন কিন্তু দায়িত্বশীল’ ক্রিকেট। তার ভাষায়, ‘ফিয়ারলেস, নট কেয়ারলেস ক্রিকেট’।

এমন মন্তব্যে যেন কিছুটা বার্তাই দিয়ে রাখলেন বাংলাদেশের জন্য, নিজেদের মাঠে পাকিস্তান এই সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে চায় যেকোনোভাবে। সালমান বলেন, “আমরা নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনার মধ্যে থেকে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটকে আমাদের কৌশলের অংশ করতে চাই, যাতে সেটা ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে কাজে দেয়।”

ঢাকা/রিয়াদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়