সানীর অলরাউন্ড নৈপুণ্যের পর নাসিরের সেঞ্চুরি
ক্রীড়া প্রতিবেদক : বল হাতে মধ্যভাগে প্রাইম ব্যাংককে এলোমেলো করে দেন ইলিয়াস সানী ও তানভীর হায়দার। দুই স্পিনারের দারুণ বোলিংয়ে প্রতিহত করে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন আরিফুল হক। তবুও ছোট লক্ষ্য পায় শেখ জামাল।
ব্যাট হাতে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে সানী দলকে দেন দেন উড়ন্ত সূচনা। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন নাসির হোসেন। সানী শেষ করে আসতে পারেননি। নাসির পেরেছেন। পেয়েছেন তিন অঙ্কের ছোঁয়া। তার অপরাজিত সেঞ্চুরিতে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছে।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার শেখ জামাল ৬ উইকেটে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংককে। আগে ব্যাটিং করতে নেমে প্রাইম ব্যাংক ২৩৬ রানে গুটিয়ে যায়। জবাবে ৮ বল আগে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে নুরুল হাসান সোহানের দল।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম বলে এনামুল হক বিজয় সাজঘরে ফেরেন। পেসার খালেদের বলে বোল্ড হন প্রাইম ব্যাংকের অধিনায়ক। দ্বিতীয় উইকেটে ১২০ রানের জুটি গড়েন নামান ওঝা ও রুবেল মিয়া। দুই ডানহাতি ব্যাটসম্যান শুরুর ধাক্কা সামলে দলকে ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যান।
কিন্তু হঠাৎ সানী ও তানভীরের স্পিন-বিষে নীল হয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। দলীয় ১২১ থেকে ১৪০ রান পর্যন্ত যেতে ৬ উইকেট হারায় তারা। শুরুটা করে দেন সানী। বাঁহাতি স্পিনার বোল্ড করেন ৪৬ রান করা ওঝাকে। তানভীর বোলিংয়ে এসে ফেরান ৯৫ বলে ৬৬ রান করা রুবেলকে। এরপর সানী পরপর দুই বলে নেন অলক কাপালি (১) ও নাহিদুল ইসলামের (০) উইকেট। পিছিয়ে থাকেননি তানভীর। ৩৩তম ও ৩৫তম ওভারে তার শিকার আল-আমিন (৬) ও নাঈম হাসান (১)।
সেখানে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান আরিফুল। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ঝড় তোলেন ২২ গজের ক্রিজে। ৪৯তম ওভারে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৫১ বলে ৭৪ রানের ইনিংস উপহার দেন আরিফুল। মাত্র ২ চার ও ৭ ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংসটি। তার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ২৩৬ রানের পুঁজি পায় প্রাইম ব্যাংক।
বল হাতে তানভীর ৪৩ রানে ৩টি ও সানী ৩৫ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন। ২ উইকেট পেয়েছেন পেসার সালাউদ্দিন শাকিল।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সানীর সঙ্গী হয়ে মাঠে নামেন ইমতিয়াজ হোসেন। দুজন ৪৫ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। দশম ওভারে ইমতিয়াজকে (২৬) ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন নাহিদুল। আব্দুর রাজ্জাক টিকতে দেননি নতুন ব্যাটসম্যান দিলশান মুনাবীরাকে (১২)। একপ্রান্ত আগলে সানী রান তুলে যাচ্ছিলেন ভালোভাবেই। তাকে তৃতীয় উইকেটে সঙ্গ দেন নাসির। দুজন ৯৩ রান যোগ করেন। রাজ্জাক নিজের দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে এ জুটি ভাঙেন।
ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়ে যাওয়া সানী এলবিডব্লিউ হন ৬৭ রানে। ১০৪ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় সাজান ইনিংসটি। অধিনায়ক সোহান হিট উইকেট হয়ে ফেরেন মাত্র ৫ রানে। এরপর ম্যাচ নিজের করে নেন নাসির। সোহান যখন আউট হন তখনও জয়ের জন্য ৪৮ রান লাগত শেখ জামালের।
নতুন ব্যাটসম্যান তানভীরকে দর্শক বানিয়ে নাসির একাই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। নব্বইয়ের ঘরে নাসির ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। মনির হোসেনকে চার মেরে ৮৬ থেকে ৯০-এ পৌঁছান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর ওই ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে এক ছক্কা ও চার মেরে নাসির তুলে নেন লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তার সপ্তম সেঞ্চুরি। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর তাকে থামানো যায়নি। ১২ চার ও ৩ ছক্কায় সাজানো ১১২ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন জাতীয় দলে বাইরে থাকা এই ব্যাটসম্যান। তানভীরের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান।
বল ও ব্যাট হাতে অবদান রাখায় ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন ইলিয়াস সানী।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ এপ্রিল ২০১৯/ইয়াসিন/পরাগ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন