ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘মাশরুমই একমাত্র আদর্শ খাবার’

মেহেদী হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৭, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘মাশরুমই একমাত্র আদর্শ খাবার’

বিশিষ্ট মাশরুম গবেষক অধ্যাপক ড. আহমেদ ইমতিয়াজ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। ড. আহমেদের জন্ম ১৯৭৯ সালে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায়। ১৯৯৩ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৯৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন তিনি। সেখান থেকে ১৯৯৮ সালে বিএসসি (সম্মান) এবং ১৯৯৯ সালে এমএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে ২০০৫-২০১২ পর্যন্ত কোরিয়া এবং জাপানে পিএইচডি এবং পোস্টডক্টরাল পর্যায়ে মাশরুম নিয়ে সফলভাবে গবেষণা করেন।

বাংলাদেশে মাশরুম গবেষণার সমস্যা ও সম্ভাবনার নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। এই মাশরুম গবেষকের সঙ্গে কথা বলেছেন রাইজিংবিডির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রতিনিধি মেহেদী হাসান।

রাইজিংবিডি : মাশরুম সম্পর্কে য়দি বিস্তারিত যদি বলেন...।
ইমতিয়াজ : ‘মাশরুম কী?’ এটা নতুন কোনো প্রশ্ন না। মাশরুম শব্দটি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন জাতির মানুষের কাছে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমন চিকিৎসকের কাছে এটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধের উৎস, শিল্পীর কাছে অনুকরণীয় সৌন্দর্যের প্রতীক, স্থপতিদের কাছে মসজিদ, মন্দির, স্মৃতিসৌধ ও অট্টালিকা নির্মাণের নিদর্শন এবং অলংকার তৈরিতে স্বর্ণকারদের নিকট গহনার আকার আকৃতিতে নতুনত্ব আনয়নের কৌশল হিসেবে বিবেচিত হয়।

ডাক টিকিট এবং রাজকীয় দ্রব্য তথা দুর্লভ ও আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবেও বিভিন্ন দেশে মাশরুম ব্যবহার হয়ে থাকে। বাংলাদেশে মাশরুম ব্যাঙের ছাতা নামে পরিচিত। আসলে কিন্তু তা নয়। কারণ, মাশরুমের সঙ্গে ব্যাঙের নুন্যতম সম্পর্কও নেই। পাতাহীন কান্ডহীন ফুলহীন ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদের একটি ফলদেহ হলো মাশরুম, যা পুষ্টিসম্পন্ন বলবর্ধক খাদ্য এবং ঔষধ হিসেবে মহামূল্যবান।

 


রাইজিংবিডি : কিভাবে মাশরুম গবেষণায় এতো আগ্রহী হলেন?
ইমতিয়াজ : এমএসসি এবং এমফিল পর্যায়ে আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্লান্ট মাইকোলজি-প্যাথোলজির ছাত্র ছিলাম। পরে বিদেশে মাশরুম নিয়ে পিএইচডি এবং তিনবার পোস্টডক করতে গিয়ে এ বিষয়ে আমার আগ্রহ অনেক বেড়ে যায়। আর মাশরুম গবেষণা এখন আমার পেশা তো বটেই, নেশাও।

রাইজিংবিডি : কোথায় কোথায় মাশরুম নিয়ে গবেষণা করেছেন?
ইমতিয়াজ : মাশরুম গবেষণার সুবাদে কোরিয়া, জাপান, চীন, আমেরিকাসহ পনেরোটি দেশে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। কিন্তু আমার মাশরুম গবেষণার তীর্থস্থান ছিল কোরিয়া এবং জাপান। ২০০৫-২০০৮ সময়ে দ.কোরিয়ার ইনচন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আধুনিক মাশরুম চাষ ও তার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রভাব নিয়ে গবেষণা করে পি-এইচডি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিডিবিএম নামক জিন ব্যাংকে মাশরুমের ডিএনএ এনালাইসিস ও মলেকুলার সনাক্তকরণ টেকনোলজির ওপর পোস্টডক্টরেট করি। এমআইএফ এর ফেলোশিপ নিয়ে ২০১০ সালের প্রথম দিকে ভিজিটিং ফেলো (কান্ট্রি রিপ্রেজেনটাটিভ) হিসেবে জাপানে যাই। পরবর্তীতে ২০১০-২০১২ পর্যন্ত জাপান সরকারের অত্যন্ত সম্মানীয় ফেলোশিপ জেএসপিএস পোস্টডক্টরাল ফেলো হিসেবে জাপানের বিখ্যাত কিউশু বিশ্ববিদ্যালয়ে মাশরুমের মেডিসিনাল প্রোপারটিজের উপর গবেষণা সম্পন্ন করি।

রাইজিংবিডি : খাদ্য এবং ওষুধ হিসেবে মাশরুম এতো গুরুত্বপূর্ণ কেনো?
ইমতিয়াজ : বাংলাদেশ তথা পৃথিবীতে পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। অস্বাভাবিক হারে জনসংখ্যার বৃদ্ধি এবং কৃষিতে সেকেলে চাষ পদ্ধতির কারণে খাদ্য চাহিদা পূরণ প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্থায় চরম খাদ্য চাহিদা মোকাবেলায় প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি ব্যবস্থার কথা বিবেচনার পাশাপাশি নতুন ও বিকল্প খাদ্যের উৎস সন্ধানে ব্যাপকভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। শুধু শর্করা সমৃদ্ধ খাদ্যের সরবরাহই এ সমস্যার সমাধান দিতে পারে না। বরং এমন একটি সুষম আদর্শ খাদ্য চাই যা সত্যিকারেই প্রয়োজনীয় পুষ্টির উৎস হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। বিশেষ করে খাদ্য বস্তুতে শর্করার পাশাপাশি থাকতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষ, ভিটামিন, ফাইবার এবং খনিজ পদার্থ।

মাশরুমই হতে পারে সেই কাঙ্খিত আদর্শ খাদ্যবস্তু। আর মাশরুমের পুষ্টিমান সবজি এবং মাংসের মাঝামাঝি। মাছ মাংস ডিম খেলে পর্যাপ্ত আমিষ পাওয়া যায় বটে কিন্তু অতি প্রয়োজনিয় উপাদান ভিটামিন ও ফাইবার মোটেও পাওয়া যায় না। অথচ প্রাণিজ আমিষের সাথে প্রবেশ করে শরীরে বাসা বাঁধে অতি ক্ষতিকর চর্বি যা হার্টের প্রধান শত্রু। সাধারণ সবজি মাছ মাংস ও ডিমের ঠিক বিপরীত অর্থাৎ শর্করা ও আমিষের চাহিদা মিটাতে ব্যর্থ।

সুতরাং মাশরুমই একমাত্র আদর্শ খাবার যা মানব শরীরের জন্য প্রয়োজন সব মৌলিক খাদ্য উপাদান সুসহনীয় মাত্রায় সরবরাহ করে। নিয়মিত মাশরুম খেলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ভেঙ্গে মেদভুড়ি দূর করে এবং দীর্ঘ দিন যাবত শরীরে অবস্থান করা অনেক জটিল ও কঠিন রোগ নিরাময়েও দারুন কার্যকরী।

 


রাইজিংবিডি : ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য মাশরুম কিভাবে কার্যকরি ?
ইমতিয়াজ : শরীরে ব্লাড থেকে গ্লুকোজ পরিবহণের কাজ করে ইনসুলিন। আর এ ইনসুলিন কোন কারণে তৈরি না হলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। যাকে ডায়াবেটিকস বলা হয়। আর মাশরুম প্রধানত তিনটি কাজ করে। প্রথমত, মানবদেহে যেসব কোষ ইনসুলিন ঠিকমত তৈরি করতে পারে না তাদের কার্যকর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও মাশরুম অকার্যকর ইনসুলিনকে কার্যকর করতে সহায়তা করে। এভাবে ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য মাশরুম অত্যন্ত কার্যকরি ভূমিকা পালন করে। ডায়াবেটিকস আক্রান্ত রোগী কখন কি পরিমাণ মাশরুম খাবে সেটা নির্ধারণ করে দেই।

রাইজিংবিডি : ডায়াবেটিকস রোগী মাশরুম কিভাবে সেবন করবে ?
ইমতিয়াজ : ডায়বেটিকস রোগীরা নিয়মিত প্রতিদিন দুইবার রুটি আহার হিসেবে সেবন করেন। সেটা সাধারণত গমের আটা দিয়ে তৈরি করা হয়। ঠিক আমি সেভাবে গমের আটাকে মূল উপাদান হিসেবে ধরে পরিমাণ মত ভুট্টার আটা ও মাশরুমের গুড়া মিশিয়ে প্যাকেটজাত করি। রোগীরা যেভাবে রুটি নিয়মিত খান সেভাবেই খাবেন। তাহলে ডায়াবেটিকসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

রাইজিংবিডি : বাংলাদেশে মাশরুমের চাষ ও গবেষণার বর্তমান অবস্থা কেমন?
ইমতিয়াজ : খুবই হতাশাজনক ! বর্তমানে বিশ্বব্যাপি অতি শুরুত্ব সহকারে মাশরুমের চাষ ও গবেষণা হলেও বাংলাদেশ হতাশাজনকভাবে পিছিয়ে। বেসরকারি উদ্যোগে যা হয় সেটা একেবারেই সীমিত। আর সরকারি উদ্যোগ বলতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কেন্দ্র’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে যা ঢাকার অদূরে সাভারে অবস্থিত। সরকারি আর দশটা প্রতিষ্ঠানের মতো এই প্রতিষ্ঠানও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং বদলি রোগে জর্জরিত। অনভিজ্ঞরা এসে কিঞ্চিত অভিজ্ঞ হতে না হতেই বদলি। ফলে সেই শ্বেত হস্তি!

সুতরাং অদূর ভবিষ্যতে এ প্রতিষ্ঠানকে মানসম্মত গবেষণার সক্ষমতা অর্জন করতে হলে সত্যিকারের অভিজ্ঞ মাশরুম গবেষকদের যথাযথ মর্যাদা দিয়ে গবেষণার সঙ্গে তাঁদের কীভাবে যুক্ত করা যায় তার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। অন্যথায়, আপন জাতের কানা ভালো ফর্মুলায় চললে দলকানাদের নিয়ে কানামাছিই খেলা হবে, গবেষণা হবে না।

রাইজিংবিডি : বাংলাদেশে মাশরুম ভিত্তিক কৃষি ও শিল্প কারখানা গড়ে উঠার সম্ভাবনা কতটুকু?
ইমতিয়াজ : বাংলাদেশের এ্যাগ্রোক্লাইমেট এবং এই অঞ্চলের মানুষের জীবন যাপনের ধরণ মাশরুম কৃষির জন্য খুবই উপযোগী। এই কৃষির জন্য ফসলি জমির দরকার হয় না বরং শোবার ঘরের মতো ছোট ছোট ঘরেই মাশরুম চাষ করা যায়। কাজটি হালকা এবং নিজ বাড়িতে হওয়ায় নারী-পুরুষ, স্কুলগামী ছেলেমেয়ে এবং বৃদ্ধরাও এই কৃষিতে অংশ নিতে পারে। সুতরাং পরিবারের সবাই তাদের স্ব-স্ব কাজের পাশাপাশি মাশরুম চাষে অবদান রাখতে সক্ষম।

বাংলাদেশে মহিলারা সাধারণত বাড়ির অভ্যন্তরে কাজ করতে অভ্যস্ত। তাদের জীবনযাত্রা বিবেচনা করলে বলা যায় যে, মাশরুম চাষ মহিলাদের জন্য খুবই উপযোগী। কৃষি কাজে ক্রমবর্ধমান রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার পরিবেশকে ক্রমেই হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আশার দিক হচ্ছে মাশরুম চাষ করতে কোনো রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার হয় না। তাই এই কৃষি শতভাগ পরিবেশ বান্ধব। অন্যান্য ফসল চাষের তুলনায় মাশরুম আবাদের মাধ্যমে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে কৃষকের হাতে অর্থ ফিরে আসে। মাশরুম চাষে ব্যবহৃত সাবস্ট্রেট (কাঠের গুড়া) পরিত্যাক্ত হলে তা অন্যান্য কৃষি কাজে সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। সাবস্ট্রেট উদ্ভিজ্জ পদার্থ হওয়ায় এবং রাসায়নিক উপাদান না থাকায় আদর্শ জৈব সার বিবেচনা করা যেতে পারে।

ম্যালনিউট্রিশন বাংলাদেশের অন্যতম বড় সমস্যা। অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য ক্রয় করা দরিদ্র মানুষের পক্ষে মোটেও সম্ভব হয় না। ঘরে ঘরে মাশরুম চাষ এ সমস্যার সমাধান করতে পারে সহজেই। বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম জনগোষ্ঠির দেশ হওয়ায় বেকারত্ব এখানকার বড় সমস্যা। শহর ও গ্রাম-গঞ্জের ঘরে ঘরে মাশরুম কৃষি বিকল্প ও নতুন কাজের ক্ষেত্র তৈরী করে বেকারত্ব মোচনে অবদান রাখতে পারে। ফলে এই কৃষি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করে দারিদ্রতা দূর করণে যথার্থ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমি মনে করি।

রাইজিংবিডি : বাংলাদেশে মাশরুম চাষীদের প্রধান বাধা কী কী বলে আপনি মনে করেন?
ইমতিয়াজ : আমাদের দেশে এখনও ট্রাডিশনাল পদ্ধতিতেই মাশরুম চাষ হয়। এখানে মাশরুম চাষীদের বেশকিছু সমস্যা থাকলেও দুটি সমস্যাই প্রধান। এক. বীজের (স্পন) অভাব। প্রশিক্ষণের জন্য অল্প পরিমাণ বীজ তৈরি হলেও একজন চাষীকে মাশরুম চাষের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠার জন্য নূন্যতম যে পরিমাণ বীজ দরকার তার পাঁচ শতাংশ বর্তমানে উৎপাদন হয় না। দুই. উৎপাদিত মাশরুম বিক্রির স্থান বা ক্রেতা নেই। ফলে আগ্রহী কৃষক প্রশিক্ষণ নিয়ে অতি কষ্টে বীজ সংগ্রহ করে মাশরুম চাষ করে। কিন্তু সহজে বিক্রি করতে না পারায় কিংবা যথাযথ মূল্য না পাওয়ায় হতাশ হয়ে চাষ বন্ধ করে দেয়।

রাইজিংবিডি : বাংলাদেশে মাশরুমের ভিত্তিক কৃষি বা শিল্প কারখানা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আপনার পরিকল্পনা কি?
ইমতিয়াজ : আমার গবেষণা, চিন্তা ও মনন জুড়ে যেহেতু মাশরুম তাই এটা নিয়ে আমার স্বপ্ন ও পরিকল্পনাও অনেক। প্রাথমিকভাবে কয়েকজন তরুণ যুবকের প্রতিষ্ঠান ‘মাশপিয়া’তে মাশরুম গবেষণার কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে শুরু করা হয়েছে। মাশরুম চাষীরা যেন নিরাশ না হয় সেই জন্য সারা দেশের মাশরুম চাষীদের নিকট থেকে মাশরুম ক্রয় করে ‘মাশটেক এন্টারপ্রাইজ’ এর মাধ্যমে মাশরুম সমৃদ্ধ খাদ্যপণ্য তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছে।

রাইজিংবিডি : বর্তমানে কি কি ধরণের খাদ্যপণ্য বাজারজাত করা হয়েছে ?
ইমতিয়াজ : ডায়বেটিস আটা, মাশরুম-কুমড়া বড়ি, আচার, ফার্মা গ্রেড মাইগার্ড এবং তাজা/শুকনো মাশরুম। এ সব কর্মকান্ডে আমি প্রতিষ্ঠানটিকে জনস্বার্থে সার্বিক সহযোগিতা করি। তবে মাশরুম ভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে তোলার জন্য সরকারি/বেসরকারি কোনো উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসলে সতঃস্ফুর্তভাবে আমি সাধ্যমত সহযোগিতা করব।

রাইজিংবিডি : মাশরুম সম্পর্কিত জ্ঞান অন্যদের মাঝে পৌছাতে কি কি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন?
ইমতিয়াজ : তেমন কিছু করা হয়নি ঠিক, কিন্তু একেবারে বসেও নেই। যেমন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান ‘মাশইনফো’ এর মাধ্যমে বেকার যুবক ও আগ্রহী চাষীদের খুব কম খরচে মাশরুম চাষের ওপর প্রশিক্ষণ দেই। জনসচেতনতার জন্য এ বিষয়ে পত্রিকায় কয়েকটা আর্টিকেল লিখেছি। এমনকি ‘মাশরুম বায়োলজি’ নামে বাংলায় একটি বই লিখেছি, যা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সিলেবাসের অংশ হিসেবে পড়া হয় এবং বলা যায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সিলেবাস অনুযায়ী পড়ার উপযোগী মাশরুমের ওপর এটাই বাংলাদেশে প্রথম বই।

রাইজিংবিডি : বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন মাশরুমের সংখ্যা কত?
ইমতিয়াজ : এ বিষয়ে আমরা সবাই অন্ধকারে আছি। বাংলাদেশে মাশরুম ফ্লোরার ওপর কোনো গবেষণা হয়নি। তাই এ সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়া অসম্ভব। তবে এ ব্যাপারে আমার প্রবল ইচ্ছা আছে। চার-পাঁচ বছর মেয়াদি বড় কোনো প্রজেক্ট পেলে বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন সব মাশরুম সংগ্রহ ও সনাক্ত করে তাদের কালচার/জিন ব্যাংক তৈরি করে তা সংরক্ষণ করা।

রাইজিংবিডি : রাইজিংবিডিকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ইমতিয়াজ : আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।





রাইজিংবিডি/২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫/মেহেদী হাসান/নিয়াজ/নওশের

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়