ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কারাগার যখন বিনোদন কেন্দ্র

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কারাগার যখন বিনোদন কেন্দ্র

দেখতে বাসার মতো মনে হলেও আসলে এটি কারাগার

আহমেদ শরীফ : জেলখানায় কঠিন জীবন কাটান কয়েদিরা। তবে পৃথবীতে এমন কিছু কারাগার আছে, যেগুলো অনেকটা বিনোদন কেন্দ্রের মতোই। সেখানে কয়েদিদের জন্য আলাদা কক্ষ, টিভি, ফ্রিজ আছে। এক কারাগারে তো বিনোদনের জন্য স্কি করা, ঘোড়ায় চড়ার সুযোগও আছে। সেসব অদ্ভুত কারাগার কেমন চলুন জেনে নিই।

এডিওয়েল প্রিজন : স্কটল্যান্ডের এডিওয়েল জেলখানাটি অন্য সব জেলখানা থেকে আলাদা। কারণ সেখানে কয়েদিরা শেখার সুযোগ পায়। তারা যে অপরাধের জন্য জেলখানায় এসেছেন, তারা সে অপরাধ না করার শিক্ষা দেওয়া হয় কয়েদিদের। আর জেলখানাটি সব সময় ঝকঝকে পরিষ্কার করে রাখা হয়। এ ছাড়া জেলখানার সব আসবাব আধুনিক ও রুচিসম্মত।

সলেনটুনা প্রিজন : সুইডেনের অনেক জেল খানায় পর্যাপ্ত বন্দি না থাকায় কিছু জেলখানা বন্ধ করে দিচ্ছে দেশটির সরকার। সুইডেনের সলেনটুনা জেলখানায় কয়েদিরা নিজেদের খাবার নিজেরা তৈরি করতে পারেন। তাদের জন্য জিম আছে। আর সোফায় আরামে বসে টিভি দেখেন কয়েদিরা।

আরানজুয়েজ প্রিজন : জেলখানায় নারী কয়েদির বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হলে, সে বাচ্চাকে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে স্পেনের আরানগুয়েজ জেলখানায় নারী কয়েদির শিশু জন্ম নিলে তার সঙ্গে পরিবারও জেলখানায় থাকার সুযোগ পায়। আর শিশুটিকে ৩ বছর বয়স পর্যন্ত রাখা হয় জেলখানার পারিবারিক পরিবেশে।

জাস্টিস সেন্টার লিওবেন : অস্ট্রিয়ার এই কারাগারে কয়েদিদের সব সময় সম্মানের চোখে দেখা হয়। সেখানে কয়েদিরা নিজেদের পোশাক পরেন, যাতে করে পরে স্বাভাবিক জীবনের সঙ্গে খাপ খেয়ে চলতে পারেন। ১৫ জনের একেকটি দলের জন্য আলাদা সেল আছে। প্রত্যেকের জন্য আলাদা বাথরুম আছে। ঘরের ভেতরের দেয়াল উলের আর জানালাগুলো বিশাল কাঁচের তৈরি। কয়েকটি সেলে তো ব্যালকনিসহ বারও আছে।

জেভিএ ফুলসবুটেল প্রিজন : জার্মানির এই কারাগারটি যেন একটি রূপকথার গল্পের জায়গা। কয়েদিরা তাদের নিজেদের জামা কাপড় পরিষ্কার করে আধুনিক ওয়াশিং মেশিনের মাধ্যমে। কয়েদিদের প্রত্যেকের জন্য আলাদা কক্ষ আছে। লিভিং রুম আছে। অনেকটা কলেজের ডরমেটরির মতো।


শাম্প ডোলন প্রিজন : সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত এই কারাগারটি দেখে কোনো বিলাসবহুল হোটেলের মতোই লাগে। কারাগারটি সংস্কারে ৪০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়। আগে কারাগারটিতে অতিরিক্ত কয়েদি থাকায় তাতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে এখন কারাগারটি সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে গড়ে উঠেছে। কয়েদিদের প্রত্যেকের আলাদা বাথরুম আছে।

বাসতোয় প্রিজন : নরওয়ের বাসতোয় দ্বীপে গড়ে তোলা হয়েছে এই কারাগার। এখানে কয়েদিরা কাঠের তৈরি কটেজে থাকেন। শিথিল নিরাপত্তায় কয়েদিরা স্কি করা, ঘোড়ায় চড়া, টেনিস খেলা, মাছ ধরার মতো সব বিনোদনের সুযোগ পান। তিন বছর আগে মানবিক মূল্যবোধকে সম্মান জানানোর জন্য এই কারাগারটি পুরস্কারও পেয়েছে।

হলডেন প্রিজন : নরওয়েতে মানবাধিকার সংরক্ষণের বিষয়টি খুব জোরালোভাবে বিবেচনা করা হয়। তাই দেশটির আরেকটি কারাগার হলডেন প্রিজনে থাকা ২৫২ জন কয়েদির প্রত্যেকের জন্য আছে দামি সব আসবাব, টেলিভিশন ও ফ্রিজ। কয়েদিদের জন্য আছে রেকর্ডিং স্টুডিও। আর কারাগারে সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখতে কারা রক্ষীরা কোনো অস্ত্র সঙ্গে রাখেন না। কয়েদিদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে ভালো নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয় এই কারাগারে।

কেরেসো শেটুমাল প্রিজন : মেক্সিকোর এই কারাগারে যদি দুজন কয়েদির মাঝে বিরোধ দেখা দেয়, তখন তাদের সব সময় মারামারি করা থেকে বিরত রাখতে বক্সিংয়ের রিংয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কয়েদিরা নিজেরা ছবি এঁকে তা অন্য কয়েদির কাছে বা পর্যটকদের কাছে বিক্রি করতে পারেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/এসএন/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়