ঢাকা     বুধবার   ০৮ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের জন্য ইউএনএইচসিআরের ৩৫ কোটি টাকা

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রোহিঙ্গাদের জন্য ইউএনএইচসিআরের ৩৫ কোটি টাকা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের সাময়িক আশ্রয়কেন্দ্র এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়নে ৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে। এই টাকা দিয়ে দ্রুত রাস্তা নির্মাণ করা হবে। কুতুপালং ও বালুখালীর ২ হাজার একর জমিতে এসব রাস্তা হবে।

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ইউএনএইচসিআরের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘ইউএনএইচসিআর অবকাঠামো উন্নয়নে যে ৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে তা দ্রুত পেয়ে যাব। আশা করছি, কালকেই এই টাকা পেয়ে যাব। এই টাকা দিয়ে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের জন্য রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুত শেষ করা হবে। কারণ, সেনাবাহিনী অভিজ্ঞ, তাদের দ্বারাই নিখুঁত কাজ করা সম্ভব।’

জাতিসংঘের এই সংস্থাটি শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, পয়োঃনিষ্কাশন, স্বাস্থ্যসেবাসহ অন্যান্য বিষয়ে সক্রিয় সহযোগিতা করার এবং পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন ক্যাম্পে শেল্টার নির্মাণ করা হচ্ছে। স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যসেবা, পানি সরবরাহ যে পর্যায়ে রয়েছে, হাইকমিশনার তা দেখেছেন। এগুলো কীভাবে আরো উন্নত করা যায়, সে বিষয়ে উনারা (ইউএনএইচসিআর) সাহায্য করতে প্রস্তুত।’

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘জাতিসংঘের এই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কী ধরনের সহযোগিতা চায়। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য সাময়িক যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তাতে তারা সক্রিয় সহযোগিতা করতে চায়। পাশাপাশি সরকার যদি পরে রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ীভাবে ভাসানচরে কিছু করতে চায়, সে ক্ষেত্রেও সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা দিতে চায় সংস্থাটি।’

গত এক মাসে সাড়ে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে বলে জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য কেউ প্রস্তুত ছিলাম না, মরার উপর খাঁড়ার ঘা বলা চলে। বন্যা যেতে না যেতেই এ সমস্যা আমাদের সামনে চলে আসে। তারপরও আমরা মানিবক দৃষ্টিকোণ থেকে তাৎক্ষণিক তাদের আশ্রয় দিয়েছি, খাওয়ার ব্যবস্থা, চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি।’

রোহিঙ্গাদের শরণার্থী মর্যাদা দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা সময়ের ব্যাপার। সময় বলে দেবে।’

তিনি বলেন, ‘এরা মিয়ানমারের নাগরিক। আমরা পরিষ্কারভাবে বলছি, এদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে। এই সমস্যা মিয়ানমারের, এই সমস্যা তাদেরকেই সমাধান করতে হবে।’

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে দেরি হলে তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।

রোহিঙ্গাদের শরণার্থী নয় অনুপ্রবেশকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বলা হচ্ছে এরা অনুপ্রবেশকারী। কারণ, এ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে, এই আলোচনার পর যদি দেখা যায় এটা দীর্ঘমেয়াদী হয়, তখনই বিষয়টি বিবেচনায় আসবে। এখন কিন্তু কোনো কিছু বলার আসার সময় হয়নি।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারীদের সদ্যপ্রসূত সন্তানদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘যেসব শিশু আশ্রয়কেন্দ্রে জন্ম নিচ্ছে বাংলাদেশ তাদের নাগরিকত্ব দিচ্ছে না। শুধুমাত্র বার্থ রেজিস্ট্রেশনটা দিচ্ছে। ওখানে লেখা হচ্ছে, এরা মিয়ানমারের নাগরিক।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সঙ্গে বৈঠক করার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ইউএনএইচসিআরের হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭/নঈমুদ্দীন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়