ঢাকা     রোববার   ১৯ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

চিকিৎসক ছেলের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ বাবা-মাকে নির্যাতনের অভিযোগ

নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ৭ মে ২০২৪  
চিকিৎসক ছেলের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ বাবা-মাকে নির্যাতনের অভিযোগ

অভিযুক্ত চিকিৎসক সুজাউদ্দৌলা।

নাটোরে গুরুদাসপুরে চিকিৎসক ছেলে সুজাউদ্দৌলা’র বিরুদ্ধে বাবা-মাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ছেলে সুজাউদৌল্লা এখন গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার। রক্ত পানি করে চিকিৎসক বানানো সেই ছেলের কাছেই জায়গা হচ্ছে না বৃদ্ধ বাবা-মার।

চিকিৎসক ছেলে ভরণপোষণ না দিয়ে উল্টো পিতামাতাকে বাড়ি থেকে বিতারিত করতে চালাচ্ছেন নির্যাতন। ছেলের নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে এবং ভরণপোষণের দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বৃদ্ধা মা মনিরা বেগম।

অভিযুক্ত চিকিৎসক সুজাউদৌল্লা গুরুদাসপুর পৌর সদরের আনন্দনগর মহল্লার খাইরুল ইসলামের ছেলে। তিনি প্রায় দেড় বছর ধরে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারের দায়িত্বে আছেন।

বৃদ্ধা মা মনিরা বেগম বলেন, গরিব হওয়া সত্তেও ছেলেকে চিকিৎসক বানিয়েছি। ছেলেকে ডাক্তারি পড়াতে গিয়ে সহায় সম্বল সব হারিয়ে আমরা এখন নিঃস্ব। একমাত্র ছেলে হওয়ায় মাথাগোঁজার ঠাঁইটুকুও লিখে দিয়েছি ছেলের নামেই।

তিনি আরও বলেন, ছেলে চিকিৎসক হলেও আমাদের ভরণপোষণ দেয় না। পেটের তাগিদে অসুস্থ শরীর নিয়ে ভ্যান চালায় আমার স্বামী। যা আয় হয় তা দিয়ে কোনোমতে দিনাতিপাত করতে হয়। এখন বাড়ি থেকে আমাদের বের করে দিতে চিকিৎসক ছেলে নিয়মিত শারীরিক-মানসিক নির্যাতন শুরু করেছে। ছেলের নির্যাতন সইতে না পেরে প্রতিকার চেয়ে ইউএনও অফিসে অভিযোগ দিয়েছি।

পিতা খাইরুল ইসলাম বলেন, বাড়ি থেকে বের করে দিতে চিকিৎসক ছেলে সুজাউদৌল্লা অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করছে। গায়ে হাত তুলছে। অথচ সর্বস্ব শেষ করে ছেলেকে চিকিৎসক বানিয়েছি। ছেলের নামে লিখে দেওয়া ভিটেমাটি ফেরত চাই আমি।

অভিযুক্ত চিকিৎসক সুজাউদ্দৌলা বলেন, পিতামাতা আমাকে ডাক্তারি পড়ার খরচ দেয়নি। তাছাড়া পিতামাতা হওয়ার যোগ্যতাও হারিয়ে ফেলেছেন খাইরুল-মনিরা দম্পতি। তারপরও আমি তাদের ভরণপোষণ দিতে চাইলে আমার কাছে তারা আসেন না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, পিতামাতার বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার চিকিৎসক সুজাউদৌল্লাকে সতর্ক করেছি। কিন্তু সুজাউদৌল্লা কোনো কথাই শুনছেন না।

চিকিৎসক সুজাউদৌল্লার বিরুদ্ধে মায়ের দায়ের করা অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, ইতোমধ্যে চিকিৎসক সুজাউদৌল্লাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরিফুল/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়