ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

হারিয়ে যাচ্ছে বর্ষার কদম ফুল

আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১৫ জুন ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হারিয়ে যাচ্ছে বর্ষার কদম ফুল

কদম ফুল

আনোয়ার হোসেন শাহীন, মাগুরা : প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে চির চেনা বর্ষার কদম ফুল। কদমের শুভ্ররাগে হৃদয় রাঙিয়ে নেওয়ার সুযোগ এখন শহুরে লোকের কমই আছে।

শুধু শহর নয় গ্রাম থেকেও হারিয়ে যাচ্ছে কদম। চোখ জুড়ানো  ঘন সবুজ পাতার মধ্যে সাদা-হলুদ মঞ্জুরির ফুলের চির চেনা কদম গাছ এখন চোখে পড়ে কমই।

‘বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান, আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান/ মেঘের ছায়ায় অন্ধকারে রেখেছি ঢেকে তারে /এই-যে আমার সুরের ক্ষেতের প্রথম সোনার ধান/ আজ এনে দিলে, হয়তো দিবে না কাল--/ রিক্ত হবে যে তোমার ফুলের ডাল।/ এ গান আমার শ্রাবণে শ্রাবণে তব বিস্মৃতি স্রোতের প্লাবনে/ ফিরিয়া ফিরিয়া আসিবে তরণী বহি তব সম্মান’  কবিগুরুর বিখ্যাত এই গানের শুভ্র ‘কদম ফুল’ এখন আর রাঙাতে পারে না মানুষের মন।

একসময় মাগুরা জেলার সর্বত্র চোখে পড়ত কদম গাছ। বর্ষার আগমনের সঙ্গে সঙ্গে চোখে পড়ত সেই কদম ডালে ফোটা ফুল। বর্ষার আগমনী বার্তা নিয়ে আদিকাল থেকে কদম আমাদের প্রকৃতির শোভা বর্ধন করে আসছে।
শুধু সৌন্দর্য্য নয়, ভেষজ গুণের পাশাপাশি কদমের রয়েছে অর্থনৈতিক গুরুত্বও।

যান্ত্রিক সভ্যতা ও নগরায়ণের যুগে মানুষ সামান্য প্রয়োজনেই কদমকে তুচ্ছ গাছ মনে করে কেটে ফেলছে। অন্যান্য গাছের মতো যত্ন করে এখন আর কেউ এ গাছ রোপণ করে না। কোথাও অযত্ন-অবহেলায় বেড়ে উঠে দু’একটি গাছ। নির্মাণ কাজে শাটারিংয়ে ও ম্যাচ ফ্যাক্টরির কাঁচামাল হিসেবে কদম কাঠ ব্যাপকহারে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

দ্রুত কমে যাচ্ছে কদম গাছ। বীজ থেকে চারা হয়। চারা গজানোর ৯-১০ বছরের মধ্যে ফুল ফোটে। আষাঢ় মাসে গাছে ফুল আসে। ফুল গুচ্ছ আকারে গোলাকার সাদা বর্ণের হয়ে থাকে। ফুলে সৌরভ না থাকলেও এর সাদা-হলুদ রঙ নজর কেড়ে নেয়। কদম গাছ একশ’ ফুট লম্বা ও ছয়-সাত ফুটেরও বেশি চওড়া হয়ে থাকে।

বন্যা ও খরা সহিষ্ণু এই গাছ শতাব্দীর পর শতাব্দী বেঁচে থাকতে পারে।

বাংলা একাডেমীর লোকজ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংগ্রাহক ও মহম্মদপুর উপজেলার ইতিহাস ঐতিহ্যে গ্রন্থের লেখক মোহাম্মদ সালাহ্ উদ্দিন আহমেদ মিলটন বলেন, ‘মাগুরা অঞ্চলে এক সময় প্রচুর কদম গাছ চোখে পড়ত। কদমকে আন্দোলিত করে প্রকৃতিতে আসত বর্ষা। কদম ছাড়া বর্ষা বেমানান। প্রকৃতির ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে অন্য গাছের পাশাপাশি কদম গাছ রোপণ করা প্রয়োজন।’

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ জুন ২০১৪/শাহ মতিন টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়