নেত্রীর ভিশন বাস্তবায়নই আমার লক্ষ্য: রিপন
ঢাকা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব। নির্বাচন নিয়ে তার প্রত্যাশা, জনকল্যাণমূলক ভাবনা ইত্যাদি বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন রাইজিংবিডির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এস কে রেজা পারভেজের সঙ্গে।
রাইজিংবিডি : উপ-নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চেয়েছেন। সংসদ সদস্য পদে কেন নির্বাচন করতে চান?
কামরুল হাসান রিপন : ধন্যবাদ। এই এলাকায় আমি ছোট থেকে বড় হয়েছি। এলাকার সংকট, সমস্যা, সম্ভবনা আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। ছাত্রজীবন থেকে এলাকাবাসীর দুঃখ-কষ্ট দেখেছি। তখন থেকেই স্বপ্ন ছিল, যদি কখনো সুযোগ হয় আমি জনপ্রতিনিধি হয়ে কাজ করবো। মানুষের পাশে আরো বিস্তৃত অর্থে দাঁড়ানোর জন্য আমি সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করতে চাই।
রাইজিংবিডি : মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
কামরুল হাসান রিপন : বিএনপির দুঃশাসনের সময় আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি। তখন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিরোধী দলের হামলা-মামলার শিকার হয়েছি বহুবার। কতবার যে জেলে যেতে হয়েছে তার হিসাব নাই! কিন্তু লক্ষ্যে অটুট থেকেছি। ওয়ান ইলেভেনের সময় নেত্রীর মুক্তি আন্দোলনে রাজপথে থেকেছি। তখন পুরনো ঢাকায় তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলেছি। ছাত্র-জনতার সেই আন্দোলনে একদিনে পাঁচটি মামলা হয়। প্রত্যেকটি মামলায় পাঁচশ আসামি। প্রত্যেকটি মামলার প্রধান আসামি আমি। বিরোধী দলে থাকাকালীন এমন কোনো নির্দেশনা নেই যার বাস্তবায়নে আমি ঝাঁপিয়ে পড়িনি।
এখনও অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর করোনা বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে, তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে রাজপথে ঘুরে ঘুরে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছি। লক ডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে খাদ্য সহায়তা, ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করি। শুধু ঢাকা-৫ আসনে নয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকায় আমি এই কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এই কার্যক্রমগুলো এখনো অব্যাহত আছে। অর্থাৎ মানুষের জন্য কাজ করার দুর্নিবার ইচ্ছা আমার। জননেত্রী শেখ হাসিনা চান সৎ, নির্ভিক, তারুণ্যদীপ্ত এবং দুর্নীতিমুক্ত, মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে এবং মানুষের ঘরে ঘরে সেবা পৌঁছে দিতে পারবে এমন নেতৃত্ব। আমি ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী হিসেবে, নেত্রীর নগণ্য কর্মী হিসেবে মনোনয়ন চাই। সাংসদ হলে আমার প্রধান কাজ হবে দেশের উন্নয়নে নেত্রীর ভিশন বাস্তবায়ন করা।
রাইজিংবিডি : করোনায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনারা কাজ করছেন। তারুণ্যের এই জয়গান, দেশপ্রেম মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে কতটা এগিয়ে রাখবে বলে মনে করেন?
কামরুল হাসান রিপন : আসলে যে কোনো পরিস্থিতিতে তরুণরা যেভাবে এগিয়ে যেতে পারে, অন্যরা তা পারে না। করোনার মধ্যে তরুণরাই কিন্তু পথ দেখিয়েছে। আমি নিজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কাজ করেছি। আমার সঙ্গে অনেকেই করেছে। আমরা জীবনের কথা চিন্তা করিনি। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেক ওয়ার্ডে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থেকেছি। কারণ তরুণরা ঝুঁকি নিতে ভয় পায় না। সেক্ষেত্রে আমি অনেক বেশি আশাবাদী। আমাদের এই কার্যক্রমের নিশ্চয়ই মূল্যায়ন হবে।
রাইজিংবিডি : এলাকার সমস্যা বা সম্ভবনার বিষয়গুলো চিহ্নিত করে কাজ করার আপনার কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
কামরুল হাসান রিপন : এখানে অনেক রাস্তা আছে, বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থার সমস্যা আছে। বিশুদ্ধ পানির অভাব আছে। অনেক ইন্ডাস্ট্রি আছে বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণ করে। এলাকায় একটি ভালো হাসপাতাল নেই। ভালো কমিউনিটি সেন্টার নেই। ঢাকার অন্যতম প্রবেশপথ হলেও ঢাকার অন্যান্য এলাকার তুলনায় এই এলাকা অবহেলিত। মানুষের মৌলিক সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি আধুনিক ও ডিজিটাল ঢাকা গড়ে তুলতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চাই। এলাকায় চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, ভূমিদস্যু, মাদকের বিরুদ্ধে আমি এরইমধ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি।
হেভিওয়েট অনেক প্রার্থী আছেন যাদের বাড়ি এই এলাকায়, কিন্তু তারা গুলশান, বনানীতে বাস করেন। আমি এলাকাতেই আছি। এলাকার উন্নয়নে সবসময় সামাজিক কাজে যুক্ত থেকেছি। এই এলাকাকে আমি মডেল এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আসলে আমি মনে করি, জনপ্রতিনিধির কাছে মানুষ আসবে না, জনপ্রতিনিধি মানুষের কাছে যাবে।
ঢাকা/তারা
আরো পড়ুন