ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

নোমান-রাকিব হত্যা

লক্ষ্মীপুরে জোড়া খুনের এক বছর পার, তদন্তে অগ্রগতি নেই

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৬, ২৫ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ১৫:১৯, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
লক্ষ্মীপুরে জোড়া খুনের এক বছর পার, তদন্তে অগ্রগতি নেই

আব্দুল্লাহ আল নোমান ও রাকিব ইমাম

লক্ষ্মীপুরে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমামকে গুলি করে হত্যার এক বছর পূর্ণ হলো আজ। 

২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল  (ঈদুল ফিতরের পরদিন) লক্ষ্মীপুর সদরে পোদ্দার বাজার এলাকায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাদের অতর্কিত গুলি করে। গুলিতে আব্দুল্লাহ আল নোমান ঘটনাস্থলে ও রাকিব ইমামকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়।

বছর পেরিয়ে গেলেও বহুল আলোচিত এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি জিহাদী বাহিনীর প্রধান আবুল কাশেম জিহাদীসহ এজাহারভূক্ত ৭ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তদন্তেও নেই তেমন অগ্রগতি। এছাড়া উদ্ধার হয়নি এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র।

তবে ঘটনার পর পরই এই  মামলার এজাহারভুক্ত ১১ আসামিসহ ২৩জনকে গ্রেপ্তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।  অভিযোগ উঠেছে, গ্রেপ্তারকৃত সবাই এখন জামিনে বেরিয়ে এসে এলাকায় দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। এলাকায়  নির্বিঘ্নে নানা অপরাধ করে যাচ্ছে।  জামিনে আসা ও পলাতক আসামিরা মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদী ও স্বাক্ষীদের নানাভাবে চাপ ও হুমকি দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। ফলে নিহতদের পরিবার, মামলার বাদী ও স্বাক্ষীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী মাহফুজুর রহমান। 

অভিযোগ, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জেহাদীর নেতৃত্বাধীন জেহাদী বাহিনীর সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।  হত্যাকাণ্ডের একদিন পর নিহত ‍আব্দুল্লাহ আল নোমানের বড় ভাই বশিকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে জেহাদী বাহিনীর প্রধান ও থানা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আবুল কাশেম জেহাদীকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ১৪/১৫জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

এ হত্যার ঘটনা স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যমরায় রেকর্ড হয়। মামলার এজাহার ও  ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ এজহারভুক্ত ১১ আসামিসহ ২৩ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে মামলার দুই নম্বর আসামি ফয়সাল দেওয়ানসহ কয়েকজন এই হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকাসহ হত্যার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। 

জেলাজুড়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। খুনিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির  দাবিতে আওয়ামী লীগ, ‍যুবলীগ ও ছাত্রলীগ এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বিক্ষোভ এবং মানববন্ধন করে। থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদ থেকে আবুল কাশেম জেহাদীকে বহিস্কার করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে একে একে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা সবাই জামিনে বেরিয়ে আসে। মামলার এজাহারভুক্ত ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারের তৎপরতাও থেমে যায়। 

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) নিজাম উদ্দিন জানান, মামলার বাদী ও নিহতদের পরিবারকে ৬/৭মাস পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তারা চাইলে আবারও পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হবে। মামলার প্রধান আসামি আবুল কাশেম জেহাদী সহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে চার্জশিট দেওয়া হয়নি। গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার শেষ হলে চার্জশিট দেওয়া হবে।

লিটন/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়