ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

গৌরবময় মার্চ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ পরিবারের ভার্চুয়াল সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যুক্তরাষ্ট্র || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২৩ মার্চ ২০২১  
গৌরবময় মার্চ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ পরিবারের ভার্চুয়াল সভা

গৌরবময় মার্চের নানা দিবস নিয়ে এক ভার্চুয়াল সভা করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী পরিবার। স্থানীয় সময় রোববার (২১ মার্চ) অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় বাংলাদেশ, কানাডা ও নিউ ইয়র্কে বসবাসরত আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের যোগদানের মাধ্যমে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও শিশু দিবস ১৭ই মার্চ এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২৬ শে মার্চ উপলক্ষে ৩ পর্বের আলোচনায় বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের সূবর্ণ জয়ন্তীকালে প্রবাসে এ দিবসসমূহ করোনাকালে পালিত হয়।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাজিয়ে ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। মহান ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৫ই আগস্ট, ৩রা নভেম্বর, ২১শে আগস্ট, স্বৈরচারবিরোধী সকল গণআন্দোলনে নিহত সকল শহীদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর পবিত্র কোরান, গীতা ও ত্রিপিটক পাঠের মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ড. প্রদীপ রঞ্জন কর ও সঞ্চালনায় ছিলেন প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী।

আলোচকবৃন্দ রক্তঝরা উত্তাল মার্চের অসহযোগ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধের ডাক, পাকিস্তানি শোষকদের ২৩ বছরের নিপীড়ন-নির্যাতন ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মদিন নিয়ে আলোচনা করেন।

বঙ্গবন্ধু মুজিবের নির্দেশে নিরস্ত্র বাঙ্গালিরা স্বশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধায় পরিণত হয়। ৯ মাসের যুদ্ধে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সহযেগিতায় বীর বাঙালিরা তাদের প্রাণের দাবি আদায়ের যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানিদের পরাজিত করে। ৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা ইপ্সিত স্বাধীনতা অর্জন করি।

বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মদিন ও শিশু দিবসের ওপর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি, বাকসুর ভিপি, চীফ ইঞ্জিনিয়ার ও ওয়াসার সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রহমতউল্লাহ।

আলোচক হিসেবে প্যানেলে ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নেতা হাজী শফিকুল আলম, টুঙ্গীপাড়া বাসূরিয়া হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক অধীর শিকদার, সাদেকুল বদরুজ্জামান পান্না, শ্রমিক লীগ নেতা মঞ্জুর চৌধুরী ও মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রুমানা আক্তার।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বীর মুক্তিযাদ্ধা কৃষিবিদ ড. মকবুল হেসেন তালুকদার। প্যানেলিস্ট আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বীর মুক্তিযাদ্ধা ফারুক হোসাইন, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বাকসুর সাহিত্য সম্পাদক কানাডা থেকে- বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. কবির হেসেন তালুকদার, বাকসুর মিলনায়তন সম্পাদক ও কানাডাস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সভপতি কৃষিবিদ গোলাম মোস্তফা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা সম্পাদক এম এ করিম জাহাঙ্গীর ও যুক্ররাস্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টা ও সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২৬ শে মার্চের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্য কৃষিবিদ ড. আব্দুল আওয়াল। প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক আইন সম্পাদক এ্যাড. শাহ মো. বখতিয়ার আলী ও নিউ ইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল।

আলোচনায় প্রধান অতিথি মো. রহমতউল্লাহ খুনী মোসতাকের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, আজ জননেত্রী শেখ হাসিনার আশেপাশেও কত মোশতাক রয়েছে তা আমরা জানি না। বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নাম উল্লেখ করে বলেন, উনারা ছিলেন সততার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আজ রাজনীতি টাকার কাছে জিম্মি। একজন সৎ ও নির্মোহ রাজনীতিক বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বে অর্থনৈতিক ইমার্জিং টাইগার হিসেবে আবির্ভূত করেছেন। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। বিশ্বের নামীদামি মিডিয়ায় বাংলাদেশ এক বিস্ময়ের নাম।

বিশেষ অতিথি ড. আওয়াল বলেন, বঙ্গবন্ধু ৪৮ সালেই বলেছিলেন পাকিস্থানীদের সাথে থাকা যাবে না। ৭ মার্চের পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ৩২ নং থেকে সরকার পরিচালিত হয়েছে। এরকম অসহযোগ আন্দোলন ও ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ পৃথিবীতে বিরল।

শামীম চৌধুরী আবেগঘন উচ্ছ্বাস নিয়ে মুক্তিযাদ্ধাদের কয়েকটি চিঠি পাঠ করে শুনান। তিনি বলেন, বীর মুক্তিযাদ্ধারা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেই যুদ্ধে গিয়েছিলেন। উপস্থিত বীর মুক্তিযাদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। আলোচনার মাঝে মাঝে স্বাধীন বাংলা বেতারের কালজয়ী গান ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়।

সভার সভাপতি ড. কর আলোচনার শুরুতে সূচনা বক্তব্য রাখেন এবং শেষে সকল আলোচকদের ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি টানেন।

পরিশেষে আলোচকবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ও আদর্শের বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ও মেগা উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়ার শপথ গ্রহণ করেন ।

ছাবেদ সাথী/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়