ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ঘর পাচ্ছে শায়েস্তাগঞ্জের সেই যমজ শিশু

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১৫, ৫ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঘর পাচ্ছে শায়েস্তাগঞ্জের সেই যমজ শিশু

বাবা-মা হারানো সেই অসহায় যমজ শিশুর জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমী আক্তার।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল রাইজিংবিডিতে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হবার পর ওই শিশুদের জন্য দায়িত্ব ও মমত্ববোধ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইউএনও।

শনিবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে ইউএনও ঘর নির্মাণের বিষয়ে যমজ শিশু আরফিন আক্তার ও আফিয়া আক্তারের অভিভাবক দাদা-দাদিকে আশ্বস্ত করেন।

এসময় তিনি (ইউএনও) ওই শিশুদের জন্য উন্নতমানের গুঁড়ো দুধের প্যাকেটসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী দেন এবং তাদের সেবাযত্ন সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন।

এছাড়া শিশুদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সরকারি অনুদানে একটি ঘর তৈরি করে দেওয়াসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেন। তারা (শিশুরা) বড় হওয়ার আগ পর্যন্ত এঘর ভাড়া দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবেন বলেও জানান। এমন আশ্বাস পেয়ে যমজ শিশুর দাদা-দাদিসহ পরিবারের সদস্যরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

যমজ শিশুর মামা মোস্তফা মিয়া বলেন, তারা তিন শতক জমি দিবেন। এ জমিতে ঘর তৈরি করা যাবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ঘর নির্মাণের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার আশ্বাস দেন ইউএনও সুমী আক্তার।

২৮ মার্চ ‘যমজ শিশু দুটি দাদা-দাদির কাছে বড় হবে’ ২৭ মার্চ ‘বাবার পরে মায়ের মৃত্যু, অসহায় যমজ শিশু’ শিরোনামে রাইজিংবিডিতে দুইটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে অনেকেই শিশুদের খোঁজ খবর নিয়েছেন।

এ সংবাদ দুটি চোখ এড়ায়নি হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জের ইউএনও সুমী আক্তারের। বিষয়টি তার হৃদয়কে ব্যাপকভাবে নাড়া দেয়। তিনি জমজ শিশুদের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করেন।

ইউএনও’র পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা অফিসের সিও হিমাংশু চন্দ্র ঘোষ, হবিগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন চৌধুরী, সদস্য ওয়াহিদুর রহমান দুদু, নারী সদস্য কামরুন নাহার, উপজেলার অফিস সহায়ক সাবাজ আহমেদ প্রমুখ।  

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের আব্দুল মতলিব মিয়ার ছেলে নোমান মিয়া (২৬) শুক্রবার (২০ মার্চ) দুপুরে অসুস্থ স্ত্রী ইয়াসমিনকে নিয়ে বাসা থেকে বের হন। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চড়ে বসেন। অটোরিকশাটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নূরপুর এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়ে। একটি বাস অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নোমান মারা যান। গুরুতর আহত হন স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার।

পরে বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইয়াসমিনের মৃত্যু হয়। চার ভাইয়ের মধ্যে নোমান মিয়া দ্বিতীয় ছিলেন। নোমানের রোজগারে সংসার চলতো। ভিটে ছাড়া তাদের তেমন সম্পদ নেই।

ছেলে এবং বৌমাকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান আব্দুল মতলিব মিয়া ও জামিনা খাতুন। এতিম নাতনিদের নিয়ে এ বৃদ্ধ বয়সে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। এদিকে শিশু দুটিও কেঁদে কেঁদে মা ও বাবাকে খুঁজছে।

এখন, বাবা-মা হারানো যমজ শিশু দুটি দাদা-দাদির কাছে বড় হচ্ছে। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর দেড় বছরের যমজ কন্যাশিশু দুটি অসহায় হয়ে পড়ে।

 

মামুন/বুলাকী/এসএম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়